প্রতীকী চিত্র।
ফের অঙ্গদান শহরে। এ বার এক তরুণী বধূর ব্রেন ডেথ ঘোষণা হওয়ার পরে তাঁর কিডনি প্রাণ বাঁচাল দুই রোগীর, যার মধ্যে রয়েছে ১৪ বছরের এক কিশোরও। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য গ্রিন করিডর করে শহরের একটি সরকারি ও একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল ওই তরুণীর দু’টি কিডনি।
গত ৩ জুলাই বিয়েবাড়ি যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় স্বামীর মোটরবাইক থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর চোট পেয়ে জ্ঞান হারিয়েছিলেন চন্দননগরের বীথিকা ঘোষ (৩৮)। রাত ৩টে নাগাদ তাঁকে রুবি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়েছিল যে, সিটি স্ক্যান করার আগেই ভেন্টিলেশনে দিতে হয়। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে থাকায় রাতেই স্নায়ু শল্য চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করলেও চিকিৎসায় তেমন সাড়া দিচ্ছিলেন না বীথিকা। ৮ জুলাই চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, তাঁর ব্রেন ডেথ ঘটতে চলেছে। সে কথা জানানো হয় পরিজনদেরও। এর পরে খবর পাঠানো হয় ‘রিজিয়োন্যাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’ (রোটো)-এ। সেখান থেকে খবর যায় বিভিন্ন হাসপাতালে।
গত শুক্রবার সকালে বীথিকার ব্রেন ডেথ ঘোষণার পরেই অঙ্গদান প্রক্রিয়া শুরু হয়। একটি কিডনি পেয়েছেন এসএসকেএমে ভর্তি চল্লিশ বছরের এক রোগী। অপরটি পেয়েছে চার্নক হাসপাতালে ভর্তি ১৪ বছরের এক কিশোর। তার পরিজনেরা জানাচ্ছেন, ছোট থেকেই কিডনির অসুখে ভুগছে পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা, অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোর। পাঁচ বছর ধরে ডায়ালিসিস চলছে। চার্নক হাসপাতালের নেফ্রোলজিস্ট জয়ন্ত দত্ত বলেন, “শেষ দু’বছর ধরে এখানেই ওর ডায়ালিসিস চলছিল। বাবা-মা কারও সঙ্গে রক্তের গ্রুপ মিলছিল না। একটা কিশোরকে কত দিন ডায়ালিসিস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখব, সেটাও চিন্তার ছিল।” তিনি জানান, বীথিকার রক্তের গ্রুপ ‘ও পজ়িটিভ’, তাই সকলকে রক্তের মতোই অঙ্গও দান করতে পারেন। অন্য দিকে, ওই কিশোরের রক্তের গ্রুপ ‘এ পজ়িটিভ’। ওই রাতেই রুবি থেকে চার্নক হাসপাতালে বীথিকার কিডনি পৌঁছনোর পরে শল্য চিকিৎসক মোহন শীল, রঞ্জন দে, পিয়ালি সরকার, নেফ্রোলজিস্ট জয়ন্ত দত্ত, অ্যানাস্থেটিস্ট দেবব্রত ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে প্রতিস্থাপন করা হয় কিশোরের শরীরে।
মুসলিম পরিবারের ওই কিশোরের বাবা পেশায় ব্যবসায়ী। শনিবার ছেলেকে দেখার পরে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “এক জনের অঙ্গ দুই রোগীকে বাঁচাল শুধু নয়, তাঁদের গোটা পরিবারকেও স্বস্তি দিল। মানবিকতার এই সম্প্রীতি যেন সর্বত্র বজায় থাকে, তা-ই চাইব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy