এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সিমেস্টারের ক্লাস। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বাংলা, ইংরেজি এবং শারীরশিক্ষার বই বাদে অন্যান্য বিষয়ের বই বেসরকারি প্রকাশকের থেকে কিনতে হয় পড়ুয়াদের। আর বাংলা, ইংরেজি এবং শারীরশিক্ষার বই শিক্ষা দফতর থেকে বিনামূল্যে দেওয়া হয়। শিক্ষক এবং অভিভাবকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাংলা-ইংরেজি বাদে অন্য বইগুলি যেমন এখনও পর্যন্ত বাজারে আসেনি, তেমনই শিক্ষা দফতর থেকে বিনামূল্যে দেওয়া বাংলা ও ইংরেজি বইও স্কুলে এসে পৌঁছোয়নি। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বাংলা ও ইংরেজি বইগুলি যে হেতু বাজারেও পাওয়া যায় না, তাই তাঁদের হাপিত্যেশ করে বসে থাকতে হচ্ছে।
আগামী বছর সিমেস্টার পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে। তৃতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টার মিলিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের মূল্যায়ন হবে। ফলে, তৃতীয় সিমেস্টারের গুরুত্ব এখন অনেকটাই বেশি। সেপ্টেম্বরে ওই সিমেস্টার হওয়ার কথা। তাই অনেক পড়ুয়া এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করতে চাইছে। তাদের একাংশের মতে, একাদশ থেকে দ্বাদশে ওঠার পরীক্ষা শেষ হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ অনুমোদিত দ্বাদশের অন্যান্য পাঠ্যবই বাজারে না এলেও সহায়িকা বই দিয়ে তারা কাজ চালিয়ে নিতে পারছে। কিন্তু বাংলা, ইংরেজি বইয়ের সহায়িকা বইও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, ওই দুই পাঠ্যক্রমের কিছু পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু কী পরিবর্তন, তা বই দু’টি প্রকাশিত না হলে জানা যাচ্ছে না। ফলে, বাংলা ও ইংরেজির পাঠ্যক্রম নিয়ে অন্ধকারে সকলে।
শিক্ষকেরা জানান, যে সমস্ত বই বাইরের প্রকাশকেরা প্রকাশ করেন, সেই বইগুলির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ওই প্রকাশকেরা বইগুলি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে জমা দেন। সেগুলি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যাচাই করানোর পরেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের থেকে টেক্সট বুক (টিবি নম্বর) নম্বর পাওয়া যায়। এ ভাবে কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে তবেই সেই পাঠ্যবই ছাপানোর অনুমতি পান ওই প্রকাশকেরা। তাই অনেক সময়ে বেসরকারি পাঠ্যবই বাজারে আসতে দেরি হয়। তবে, বাংলা ও ইংরেজি বইয়ের ক্ষেত্রে এমন কোনও নিয়ম নেই। কারণ, সরকারই তা প্রকাশ করে। তা হলে কেন সেই বইগুলি আগেই প্রকাশিত হবে না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
শিক্ষকদের আরও অভিযোগ, কোনও স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণিতে যত সংখ্যক পড়ুয়া পড়ে, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ঠিক ততগুলি বই-ই পাঠায়। শিক্ষকদের জন্য আলাদা করে কোনও বই পাঠানো হয় না। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য যদিও এ বিষয়ে বলেন, ‘‘এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ক্লাস শুরুর আগে বাংলা-ইংরেজি বই স্কুলে পাঠানো হবে। কোনও স্কুলে যদি শিক্ষকদের বই লাগে, তা হলে ক’টা বই লাগবে, সেই সংখ্যা লিখিত ভাবে দিলেই পড়ুয়াদের বইয়ের সঙ্গে অতিরিক্ত বইও পাঠানো হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)