আগামী মাসেই উত্তর কলকাতার চিৎপুর সেতু ভাঙার কাজ শুরু হতে পারে। ফাইল চিত্র।
একাধিক জটিলতা নিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে উত্তর কলকাতার আরও একটি সেতু ভেঙে নতুন করে তৈরির তোড়জোড়। সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে আগামী মাসেই উত্তর কলকাতার চিৎপুর সেতু ভাঙার কাজ শুরু হতে পারে। এ ব্যাপারে ডাকা দরপত্র চূড়ান্ত হওয়ার মুখে। তবে বিভিন্ন জটিলতার মধ্যে যে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন সব চেয়ে চিন্তিত তা হল, ওই সেতু সংলগ্ন ৮০টি পরিবারের পুনর্বাসন। সূত্রের খবর, সেতু ভাঙা থেকে শুরু করে নবনির্মিত সেতুর উদ্বোধন— এই সময়কালে ওই পরিবারগুলিকে থাকতে দেওয়ার জন্য জমি চেয়ে রেলের কাছে আবেদন জানিয়েছে সরকার। কিন্তু এখনও সেই আবেদনের উত্তর আসেনি।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পরে রাজ্যের সব সেতু এবং উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু করে সরকার। সেই পর্যায়ে টালা ও চিৎপুর সেতু ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু আগে টালা সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত হওয়ায় চিৎপুর সেতু নির্মাণ পিছিয়ে যায়। ঠিক হয়, বিপজ্জনক ওই সেতুটি ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে। এর পরে দুর্গাপুজোর মুখে নবনির্মিত টালা সেতুর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই ঠিক হয়, টালা সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হলে নতুন বছরে চিৎপুর সেতুর কাজে হাত দেওয়া হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সম্প্রতি বৈঠকে বসেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ-সহ পুরসভা, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এবং কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা। তাতেই ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কাজ শুরুর সবুজ সঙ্কেত মিলেছে বলে খবর।
ওই বৈঠকে উঠে আসে, ১৯৩৪ সালে তৈরি চিৎপুর সেতু ভেঙে তৈরি করা নিয়ে প্রথম জটিলতা রয়েছে পুনর্বাসনের প্রশ্নে। সূত্রের খবর, পুরকর্তারা আলোচনায় জানান, সেতুর পার্শ্ববর্তী রেলের একটি জমিতে ৮০টি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া যেতে পারে। ইতিমধ্যে ওই জমিটি দেওয়ার জন্য পূর্ব রেলকে অনুরোধ করেছে পুরসভা। প্রয়োজনে তাদের বার্ষিক ভাড়া দিতেও রাজি সরকার। কিন্তু সেই চিঠির এখনও উত্তর আসেনি। আলোচনায় উঠে আসে উত্তর কলকাতার ওই অংশে যানশাসনের বিষয়টিও। উপস্থিত আধিকারিকদের অনেকে বলেন, টালা সেতু চালু হয়ে যাওয়ায় এখন যান নিয়ন্ত্রণে তেমন সমস্যা হবে না। কিন্তু চিৎপুর সেতু বন্ধ থাকলে লকগেট উড়ালপুল বা তার পাশের কাশীপুর সেতু ব্যবহার করা হবে কোন দিকে, সেই প্রশ্ন ওঠে। কারণ, টালা সেতু চালু হয়ে গেলেও মূলত লরি এবং ভারী যানবাহন ওই পথ ধরেই উত্তর শহরতলি ও বিটি রোডের দিকে আসে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, চিৎপুর সেতু বন্ধ করতে হলে আরও বেশি করে খালপাড়ের রাস্তা ব্যবহার করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিকল্প পথ হল— টালা সেতু ভাঙার জন্য ওই অংশে রেললাইনের উপরে তৈরি করা রেলগেট। সেখান দিয়েও লরি বা ভারী গাড়িকে কাশীপুর হয়ে বি টি রোডের দিকে বার করানো হতে পারে। তবে পুলিশ বা কোনও পক্ষ চিৎপুর সেতু বন্ধ করার জন্য আর জি কর সেতুর উপরে বাড়তি চাপ দিতে রাজি নয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, চিৎপুর সেতুর পরেই আর জি কর সেতু সংস্কারের ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে কলকাতা পুরসভার এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় কাউন্সিলর তরুণ সাহা বলেন, ‘‘আগামী মাস থেকেই চিৎপুর সেতুতে কাজ হতে পারে। কিন্তু রেলের তরফে এখনও পুনর্বাসনের উত্তর আসেনি। ওই সেতুতে কাজ করার ক্ষেত্রে সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy