Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Baguiati double murder

কোথায় সত্যেন্দ্র? অতনু ও অভিষেক খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এখনও ফেরার, কোন পথে তদন্ত?

বাগুইআটির বাসিন্দা দুই ছাত্র, অতনু দে ও অভিষেক নস্করকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে বৃহস্পতিবারেও ধরতে পারেননি তদন্তকারীরা। তদন্তভার গিয়েছে সিআইডি-র হাতে।

মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী।

মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:২৪
Share: Save:

মৃতদেহ উদ্ধার এবং অন্ত্যেষ্টির পরে ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। বাগুইআটির বাসিন্দা দুই ছাত্র, অতনু দে ও অভিষেক নস্করকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে বৃহস্পতিবারেও ধরতে পারেননি তদন্তকারীরা। বিধাননগর পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার গিয়েছে সিআইডি-র হাতে। সূত্রের খবর, সত্যেন্দ্রকে খুঁজতে জঙ্গি সংগঠনের হদিস পাওয়ার পদ্ধতিকে কাজে লাগাচ্ছে সিআইডি। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা দুষ্কৃতীকে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেই ধরতে চাইছেন গোয়েন্দারা।

এ দিন বাগুইআটি থানায় গিয়ে ধৃত অভিজিৎ বসু-সহ চার অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডি-র আধিকারিকেরা। তাদের এ দিন হেফাজতেও নিয়েছে সিআইডি। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত ভাড়ার গাড়িটির জিপিএস ‘ট্র্যাক’ করাও শুরু হয়েছে। গোয়েন্দারা জানান, গাড়িটি কোন কোন রাস্তা দিয়ে ক’টার সময়ে গিয়েছে, তা দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাসন্তী হাইওয়ের ঘটকপুকুর, নলমুড়ি ও বড়ালি ঘাট এলাকার বেশ কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, জিপিএসের তথ্যের সঙ্গে ওই সব ফুটেজ মিলিয়ে দেখা হবে। তা থেকেই ২২ অগস্ট দুষ্কৃতীদের গতিবিধি কী ছিল, বোঝা যাবে। এ দিন গাড়িটি পরীক্ষা করতে বাগুইআটি থানায় যান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। গাড়ির গায়ে আঙুলের ছাপও পেয়েছেন তাঁরা। তবে সেগুলি কার, তা জানা যায়নি।

গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, মঙ্গলবার দুই ছাত্রের মৃত্যুর খবর জানাজানির পর থেকেই বন্ধ সত্যেন্দ্রর দু’টি ফোন। সে দিনই সত্যেন্দ্র শেষ বার অতনুর মাকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করেছিল। সত্যেন্দ্রর স্ত্রী পূজা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তিনিও স্বামীর সঙ্গে ২২ অগস্টের পর থেকে যোগাযোগ করতে পারেননি। গোয়েন্দারা জেনেছেন, ওই দিন সত্যেন্দ্রর ফোনের টাওয়ার লোকেশন ছিল জগৎপুরের কাছে কেষ্টপুরে। পুলিশকে ফাঁকি দিতে সে সাধারণ ফোনের বদলে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছে।

তদন্তকারীদের দাবি, ইন্টারনেট কল কিংবা আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করলে সহজে ফোনের অবস্থান চিহ্নিত করা যায় না। ওই আইপি অ্যাড্রেস জানতে হয় হোয়াটসঅ্যাপ সংস্থাকে চিঠি লিখে। সেই আইপি অ্যাড্রেস সংশ্লিষ্ট ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থাকে পাঠালে তবেই সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানা যেতে পারে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘এই পদ্ধতি বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের খোঁজ পেতে ব্যবহার করা হয়।’’

গোয়েন্দারা জেনেছেন, অতনুর এক বান্ধবীর কাছে প্রথম মুক্তিপণ চেয়ে হুমকি-মেসেজ এসেছিল। তাতে দুষ্কৃতীরা অতনুর বাবাকে রুবি মোড়ের কাছে টাকা নিয়ে যেতে বলে। ওই বান্ধবী অতনু ও অভিষেকের ভিডিয়ো দেখাতে বলায় দুষ্কৃতীরা তাকে টাকার ভিডিয়ো দেখাতে বলেছিল। গোয়েন্দারা জানান, প্রথমে অভিষেককে খুন করে ফেলা হয়েছিল বসিরহাটের হাড়োয়া থানা এলাকার কুলটির ভেড়িতে। তার খানিক বাদেই মাথায় আঘাত করে অতনুকে ন্যাজাট থানা এলাকার শিরীষতলার একটি ভেড়িতে ফেলা হয়।

এ দিন সিআইডি-র গোয়েন্দারা কুলটি ও শিরীষতলাতেও যান। ছিলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরাও। বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। এ দিন গোয়েন্দারা এক যুবককে ভাঙড়ের কাশীপুর থানায় নিয়ে এসে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেন। সূত্রের খবর, খুনের ঘটনায় ধৃত, ভাঙড়ের কাশীপুরের বাসিন্দা মহম্মদ শামিম আলিকে সাহায্য করেছিল সে। এ দিন সন্ধ্যার পরে অতনুর বাড়িতে দেখা করতে যান রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুজিত বসু ও ফিরহাদ হাকিম এবং সাংসদ সৌগত রায়।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এ দিন বলেছেন, ‘‘বাগুইআটিতে দুটো বাচ্চা ছেলের তাজা লাশ যাঁদের দেখতে হয়েছে, তাঁদের কাছে গিয়েছিলাম। তাঁদের যন্ত্রণার আমরা শরিক। তাঁরা বলেছেন, ছেলেদের ফেরত পাবেন না। কিন্তু দোষী, কুচক্রীদের শাস্তি চাই। বাগুইআটির ঘটনায় পুলিশ বা সিআইডি-র তদন্ত শ্লথ গতিতে চললে লোকজন নিয়ে বিধাননগর কমিশনারেট ঘেরাওয়ে যেতে হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Baguiati double murder Main accused
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy