(বাঁ দিকে) রমজান আলি ও মহম্মদ শোয়েব (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
এলাকার একটি পুকুর থেকে দুই বালকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। বিধাননগর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝেরপাড়া এলাকার একটি পুকুরে শনিবার সকালে দুই বালকের দেহ ভাসতে দেখা যায়। ইকো পার্ক থানার পুলিশ দেহ দু’টি উদ্ধার করে। এই ঘটনায় স্তম্ভিত পাড়ার লোকজনও। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ দুই বালকের মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলেই মনে করছে। দেহ দু’টি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ।
মৃত দুই বালকের নাম রমজান আলি (১০) এবং মহম্মদ শোয়েব (৭)। ইকো পার্ক থানার পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুরের পর থেকে ওই দুই বালক নিখোঁজ ছিল। শনিবার ভোরে রমজান ও শোয়েবের দেহ তাদের বাড়ির সামান্য দূরের একটি পুকুরে ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয় মানুষ এর পরেই পুলিশে খবর দেন।
হাতিয়াড়া অঞ্চলের মাঝেরপাড়ার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা রমজান ও শোয়েবের পরিবার। নিম্নবিত্ত দু’টি পরিবার তাদের। রমজানের বাবা ছাতা সেলাইয়ের কাজ করেন। শোয়েবের বাবা পেশায় দিনমজুর। দু’টি বালকেরই মায়েরা পরিচারিকার কাজ করেন। শুক্রবার যখন দুই বালক নিখোঁজ হয়ে যায়, তখন তাদের মায়েরাও কাজে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার খবর জানাজানি হতেই সন্ধ্যার পর থেকে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ওই দুই বালকের খোঁজ পেতে শুক্রবারই পুলিশ ও স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি মহম্মদ সিরাজুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সিরাজুল জানান, তিনি দুই বালকের ছবি-সহ পুরো ঘটনা পুলিশ এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করে দিয়েছিলেন। সিরাজুল বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার পরে পরিবার দু’টি আমার কাছে আসে। আমি সব জায়গায় খবর পাঠিয়ে বাচ্চাদের খোঁজ শুরু করি।’’
এ দিকে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বিধাননগর কমিশনারেটের তরফে মৃত্যুর কারণ নিয়ে কেউ মন্তব্য করতে চাননি। তবে, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বৃষ্টির সময়ে দু’জনে কোনও ভাবে পুকুরে পড়ে যায়। স্থানীয়দের থেকে পুলিশ জেনেছে, এলাকার অনেক বাচ্চার মতোই রমজান ও শোয়েব ওই পুকুরে স্নান করতে নামত। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা চলছে। এমনও হতে পারে, এক জন পড়ে যাওয়ার পরে অন্য জন তাকে বাঁচাতে গিয়ে ডুবে যায়। কিন্তু দু’টি বাচ্চা ডুবে গেল, অথচ তা কারও চোখে পড়ল না কেন, এটাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
রমজানের বাবা নওশাদ আলি জানান, তিনি কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পরে দুপুরে ছেলেকে খাইয়ে তাঁর স্ত্রীও কাজে যান। রমজান বলেন, ‘‘ছেলে পড়তে গিয়েছে কি না জানতে বিকেলে মেয়েকে ফোন করি। মেয়ে জানায়, ভাই ক্যারম খেলছে এক আত্মীয়ের বাড়িতে। সন্ধ্যায় খবর পাই, দুপুর ৩টেয় শেষ বার ওকে দেখা গিয়েছিল বাড়ির কাছে। কেন পুকুরের দিকে গেল, আমার কাছে সেটা রহস্যের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy