Advertisement
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Firecracker Market

‘উৎসবের অঙ্গ বাজি বাজার!’ নির্দিষ্ট হল দিন 

করোনা-কালে দু’বছর বন্ধ থাকার পরে ২০২২ সালে ফের বাজি বাজার বসে শহরে। তবে, একাধিক বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে অনেকের মৃত্যু ঘটায় বাজি বাজার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৫৬
Share: Save:

আর জি কর-কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এখন দুর্গাপুজো নিয়ে আলোচনা চলছে নানা মহলে। পুজো বন্ধ রাখা নিয়ে বক্তব্য, পাল্টা বক্তব্যের পাশাপাশি ‘উৎসবে ফেরা’ উচিত কিনা বা জাঁকজমক কতটা শোভন, তা নিয়ে অনেকেই পোস্ট করছেন সমাজমাধ্যম। এরই মধ্যে শনিবার বাজি বাজার নিয়ে প্রাথমিক বৈঠক করল কলকাতা পুলিশ। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ২৪ অক্টোবর থেকে কালীপুজোর আগের দিন পর্যন্ত, অর্থাৎ, সাত দিন শহরে পুলিশের উদ্যোগে বাজি বাজার বসবে। এ নিয়ে পুলিশের সমন্বয় বৈঠকও পুজোর আগেই সেরে ফেলা হবে। বৈঠকে উপস্থিত বাজি বাজারের এক উদ্যোক্তা বলেন, ‘‘উৎসবের অঙ্গ বাজি বাজার। উৎসবে ফেরায় উৎসাহ দিতেই বাজি-বৈঠক দ্রুত সারা হল। মনে হচ্ছে, ব্যবসায় ভাল সাড়া মিলবে। বাজার বসাতে প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে।’’

করোনা-কালে দু’বছর বন্ধ থাকার পরে ২০২২ সালে ফের বাজি বাজার বসে শহরে। তবে, একাধিক বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে অনেকের মৃত্যু ঘটায় বাজি বাজার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বাজি ব্যবসায়ী ও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, পুলিশের উদ্যোগে বৈধ বাজি বাজার হওয়া মানে সবটা নজরদারিতে থাকা। কিন্তু বাজি ব্যবসায়ীদেরই বড় অংশের দাবি, যে পরিমাণ বাজি উৎসবে পোড়ে, তার মাত্র ২০ শতাংশ বিক্রি হয় বাজি বাজারে। বেআইনি বাজি থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই এমন বাজার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে নানা মহল থেকে। যদিও পুলিশ সূত্রের দাবি, গাফিলতি এড়াতে যথেষ্ট সতর্ক হয়ে এগোনো হচ্ছে। তাই এত আগে বৈঠক ডাকা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা বললেন, ‘‘বাজি বাজারের সঙ্গেও অর্থনীতির যোগ রয়েছে। তাই ব্যবসায়ীদের আর্জি মেনে পুলিশ বাজি বাজার বসাবে।’’

কলকাতা পুলিশের রিজ়ার্ভ ফোর্সের কর্তাদের উপস্থিতিতে এ দিন এই বৈঠক হয়। পুলিশকর্তারা ছাড়াও ছিলেন টালা, শহিদ মিনার, বেহালা ও কালিকাপুরের বাজি বাজারের প্রতিনিধিরা। সেখানে বলা হয়েছে, পুলিশ, পুরসভা, দমকল, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা নিরি, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি অর্গানাইজ়েশন বা পেসো-র আধিকারিকদের উপস্থিতিতে যে সমন্বয় বৈঠক হয় দুর্গাপুজোর পরে, এ বার তা পুজোর আগেই হতে পারে। আপাতত রাজ্যে ১২৫ ডেসিবেল শব্দমাত্রাই বাজির বৈধতার মাপকাঠি বলে ধরা হবে। কেন আগের ৯০ ডেসিবেল থেকে মাপকাঠি বাড়ানো হল, সে ব্যাপারে যে মামলা হয়ে রয়েছে, তারও উল্লেখ করা হয় বৈঠকে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, নিরি-র ছাড়পত্র আছে, এমন সংস্থার বাজিই শুধু পুলিশের বাজি বাজারে বিক্রি করা যাবে। বাজারে এই সংস্থাগুলির নামের তালিকা টাঙিয়ে দিতে হবে।

পুলিশের নির্দেশ, বাজি বাজারে দু’টি দোকানের মধ্যে অন্তত ন’ফুট দূরত্ব রাখতে হবে। একটি লাইনে কয়েকটি দোকান বসানোর পরে পাশের লাইনে দোকান পাততে হলে দু’টি লাইনের মধ্যে ৫০ মিটার দূরত্ব রাখতে হবে। দমকলের গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স রাখার পাশাপাশি বাজারে ৫০টির বেশি দোকান বসানো যাবে না।

‘পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বলেন, ‘‘সব কিছু মেনেই বাজার বসবে। খুন-ধর্ষণের ঘটনায় বিচার পাওয়া যেমন জরুরি, তেমনই জরুরি পুজো ও বাজি বাজার। কোনওটির সঙ্গেই কোনওটির বিরোধ নেই। পুলিশ সেই কারণেই দ্রুত বাজি বাজারের বৈঠক সেরে কড়া নিরাপত্তা বলবৎ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Firecrackers Firecracker Market Kali Puja Diwali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE