Advertisement
E-Paper

দুর্গা-মণ্ডপের ক্রেতার দেখা নেই, হতাশ পুজো উদ্যোক্তারা

মণ্ডপ কেনার তৎপরতা শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজোর ষষ্ঠী থেকেই। জেলার কালী ও জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সদস্যেরা দল বেঁধে ঘুরতে শুরু করেন শহরের মণ্ডপে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২০ ০২:৫৩
Share
Save

হোক না তা অন্য জেলার, অন্য পাড়ায়। তবুও তো ‘আপন’। কয়েক মাসের প্রস্তুতির পরে চার দিনে সম্পর্কটা আরও কেমন যেন আত্মিক হয়ে ওঠে। তাই পড়শি জেলাতেই রীতিমতো গাড়িভাড়া করে নিজেদের ‘মণ্ডপ’ দেখাতে ছোটেন শহরের দুর্গা পুজোর অনেক উদ্যোক্তাই।

প্রতি বছরই দুর্গাপুজো শেষ হতেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তের থিমের মণ্ডপ পাড়ি দেয় মধ্যমগ্রাম, বারাসতের কালীপুজোয় কিংবা চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয়। সেখানে গিয়ে ফের সেজে ওঠে সেই থিম। মণ্ডপ বিক্রি করে খরচের কিছু শতাংশ টাকাও হাতে আসে শহরের ওই সব পুজো কমিটির।

কিন্তু এ বছর?

‘‘কেনার জন্য কেউ খোঁজই করতে আসেননি। বিক্রি দূর অস্ত!’’— বলছেন শহরের একাধিক পুজোর উদ্যোক্তারা। আর চন্দননগর জগদ্ধাত্রী পুজোর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ সাউয়ের কথায়, ‘‘রাজ্যের স্বাস্থ্যবিধি ও হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই পুজো করব। ১০ মিটার আগে থেকে প্রতিমা বা মণ্ডপ দর্শন করতে হবে। মণ্ডপে যদি কেউ ঢুকতেই না পারেন, তা হলে তার জন্য অতিরিক্ত খরচ করে কী হবে! সেই কারণেই কেউ থিমের মণ্ডপের দিকে ঝুঁকছেন না।’’ প্রায় একই মত বারাসত, মধ্যমগ্রামের কালীপুজো কমিটিগুলিরও।

মণ্ডপ কেনার তৎপরতা শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজোর ষষ্ঠী থেকেই। জেলার কালী ও জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সদস্যেরা দল বেঁধে ঘুরতে শুরু করেন শহরের মণ্ডপে। পছন্দ হলেই কথা বলেন সেই পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে। দরদামে পুষিয়ে গেলে বায়নাও হয়ে যায়। উত্তর শহরতলির বরাহনগরের নেতাজি কলোনি লো ল্যান্ড পুজোর কর্মকর্তা দিলীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘নিজেদের মণ্ডপ ছাড়া পরিচিত কয়েকটি মণ্ডপেও খোঁজ করতে আসা লোকদের পাঠাতাম। এ বারে এক জনেরও পাত্তা নেই।’’

কালী বা জগদ্ধাত্রী পুজোর অনেকে উদ্যোক্তাদেরই দাবি, ‘‘পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে তা আঁচ করা যাচ্ছে না। তাই দুর্গাপুজোর পরিস্থিতি দেখেই কেউ আর থিমের মণ্ডপ কেনার কথা ভাবছেন না।’’ তাতে অবশ্য এ বারে কিছুটা সমস্যা হল বলেই জানালেন হিন্দুস্থান পার্ক পুজো কমিটির সম্পাদক সুতপা দাস। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছরই আমাদের মণ্ডপ চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোতে যায়। মণ্ডপ বানাতে যে খরচ হয়, এই বিক্রিতে তার কিছু শতাংশ টাকা উঠে আসত।’’ শুধু বিক্রিই নয়। ডেকরেটর্স ও জুনিয়র শিল্পীদের সঙ্গেও ক্রেতা পুজো কমিটিকে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হত। যাতে জেলায় নিয়ে গিয়ে ফের ঠিকঠাক করে ফুটিয়ে তোলা যায় থিমটি।

কয়েক মাস ধরে চোখের সামনে তৈরি হওয়া সেই মণ্ডপের সঙ্গে একটা আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলেই মত বেলঘরিয়া মানসবাগের কর্মকর্তা অভিজিৎ চাকলাদারের। সনাতন দিন্দার ভাবনায় মাটির বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি তাঁদের মণ্ডপটি শেষ পর্যন্ত বিক্রি না হওয়ায়, ডেকরেটর্স সব জিনিসপত্র খুলে নিয়ে চলে গিয়েছে। থিম শিল্পী ভবতোষ সুতারের কথায়, ‘‘করোনা কালে থিম হয়েছে খুব স্বল্প পরিসরে। বাঁশ বাঁখারি দিয়ে সরাসরি মণ্ডপ বানানো হয়েছে। সেগুলি এতটাই ছোট ও খোলামেলা যে কেনার মতোও কিছু নেই।’’ শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা বলেন, ‘‘এ বার তো পরিস্থিতি খারাপ। আমার মুদিয়ালির মণ্ডপটি তমলুকের কালীপুজোয় গিয়েছে।’’

এ বছর গাড়ি ভাড়া করে চন্দননগরে গিয়ে নিজেদের মণ্ডপকে ফের দেখার সুযোগ নেই— বলছিলেন বেহালা নতুন দলের সন্দীপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘মণ্ডপটি ফের কোনও পুরস্কার পেলে মনে হত যেন আমরাই আবার শিরোপা পেয়েছি। দশ বছর ধরে মণ্ডপ অন্যত্র যাচ্ছে। এক বার তো শিলিগুড়িতেও গিয়েছিল। এ বারই পরম্পরায় ছেদ পড়ল।’’ শান্তিপুর থেকে এক পুজো কমিটি এসে প্রাথমিক কথা বলে গেলেও, আর কোনও যোগাযোগ করেননি বলেই জানাচ্ছেন নলিনী সরকার স্ট্রিটের পুজো কমিটির সোমক সাহা।

প্রতি বছরই পুজোর মধ্যে বায়না হয়ে গিয়ে লক্ষ্মীপুজোর আগেই শহরের মণ্ডপের সামনে এসে দাঁড়াত বড় ট্রেলার বা লরি। তাতে চড়েই ভিন্ জেলায় পাড়ি দিত মণ্ডপের বিভিন্ন অংশ। করোনা কালে কালী বা জগদ্ধাত্রী পুজোয় বাজেট কমের জন্য অধিকাংশ জায়গাতেই থিম হচ্ছে না বলেও জানান হাতিবাগান সর্বজনীনের শাশ্বত বসু। তাঁর কথায়, ‘‘পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা-ই এ বার স্পষ্ট নয়।’’

Durga Puja 2020 Artist Puja Pandal Kali Puja

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।