প্রতীকী ছবি।
চার-ছয় এ বার খুব বেশি বেরোয়নি তার ব্যাট থেকে। কিন্তু পৌষ সংক্রান্তি কেটে যেতেই শীতের প্রকৃতিতে ধরা পড়ছে দোলাচল। ব্যাট ছেড়ে যেন লুকোচুরি খেলায় মেতেছে সে!
এক-এক দিন থার্মোমিটারের পারদ যদি বা একটু নামছে, তো পরের দিনেই চড়ছে তরতরিয়ে। সোয়েটার গায়ে না-দিলে শীত লাগছে, আবার একটু মোটা সোয়েটার বা জ্যাকেট হলেই অস্বস্তি হচ্ছে গরমে। ঠান্ডা-গরমের এই টানাপড়েনে গলা ধরে যাচ্ছে অনেকের, খুকখুক কাশির সঙ্গে ম্যাজম্যাজও করছে গা। অন্যান্য বছর শীতের মরসুমে এ টুকু শরীর-খারাপ অবশ্য হেলায় উড়িয়ে দিত বাঙালি। কিন্তু এ বার কোভিড-আতঙ্কে সিঁটিয়ে থাকা মানুষের কাছে সামান্য ‘খুকখুক’ শব্দ কিংবা সর্দিতে নাক বন্ধের ঘটনাও দুর্ধর্ষ দুশমনের ভূমিকা নিচ্ছে। কেড়ে নিচ্ছে রাতের ঘুম! এই অবস্থায় বাড়তি সতর্কতাকেই হাতিয়ার করতে বলছেন চিকিৎসকেরা।
রবিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা এ সময়ে স্বাভাবিক। কিন্তু গত সপ্তাহে হঠাৎ হঠাৎ পারদ মাথাচাড়া দিয়েছিল। মাঝে একদিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উঠে গিয়েছিল ১৯ ডিগ্রিতে। তাপমাত্রার হেরফের হলেও জানুয়ারিতে রাতের তাপমাত্রা ১৯ ডিগ্রিতে পৌঁছনো মোটেও স্বাভাবিক নয় বলেই আবহবিজ্ঞানীরা জানান। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, দুর্বল উত্তুরে হাওয়া এবং সাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকেই ওই পরিস্থিতি হয়েছিল।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পারদের এমন আচমকা ওঠানামাতেই শরীর খারাপের আশঙ্কা থাকে। এই সময়ে সক্রিয় হয় নানা ধরনের পরজীবীও। তাপমাত্রার ওঠানামার সঙ্গে শরীর মানিয়ে নিতে না-পারলেও বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা যেতে পারে। চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী অবশ্য মনে করেন, “আতঙ্ক নয়, বরং মানুষ ইদানীং একটু বেশি গা-ছাড়া মনোভাব নিয়ে ঘুরছেন। অনেকেই মাস্ক পরছেন না।” তিনি জানান, পরিবারের কারও সর্দি, হাঁচি, কাশি হলে তাঁকে বাড়ির ভিতরেই আইসোলেশনে রাখা উচিত। এর পাশাপাশি কাশি, পেট খারাপ, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ বাড়লে ডাক্তার দেখিয়ে কোভিড পরীক্ষা করানো দরকার। মাস্কও পরতে হবে। “কোভিড হলে জাত যাবে, এই মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে,” বলছেন তিনি। তবে এই প্রবীণ চিকিৎসকের অভিজ্ঞতা, অনেকেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোভিড পরীক্ষা করাতে চাইছেন।
মাস্ক পরার উপরে জোর দিচ্ছেন চিকিৎসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলছেন, “মাস্ক পরতেই হবে। তার সঙ্গে এড়িয়ে চলতে হবে ধুলো।” তিনি জানালেন, এই সময়ে ধুলো থেকে অনেকেরই হাঁচি বা কাশি হয়। তাপমাত্রার ওঠানামার মধ্যে খুব ঠান্ডা এবং খুব গরম— দু’টোই এড়িয়ে চলতে হবে। সর্দি, কাশি, হাঁচি হলে তিন-চার দিন পরে কোভিড পরীক্ষা করানো জরুরি। তাঁর কথায়, “হাঁচি, কাশি শুরু
হওয়া মাত্র কোভিড পরীক্ষা করিয়ে লাভ নেই। তাতে সংক্রমণ ধরা পড়বে না। অন্তত তিন দিন পরে পরীক্ষা করাতে হবে।” চিকিৎসকেরা বলছেন, এ সময়ে বৃদ্ধ ও শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি মাত্রায় সতর্কতা প্রয়োজন। কোনও ধরনের সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
শিশু-রোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলছেন, ‘‘এ বার শ্বাসজনিত সমস্যা আগের থেকে একটু কম চোখে পড়ছে। মাস্ক পরার ফলে করোনার পাশাপাশি শ্বাসজনিত রোগের সংক্রমণ কমেছে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, করোনার শিক্ষা মনে রাখতে হবে। মাস্ক পরা, ভিড় এড়িয়ে চলার মতো নিয়মবিধি মেনে চলতেই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy