গোপীনাথ সাহা। ফাইল ছবি।
পরাধীন ভারতে কলকাতার নগরপাল চার্লস টেগার্টকে গুলি করে মারতে গিয়ে ভুল করে মেরে ফেলেছিলেন পাশে থাকা সাধারণ এক ইউরোপীয়, আর্নেস্ট ডে-কে। সেই অপরাধে ১৯২৪ সালের ১ মার্চ ফাঁসি হয়েছিল আঠারো বছর চার মাস বয়সি গোপীনাথ সাহার। তরুণ ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর মৃত্যুর শতবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে আজ, বুধবার থেকে। আজ কলকাতার ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটে ‘বঙ্গীয় সাহা সমিতি’ তাদের কার্যালয়ের সামনে গোপীনাথ সাহার আবক্ষ মূর্তির উন্মোচন করবে।
বঙ্গীয় সাহা সমিতির সম্পাদক সুবীর সাহা বললেন, ‘‘এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা কতটা জানে গোপীনাথ সাহা সম্পর্কে? অথচ ওঁর মতো শহিদদের হাত ধরেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাই ঠিক করেছি, গোপীনাথের মৃত্যু শতবর্ষ উপলক্ষে শ্রদ্ধা জানাতে অন্যান্য অনুষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর মূর্তিও বসানো হবে। এ ভাবে আজকের প্রজন্ম তাঁর সম্পর্কে জানতে উৎসাহী হবে।’’
গোপীনাথের বংশের লোকজন থাকেন শ্রীরামপুরের ক্ষেত্রমোহন সাহা স্ট্রিটে। চার্লস টেগার্টকে কী ভাবে গুলি করে মারার পরিকল্পনা করেছিলেন ওই তরুণ? গোপীনাথের ভাইপো জগবন্ধু সাহা বলেন, ‘‘বাবাদের মুখে শুনেছি, চার্লস টেগার্ট খুব অত্যাচারী পুলিশ কমিশনার ছিলেন। বন্দেমাতরম শুনলেই বেত হাতে মারতে আসতেন। টেগার্টকে মারার পরিকল্পনা করতে গিয়ে কাকা জানতে পারেন, তিনি সব সময়ে রক্ষী-পরিবৃত হয়ে থাকেন। অনেক দিন ধরে টেগার্টকে অনুসরণ করে কাকা দেখেন, ওঁকে একমাত্র ফাঁকা পাওয়া যায় প্রাতর্ভ্রমণের সময়ে। তখন রক্ষী থাকেন না। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এক দিন ভোরেই টেগার্টকে লক্ষ্য করে গুলি চালান কাকা।”
কিন্তু সেই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এক সাধারণ ইউরোপীয়ের গায়ে লাগে। তাঁর মৃত্যু হয়। জগবন্ধু বলেন, “আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে কাকার ফাঁসি হয়। হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে যান। তবে টেগার্টের বদলে গুলিতে এক নিরপরাধ ইউরোপীয় মারা যাওয়ায় কাকা আফশোস করেছিলেন।’’
সুবীর জানান, সুভাষচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে চিত্তরঞ্জন দাশ— তখনকার স্বাধীনতা সংগ্রামীরা সকলেই ভালবাসতেন গোপীনাথকে। গোপীনাথ গ্রেফতার হওয়ার পরে সেই মামলা যখন চলছিল, তখন বাংলা সংবাদপত্রে নিয়মিত সেই মামলার বিবরণী লেখা হত। গোপীনাথের ফাঁসির পরে তাঁর দেহ পরিবারকে দেওয়া হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy