সুশান্ত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
মদ কেনাকে কেন্দ্র করে বচসার জেরে মারধরে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। রবিবার এই ঘটনাকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ, ভাঙচুরের ফলে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ঢাকুরিয়া সেতু সংলগ্ন এলাকা। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মারধরের ঘটনায় মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের নাম সুশান্ত মণ্ডল। তিনি ঢাকুরিয়ার পঞ্চাননতলার বাসিন্দা।
পুলিশ জানিয়েছে, বছর পঁয়তাল্লিশের সুশান্ত পেশায় গাড়িচালক। এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ লেক থানা এলাকার ঢাকুরিয়া সেতু সংলগ্ন একটি দোকানে মদ কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। মদ কেনার পরে খুচরো পাঁচ টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দোকানের এক কর্মীর সঙ্গে বচসা শুরু হয় সুশান্তের। অভিযোগ, বচসা চলাকালীনই আচমকা বাইরে বেরিয়ে এসে সুশান্তকে কিল-ঘুসি মারতে থাকেন এক কর্মী। তাঁকে মাটিতে ফেলে দীর্ঘক্ষণ মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও সেই ছবি ধরা পড়েছে। বেধড়ক মারধরে সুশান্ত সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে দ্রুত তাঁকে পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের নাম প্রভাত দত্ত এবং প্রসেনজিৎ বৈদ্য। পরে দেবজ্যোতি সাহা ও অমিত কর নামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে দেবজ্যোতি ওই মদের দোকানের মালিক, বাকি তিন জন কর্মী।
এ দিকে, মারধরের জেরে সুশান্তের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হয়ে মদের দোকানে ভাঙচুর চালান। দোকান থেকে মদের বোতল বার করে রাস্তার ফেলে ভেঙে দেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আশপাশের একাধিক থানার পুলিশ বাহিনী। আসেন দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশনের ডিসি শুভঙ্কর ভট্টাচার্য। পুলিশকে ঘিরে ধরে তখন বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়েরা। দোকানের পিছনে একটি ঘরে লুকিয়ে পড়েন দোকানের কর্মীরা। অভিযুক্তদের তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি তুলে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। ঘণ্টাখানেকের জন্য কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। বিক্ষোভে ঢাকুরিয়া সেতু সংলগ্ন রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে আরও বাহিনী নিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। বার করে নিয়ে যাওয়া হয়
অভিযুক্তদের। মৃতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ খুনের মামলা রুজু করেছে।
জানা গিয়েছে, মৃতের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে। সুশান্তের বছর চোদ্দোর ছেলে লেক হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। জানা গিয়েছে, এক চিকিৎসকের গাড়ি
চালাতেন সুশান্ত। রবিবার ছুটি থাকায় দুপুরে বাড়িতে খাওয়ার পরে মদ কিনতে বেরিয়েছিলেন। মৃতের এক আত্মীয় দীপায়ন দাস বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে ফোন করে আমাদের সব জানানো হয়। এত বড় ঘটনার পরেও আমাদের দোকানের তরফে কিছু জানানোর প্রয়োজন মনে করা হয়নি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘জামাইবাবু কী এমন অপরাধ করলেন যে তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল? আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।’’ ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পিছনে পুরনো শত্রুতা বা অন্য কারণ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy