—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যের শিক্ষা দফতর তাদের প্রকাশিত একটি বইয়ে শিক্ষকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধিপেয়েছে বলে দাবি করেছে। দফতরের এই দাবি ঘিরে তৈরি হয়েছেবিতর্ক। ‘এডুকেশন ফার্স্ট’ নামের ওই বইটির ২০২৩ সালের সংস্করণেদেখা যাচ্ছে, প্রাথমিক বাদে অন্যান্য স্তর, অর্থাৎ মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকের সংখ্যা আদতে কমেছে। যা দেখে শিক্ষক সংগঠনগুলির প্রশ্ন, এর পরেও শিক্ষা দফতর এমন অদ্ভুত দাবি করে কী ভাবে?
সংশ্লিষ্ট বইটিতে দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে ২০১১-’১২সালে যেখানে শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৪৮২, সেখানে ২০২২-’২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৭৭১ জনে। একই সময়সীমায় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকের সংখ্যা ২৪ হাজার ৭০৪ জন থেকে কমে হয়েছে ২৪ হাজার ২০১।
বইয়ের পরিসংখ্যান আরও দেখাচ্ছে, প্রাথমিক স্কুলগুলির ক্ষেত্রে শিক্ষকের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।২০১১-’১২ সালে এই স্তরে শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৭০৪। ২০২২-’২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২ লক্ষ ৬ হাজার ৩৮৪। কিন্তু প্রাথমিক স্কুলগুলির শিক্ষকদের বড় অংশেরইবক্তব্য, প্রয়োজনের তুলনায় এই বৃদ্ধি নগণ্য। ‘বঙ্গীয় প্রাথমিকশিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হন্ডা বলেন, ‘‘গত বছর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রীব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকে ১ লক্ষ ৯০ হাজার শূন্য পদ রয়েছে। ২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে যদি শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ১৫ হাজার বাড়ে, তা হলে ১ লক্ষ ৯০ হাজার শূন্য পদ পূরণ হতে কতবছর লাগবে? বাস্তব হল, বহু স্কুলে শিক্ষক না থাকায় পঠনপাঠন বন্ধ হওয়ার মুখে। শিক্ষক-সংখ্যার সামান্য বৃদ্ধিকে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি বলে দাবি করা পরিহাসের মতো শোনাচ্ছে।’’
অন্য দিকে, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের একাংশেরদাবি, শিক্ষকের সংখ্যা যে কমেছে, সে তথ্য বলছে শিক্ষা দফতরের পরিসংখ্যানই। বস্তুত, যত জনশিক্ষক কমেছে বলে দফতর জানাচ্ছে, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে বেশি। শিক্ষকদের ওই অংশের বক্তব্য, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বহু স্কুলআংশিক সময়ের এবং চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করে। শিক্ষাদফতরের পরিসংখ্যানে তাঁরাওযুক্ত হয়ে নেই তো? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
শিক্ষক নেতা তথা প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘প্রতি বছর প্রচুর শিক্ষকঅবসর নিচ্ছেন। সেই জায়গায় নিয়োগ নেই। স্কুলগুলিতে শিক্ষক-সঙ্কট ভয়াবহ আকার নিয়েছে। হাজার হাজার হবু শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করছেন। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা দফতরের এমন একটা অদ্ভুত দাবি হাস্যকর।’’
শিক্ষা দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধিবলতে প্রাথমিকে বৃদ্ধির কথাই মূলত বলা হয়েছে। উচ্চ প্রাথমিকও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগনিয়ে আদালতের জট কেটেগেলে ওই দুই স্তরেও শিক্ষকের সংখ্যা বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy