Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

COVID Norms: ট্রেনে, বাসে বিপুল ভিড়ে শিকেয় দূরত্ববিধি, করোনা আটকানোর যেন ইচ্ছাই নেই শহরের

টিকিট না-পেয়ে অনেকেই জোর করে উঠে পড়েন সরকারি বাসে। যা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বচসা হয় কন্ডাক্টরদের। একমাত্র মেট্রোতেই ভিড় নিয়ন্ত্রণে ছিল।

জেরবার: বাস ধরার দীর্ঘ অপেক্ষায় ভোগান্তি চরমে। অনেকের মুখে নেই মাস্কও। শনিবার, ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডে।

জেরবার: বাস ধরার দীর্ঘ অপেক্ষায় ভোগান্তি চরমে। অনেকের মুখে নেই মাস্কও। শনিবার, ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডে। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২১ ০৬:৫৫
Share: Save:

এ রাজ্যে খাতায়-কলমে নিয়ন্ত্রণ-বিধি এখনও বলবৎ আছে ঠিকই, কিন্তু কলকাতায় একই সঙ্গে ভিড় আর ভোগান্তির যে ছবি শনিবার দিনভর দেখা গেল, তাতে আর যা-ই হোক, করোনাকে আটকানোর কোনও চেষ্টা চোখে পড়েনি।

সপ্তাহান্তে গাদাগাদি ভিড়ে প্রায় সর্বত্রই শিকেয় উঠল দূরত্ব-বিধি। এ দিন জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা থাকায় শিয়ালদহ শাখার স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে উপচে পড়ল ভিড়। ধর্মতলায় দূরপাল্লার বাসের টিকিট পেতে গিয়ে হা-পিত্যেশ করতে হল যাত্রীদের। টিকিট না-পেয়ে অনেকেই জোর করে উঠে পড়লেন সরকারি বাসে। যা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বচসা বাধল কন্ডাক্টরদের। তারই মধ্যে ঝোপ বুঝে কোপ মেরে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করল বেসরকারি বাস। একমাত্র মেট্রোতেই রক্ষীদের কড়াকড়ির জেরে ভিড় একটু নিয়ন্ত্রণে ছিল।

জয়েন্ট এন্ট্রান্স উপলক্ষে গত কালই স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের যাতায়াতের অনুমতি দেওয়ার কথা জানিয়েছিল পূর্ব রেল। অ্যাডমিট কার্ড দেখিয়ে টিকিট কাটার কথাও বলা হয়েছিল। হাওড়া ডিভিশনের কয়েকটি স্টেশনে সকালের দিকে কিছুটা কড়াকড়ি থাকলেও শিয়ালদহ ডিভিশনে তার বালাই ছিল না। হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনের পাশাপাশি মেট্রোতেও কিছু পরীক্ষার্থী যাতায়াত করেছেন। তবে, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির বেশির ভাগই সল্টলেক, নিউ টাউন, কলেজ স্ট্রিট ও যাদবপুরে হওয়ায় বাসেই অধিকাংশ পরীক্ষার্থী যাতায়াত করেছেন। তাঁদের জন্য সকাল থেকেই পর্যাপ্ত সংখ্যক বাস নামিয়েছিল রাজ্য পরিবহণ নিগম। অনেকে আবার গাড়ি ভাড়া করেও পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছেছেন।

এ দিন পূর্ব রেল পরীক্ষার্থীদের বিশেষ ট্রেনে ওঠার অনুমতি দিলেও দক্ষিণ-পূর্ব রেল তা দেয়নি। হাওড়া থেকে খড়্গপুর বা মেচেদা শাখায় বিশেষ ট্রেনের সংখ্যাও খুব কম। ফলে, বেশির ভাগ যাত্রীকেই বাসের উপরে নির্ভর করতে হয়েছে। এ দিন পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের উত্তর ও দক্ষিণ শাখায় ভিড় ছিল তুঙ্গে। শনিবার বলে ট্রেনের সংখ্যাও ছিল কম। ঠাসাঠাসি ভিড় নিয়েই ছুটেছে সব ট্রেন। ইদের আগে অনেকের বাড়ি ফেরার তাড়া থাকায় বসিরহাট, ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, রানাঘাট ও শান্তিপুর শাখার ট্রেনে প্রায় সারা দিনই ছিল ঠাসাঠাসি ভিড়। কোথাওই সে অর্থে কড়াকড়ি ছিল না। রেলকর্তাদের দাবি, তাঁরা দু’বার রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে ট্রেন চালানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু রাজ্য সম্মত হয়নি।

তবে, সব চেয়ে বেশি ভোগান্তির মুখে পড়েন ধর্মতলা থেকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলামুখী যাত্রীরা। বাসের অপেক্ষায় জেরবার হতে হয় তাঁদের। সরকারি বিধি অনুযায়ী বাসে ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী তোলার নিয়ম না থাকায় অনেকে টিকিট কাটারই সুযোগ পাননি। শেষে অনেকে জোর করেই বাসে ওঠেন। অনেকে বেশি টাকায় বেসরকারি বাসের টিকিট কাটতে বাধ্য হন। যাত্রীদের অভিযোগ, যাত্রী-সংখ্যা ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা হলেও বাসের সংখ্যা বাড়েনি। ফলে, টিকিটের জন্য হাহাকার দেখা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের সালারের বাসিন্দা শেখ মনিরুজ্জামান প্রায় দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করে বাড়ি ফেরার টিকিট পান।

পরিবহণ নিগমের আধিকারিকদের বক্তব্য, ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে এমনিতেই আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। ভিড় সামাল দিতে বাসের সংখ্যা বেশি বাড়ালে ক্ষতির বহর বাড়বে। তাতে বেশি দিন পরিষেবা সচল রাখাই মুশকিল হবে। তাই চাহিদার তুলনায় কম বাস চালানো হচ্ছে। ফলে বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy