গোয়েন্দারা মনে করছেন, ট্যাব কেলেঙ্কারির মূল উৎসস্থল চোপড়া। —প্রতীকী চিত্র।
কলকাতার স্কুলপড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা ‘হ্যাক’ করে হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কি উত্তর দিনাজপুরের কোনও চক্র জড়িত? প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, শহরের ন’টি থানা এলাকার ১০টি স্কুলের ১০৭ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকেরা। ওই টাকার ৮০ শতাংশ তোলা হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ও সংলগ্ন এলাকা থেকে। লালবাজারের দাবি, যে কম্পিউটারের সাহায্যে এই কারসাজি করা হয়েছে, সেটির আইপি অ্যাড্রেস উত্তরবঙ্গের ওই এলাকার। এ ছাড়া, কিছু টাকা তোলা হয়েছে বিহারের কিষাণগঞ্জ থেকে। গোয়েন্দারা মনে করছেন, ট্যাব কেলেঙ্কারির মূল উৎসস্থল চোপড়া। সেখানকার বাসিন্দাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কমিশনের ভিত্তিতে ভাড়া নিয়েছিল প্রতারকেরা। তাদের মধ্যে কৃষ্ণপদ বর্মণ এবং সরিফুল ইসলাম নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধৃতদের বৃহস্পতিবার কলকাতায় নিয়ে এসে আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠান। সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল জানান, ধৃত কৃষ্ণপদ ও সরিফুল একটি চক্রের সদস্য। এই ঘটনার তদন্তে ১০ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে কলকাতা পুলিশ।
লালবাজার জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নেওয়ার জন্য গ্রামের বাসিন্দাদের ৩০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিত প্রতারকেরা। বয়স্কদের অ্যাকাউন্ট ভাড়া নেওয়া হলে দেওয়া হত পাঁচ হাজার টাকা। গোয়েন্দারা আরও জেনেছেন, অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে তা এটিএম থেকে তুলে নিত জালিয়াতেরা। এটিএমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এবং সরিফুল ও কৃষ্ণপদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কয়েক জনের নাম উঠে এসেছে, যারা চোপড়া এলাকার বাসিন্দাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়েছিল।
এক পুলিশকর্তা জানান, মঙ্গল এবং বুধবার আট জনের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে কৃষ্ণপদ ও সরিফুলের খোঁজ মিললেও বাকিরা পলাতক। চোপড়ায় যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, অ্যাকাউন্ট ভাড়া নেওয়ার জন্য এক জনই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। গোয়েন্দারা সাতটি অ্যাকাউন্টের টাকা প্রতারকদের হাতে যাওয়া থেকে বাঁচাতে পেরেছেন বলে সূত্রের খবর।
লালবাজার জানিয়েছে, কোথা থেকে হ্যাক করে প্রতারকেরা টাকা সরিয়েছে, তার তদন্তে এ দিন বিকাশ ভবনে যায় গোয়েন্দাদের একটি দল। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সাইবার বিশেষজ্ঞেরা। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, স্কুল থেকে ট্যাব প্রাপকদের তালিকা যায় জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে। সেখান থেকে বিকাশ ভবন হয়ে তা আসে ট্রেজ়ারিতে। গোয়েন্দাদের অনুমান, কোনও জায়গা থেকে কেন্দ্রীয় ভাবে প্রতারকেরা ট্যাব প্রাপকদের তালিকা হ্যাক করে টাকা সরিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy