সামনেই রমজান ও চড়কের উৎসব। রয়েছে বাংলা নববর্ষও। এই সমস্ত উৎসব উপলক্ষে ভিড় হলে সেখানে দূরত্ব-বিধি মেনে চলা কিংবা মাস্ক পরার নিয়ম ক’জন মানবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে।
ফাইল চিত্র।
অতিমারি নিয়ন্ত্রণে দু’বছর ধরে চলা বিধিনিষেধ আজ, পয়লা এপ্রিল থেকে আর থাকছে না। যা বলবৎ ছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। যদিও এই রাজ্য-সহ গোটা দেশে এখনও কমবেশি করোনা সংক্রমণ হচ্ছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, এখনই সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কি ঠিক? এর ফলে এক শ্রেণির মানুষ বেপরোয়া হয়ে উঠবেন না তো?
বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত দু’বছর ধরে যে বিধিনিষেধ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার তা তুলে নিতে বলেছে। কিন্তু মাস্ক পরা, জীবাণুনাশক দিয়ে হাত পরিষ্কার করা ও দূরত্ব-বিধি মেনে চলার মতো নিয়ম মানতে বলা হয়েছে। সংক্রমণ রুখতে মাস্কই যে প্রধান অস্ত্র, সে কথাও জানানো হয়েছে। কিন্তু সেখানেও রয়েছে সংশয়। কারণ, রাস্তাঘাটে অধিকাংশ লোকই মাস্ক পরছেন না। যাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘এমনিতেই এক শ্রেণির মানুষ মাস্ক পরেন না। এখন সরকারি ভাবে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় তাঁরা আরও মাস্ক পরবেন না। দূরত্ব-বিধিও মেনে চলবেন না।’’
সামনেই রমজান ও চড়কের উৎসব। রয়েছে বাংলা নববর্ষও। এই সমস্ত উৎসব উপলক্ষে ভিড় হলে সেখানে দূরত্ব-বিধি মেনে চলা কিংবা মাস্ক পরার নিয়ম ক’জন মানবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে। গত দু’বছর ধরে গণপরিবহণ, রেস্তরাঁ, শপিং মল, সিনেমা হল এবং রাতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যে আংশিক নিয়ন্ত্রণ-বিধি ছিল, তা তুলে নেওয়ার জন্য সম্প্রতি সব রাজ্যকে চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্র। সেই মতো আজ, শুক্রবার থেকে রাজ্য প্রশাসনও নিয়ন্ত্রণ-বিধি তুলে নিচ্ছে। আর তাতেই আশঙ্কা, এক শ্রেণির মানুষ বিষয়টির ভুল ব্যাখ্যা করে অতিরিক্ত বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারেন।
চিকিৎসকদের অধিকাংশই অবশ্য বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছেন। যেমন, শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বললেন, ‘‘দেশে দৈনিক সংক্রমণ এক হাজারের নীচে। রাজ্যেও দৈনিক আক্রান্ত দুই অঙ্কের ঘরে। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই ধরনের নিয়ন্ত্রণ-বিধি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক। তবে মাস্ক পরা ও প্রতিষেধক নেওয়ার বিষয়টি কড়া ভাবে মানতে হবে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, কোভিডের কারণে দেশ তথা রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। তাই আসন্ন উৎসবগুলিতে কিছু মানুষের খানিকটা অর্থাগম হতে পারে।
আবার জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানাচ্ছেন, কোভিডকে সঙ্গে নিয়েই জীবন যাপনের সময় এসেছে। অর্থাৎ, ‘এপিডেমিক’ থেকে ‘এন্ডেমিক’ অবস্থায় যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘অন্যান্য দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও আমাদের অহেতুক আতঙ্কিত হওয়া ঠিক নয়। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে রাজ্যগুলিকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রকে ধাপে ধাপে পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। অন্যান্য কঠোর কোভিড-বিধি তুলে নিলেও মাস্ক এবং দূরত্ব-বিধি কিন্তু মানতে হবে।’’ বিপর্যয় মোকাবিলা আইন তুলে নেওয়া হলেও অতিমারি নিয়ন্ত্রণে মাস্ক-বিধি মেনে চলার কথাই বলা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন রাজ্যের কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘মাস্কের উপযোগিতা শুধু করোনাকে প্রতিহত করা নয়। দূষণ আটকাতে মাস্কের উপযোগিতা কতটা, অন্যান্য দেশেও তার প্রমাণ মিলেছে। তাই মাস্ক-বিধি মানতেই হবে।’’
তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দেশের কোথাও নতুন করে কোভিডের বাড়বাড়ন্ত দেখা দিলেই যত দ্রুত সম্ভব তা চিহ্নিত করে, প্রয়োজনে ‘জিনোম সিকোয়েন্স’ করে দেখা উচিত। তাতে সংক্রমণের ছড়িয়ে পড়া আটকানো যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy