দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। ফাইল চিত্র।
রঙিন সাজপোশাক, ঢাকের বোল, বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে নাচ— দুর্গাপুজোর কার্নিভালের এই ছবি দু’বছর পরে ফিরতে চলেছে রেড রোডে। প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ট্যাবলো সাজানোর পাশাপাশি ছোট অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কেউ আবার ট্যাবলোতেই ফুটিয়ে তুলছেন পুজোর শুরু থেকে শেষ। কোনও পুজো কমিটি আবার বরাদ্দ সময় কম পাওয়ায় গোটা পরিকল্পনাই নতুন করে সাজাতে বাধ্য হচ্ছে। এরই মধ্যে কোনও কোনও পুজোকর্তা তাঁদের চমক সম্পর্কে মুখ খুলতে নারাজ। জোরাজুরি করলে উত্তর দিচ্ছেন, ‘‘আর তো কয়েক ঘণ্টা, দেখুন না কী হয়!’’
রেড রোডে শেষ বার পুজো কার্নিভাল হয়েছিল ২০১৯ সালে। তার পরের দু’বছর কোভিডের কারণে বন্ধ ছিল এই অনুষ্ঠান। এ বছর কোভিডের সংক্রমণ অনেকটাই কমে আসায় ফের কার্নিভাল করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। এ বারের এই মহোৎসবে অংশ নিচ্ছে ১০০টি পুজো কমিটি। ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা।
শেষ কয়েক বছর ডাক না পেলেও এ বছর কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে শিবমন্দির সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। ট্যাবলো সাজানোর পাশাপাশি শোভাযাত্রায় সামনের সারিতে বিশেষ ভাবে সক্ষম প্রায় ৩০ জনকে রাখছেন উদ্যোক্তারা। সঙ্গে থাকছে খোল-করতাল এবং দক্ষিণী বাদ্যযন্ত্র সহযোগে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। পুজোকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে ভিন্ রাজ্যের সংস্কৃতির মেলবন্ধন ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হবে।’’ থিমের সঙ্গে মিল রেখে ট্যাবলো সাজাচ্ছে দক্ষিণের চেতলা অগ্রণী থেকে শুরু করে সিংহী পার্ক, চক্রবেড়িয়া, বাবুবাগানের মতো একাধিক পুজো কমিটি। চেতলা অগ্রণীর পুজোকর্তা সমীর ঘোষের কথায়, ‘‘পুজোর শুরু থেকে শেষ আমরা ফুটিয়ে তুলব। থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।’’ বাবুবাগান সর্বজনীনের কর্তা সরোজ ভৌমিক আবার বলছেন, ‘‘স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আমাদের থিম ছিল ‘মা তুঝে সালাম’। কার্নিভালের ট্যাবলোর সজ্জাতেও সেই থিম মাথায় রাখা হচ্ছে। আমরা ভারতমাতা এবং দেবী দুর্গাকে একসঙ্গে সম্মান জানাব।’’
শুক্রবার মণ্ডপেই ৪৩ ফুটের প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছে উত্তরের টালা প্রত্যয়। তবে তারা কার্নিভালের জন্য তৈরি করেছে একটি ফাইবারের প্রতিমা। মূলত তিন মিনিটের অনুষ্ঠানেই চমক থাকছে বলে জানাচ্ছেন টালা প্রত্যয়ের কর্তারা। এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা একটি বিশেষ নৃত্যশৈলী তুলে ধরতে চাইছি। মনে হয় না, কার্নিভালে আগে এমন হয়েছে।’’ শোভাযাত্রায় ট্যাবলো সাজানোর পাশাপাশি গুজরাতের গরবা নাচের পরিকল্পনা করেছে চক্রবেড়িয়া সর্বজনীন। ওই পুজোর অন্যতম কর্তা ইন্দ্রজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার— এই ধারণা সামনে রাখতে চাইছি। একটা পুজো ঘিরে সবাই কী ভাবে একাত্ম হয়ে ওঠেন, সেটাই তুলে ধরা হবে।’’ তবে ইচ্ছে থাকলেও পরিকল্পনা কাটছাঁটের পথে হাঁটতে হচ্ছে দক্ষিণের অন্যতম বড় পুজো সিংহী পার্ককে। পুজোকর্তা জয়ন্ত গুছাইত বলেন, ‘‘আমরা যা ভেবেছিলাম, সেটা কোনও ভাবেই তিন মিনিটে শেষ করা সম্ভব নয়। তাই শুধু ট্যাবলো সাজানো হচ্ছে।’’
দক্ষিণের আর একটি বড় বাজেটের পুজো নিউ আলিপুরের সুরুচি সঙ্ঘ আবার এখনই তাদের পরিকল্পনা খোলসা করতে নারাজ। পুজোকর্তা কিংশুক মিত্র শুধু বললেন, ‘‘সব আগেভাগে বলে দিলে চমক কোথায় থাকল! তাই পরিকল্পনা আপাতত গোপনই থাক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy