Advertisement
E-Paper

ছুটির শহরে নয়া গন্তব্য ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো

ট্রেনে ওঠার তাড়ায় নয়, ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই শুরু হল ছবি তোলার হুড়োহুড়ি।

স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:০০
ফ্রেমবন্দি: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্ল্যাটফর্মে চলছে এক যুগলের ছবি তোলা। নিজস্ব চিত্র

ফ্রেমবন্দি: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্ল্যাটফর্মে চলছে এক যুগলের ছবি তোলা। নিজস্ব চিত্র

কাজের জন্য মেট্রো ধরতে নয়, অনেকেই এসেছেন স্রেফ বেড়াতে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সল্টলেক সেক্টর ফাইভ স্টেশন যেন শহরের নতুন একটি বেড়ানোর জায়গা। যেখানে শহরবাসী ‘পথের পাঁচালী’-র অপুর মতোই বিস্ময়ের চোখে দেখছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নতুন কোচ, স্টেশন। স্রেফ ঘোরার জন্যই চড়ে বসছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয়।

কলকাতা মেট্রোয় নিজস্বী বা ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আধিকারিকেরা জানান, তাঁদেরও একই নিয়ম। কিন্তু লোকবলের অভাবে ঠিক মতো নজরদারি করা যাচ্ছে না। ফলে নতুন স্টেশনে ঢুকে অবাধে ছবি এবং ভিডিয়ো তোলা হচ্ছে।

সেক্টর ফাইভ মেট্রো স্টেশনে রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ প্ল্যাটফর্মে দেখা গেল বেশ ভিড়। তবে ট্রেনে ওঠার তাড়ায় নয়, ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই শুরু হল ছবি তোলার হুড়োহুড়ি। স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম তখন যেন ফোটো সেশনের জায়গা। ট্রেনের সামনে নিজস্বী, ট্রেনে উঠে কামরায় বসে নিজস্বী, প্ল্যাটফর্মে গ্রুপ ফোটো সবই চলছিল। সাধারণত, মেট্রোরেলে ট্রেন চলে গেলে প্ল্যাটফর্ম ফাঁকা হয়ে যায়। রবিবার নতুন মেট্রো স্টেশনে তেমনটা হল না। ট্রেন চলে যাওয়ার পরেও প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল অনেককেই।

ওই যাত্রীরা জানান, ট্রেনে চেপে তাঁদের কোথাও যাওয়ার নেই। সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের এক যুবক অনিমেষ বসু হাসতে হাসতে জানালেন, তাঁরা কয়েক জন বন্ধু মিলে এসেছেন। তবে সেক্টর ফাইভ থেকে ট্রেনে চেপে তাঁদের কোথাও যাওয়ার নেই। তাঁরা স্টেশনে এসেছেন শুধু ট্রেন দেখতে। অনিমেষবাবু হাতের টিকিট দেখিয়ে বলেন, ‘‘এই দেখুন পাঁচ টাকার টিকিট কেটে ট্রেন দেখতে এসেছি।’’

নাতিকে কোলে নিয়ে এসেছিলেন নিউ টাউনের প্রৌঢ় সমরেশ মুখোপাধ্যায়। সেক্টর ফাইভ স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে তিনি সন্তুষ্ট হয়ে ঘাড় নেড়ে বলেন, ‘‘আমি কর্মসূত্রে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। বিভিন্ন শহরের মেট্রো স্টেশনও দেখেছি। এই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো স্টেশনগুলি একদমই বিশ্ব মানের হয়েছে। ট্রেনটিও একেবারে আধুনিক মানের।’’ অন্য এক দর্শক বছর পঁচিশের অনামিকা চৌধুরী আবার মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে কাচের স্ক্রিন ডোর দেখে বেশ খুশি। তাঁর বন্ধুকে স্ক্রিন ডোর দেখিয়ে বলেন, ‘‘এই সব স্টেশনে কেউ ট্রেন আসার সময়ে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারবে না।’’

দমদম থেকে গাড়ি চালিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো দেখতে এসেছিলেন এক দম্পতি। জানালেন, ছুটির দিনে সিনেমা দেখতে নয়তো শপিং মলে যান। কখনও যান রেস্তরাঁয় খেতে। এই রবিবার স্বাদ বদল করতে মেট্রো স্টেশন দেখতে চলে এসেছিলেন। শুধু বেড়ানোর জন্যই সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে করুণাময়ী স্টেশন পর্যন্ত যাবেন তাঁরা। ওই দম্পতি জানালেন, তাঁরা দমদম-টালিগঞ্জ রুটের মেট্রো ব্যবহার করেন। ইস্ট-ওয়েস্ট দেখার পরে এ বার পুরনো মেট্রো স্টেশন তাঁদের কাছে সাধারণ বলেই মনে হচ্ছে।

স্টেশনে মোবাইলে ছবির তোলার ভিড়ে আবার এক যুগলকে দেখা গেল এসএলআর ক্যামেরায় ছবি তোলার জন্য এক জনকে নিয়ে এসেছেন। পাজামা-পাঞ্জাবি পরা যুবক ও চুড়িদার কুর্তা পরা তাঁর বান্ধবী হাসিমুখে প্ল্যাটফর্মে হাঁটছেন। বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি ও ভিডিয়ো তুলছেন তাঁদের সঙ্গে থাকা এক মহিলা। এটা কি যুগলের ‘প্রি ওয়েডিং শুট’? কোনও উত্তর না দিয়ে হাসিমুখে অন্যত্র চলে যান ওই যুগল।

Kolkata East West Metro Kolkata Metro Weekend Destination
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy