Advertisement
E-Paper

Kolkata Municipal Election 2021: টিকিট পাওয়া নিয়েই সংশয় ছিল, সেই ফিরহাদই ফের মেয়র, মন্ত্রিত্বেও থাকবেন কি

দলের সর্বময় নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে মেয়র পদে প্রত্যাবর্তন ঘটল ববির। আগামী সোমবার তিনি মেয়র পদে শপথ নেবেন।

ফিরহাদ হাকিম।

ফিরহাদ হাকিম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:৩৬
Share
Save

প্রয়োজনে রাজ্যের মন্ত্রিত্ব ছাড়তেও রাজি ছিলেন। চেয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার ভোটে দাঁড়াবেন। মুখে সে ভাবে বলেননি, কিন্তু তাঁর ঘনিষ্ঠেরা বিলক্ষণ জানেন, ফিরহাদ (ববি) হাকিম চেয়েছিলেন দরকারে মন্ত্রিপদ বিসর্জন দিয়েও কলকাতার মেয়র পদে ফিরে আসতে। কিন্তু তাঁরা যেটা এখনও বুঝতে পারছেন না, মেয়র হওয়ার পরেও কি ববি মন্ত্রীও থাকবেন? সরকারি সূত্রের একাংশের কথা মেনে নিতে গেলে, থাকবেন। কিন্তু অন্য অংশ বলছে, না-আঁচালে বিশ্বাস নেই। ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মেনে তাঁকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হতে পারে। তবে দলীয় সূত্রের দাবি, মেয়রের পাশাপাশি ববি মন্ত্রীও থাকবেন। কারণ, তিনি মুখ্যমন্ত্রী ‘আস্থাভাজন’।

কলকাতার মেয়র যে ববি হচ্ছেন, তা পুরভোটের ফলপ্রকাশের দিনই মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তৃণমূলের জয়ের খবর আসার অব্যবহিত পরেই বৈঠকে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ। সেখানেই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যায়। বাকি ছিল ঔপচারিকতাটুকু। বৃহস্পতিবার দুপুরে মহারাষ্ট্র নিবাসে সেটাই ঘটল। দলের সর্বময় নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মেয়র পদে প্রত্যাবর্তন ঘটল ববির। আগামী সোমবার তিনি মেয়র পদে শপথ নেবেন।

মেয়র পদের দৌড়ে ববি যে এগিয়ে ছিলেন, তা তৃণমূলের অন্দরে তো বটেই, শহরের মানুষও জানতেন। ফলে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী মেয়র পদে ববির নাম প্রস্তাব করার পর মহারাষ্ট্র নিবাসের বৈঠকে মমতা যখন প্রশ্ন করলেন, ‘‘কারও কোনও আপত্তি আছে?’’ তখন কোনও আপত্তি এল না। উল্টে সুব্রত বললেন, ‘‘আপনি বলে দিলে কে আর আপত্তি করবে!’’

যা থেকে স্পষ্ট যে, দলের অন্দরে মমতাই এখনও শেষ কথা। বস্তুত, সেটা বোঝা গিয়েছিল পুরভোটে দলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার সময়েই। দলের অন্দরে প্রার্থী নির্বাচনের সময় ঠিক হয়েছিল ববি-সহ কলকাতার ছ’জন বিধায়ককে আর টিকিট দেওয়া হবে না। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মেনেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ববিরা যে টিকিট পাবেন না, তা-ও মোটামুটি পাকা হয়ে গিয়েছিল। শেষমুহূর্তে হস্তক্ষেপ করেন মমতা স্বয়ং। তাঁরই হস্তক্ষেপে টিকিট পান ববি-সহ বাকি বিধায়কেরা। তাঁরা সকলেই জিতেছেন।

অসমর্থিত সূত্রের খবর, ববিদের টিকিট দেওয়া, না-দেওয়া নিয়ে প্রশান্ত কিশোর এবং অভিষেকের সঙ্গে মমতা-সহ দলের প্রবীণ নেতাদের একাংশের কিঞ্চিৎ বাদানুবাদও হয়েছিল। আনুষ্ঠানিক ভাবে তার কোনও সমর্থন মেলেনি। তবে ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার ববির নাম য়খন মেয়র পদে ঘোষিত হচ্ছে, তখন সেখানে অভিষেক উপস্থিত ছিলেন না। তিনি ছিলেন দিল্লিতে। প্রথমে তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছিল, মমতার সঙ্গে জয়ী কাউন্সিলারদের নিয়ে মেয়র মনোনয়নের বৈঠকে অভিষেকও উপস্থিত থাকবেন। যদিও দলের নেতাদের একাংশের দাবি, ববির প্রত্যাবর্তনের বৈঠকে অভিষেকের অনুপস্থিতি নেহাতই কাকতালীয়। এর মধ্যে ‘অন্য’ কোনও কারণ খোঁজা ঠিক হবে না।

কিন্তু যাঁর প্রার্থিতালিকাতেই নাম ছিল না, তাঁর এই ‘প্রত্যাবর্তন’ খানিক অবিশ্বাস্য বৈকি! গত মাসখানেক সময় ধরে কার্যত অসাধ্যসাধন করেছেন ববি।

কলকাতা পুরভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার অনেক আগে থেকেই ববি তৈরি হচ্ছিলেন। বিধানসভা ভোটে জেতার পর বন্দর এলাকার বিধায়ক ববিকে মন্ত্রিত্ব দিয়েছিলেন মমতা। ২০১৮ সালে কলকাতার মেয়র পদ থেকে সরে দাঁড়ান শোভন চট্টোপাধ্যায়। তখনই ববিকে মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি কলকাতার মহানাগরিকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যে কারণে বিধানসভায় পুর আইনের সংশোধনও করতে হয়েছিল সরকারকে। তৃণমূলের একটা বড় অংশ মনে করে, মেয়র হিসেবে ববি পুরসভায় আগের চেয়ে ‘স্বচ্ছ’ প্রশাসন তৈরি করতে পেরেছেন।

তবে মেয়র পদে ফিরে এলেও ববির ‘পছন্দের’ তিন জয়ী নির্দল প্রার্থীকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি। দলের একাংশের দাবি, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের আয়েশা কনিজ, ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের রুবিনা নাজ এবং ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী পূর্বাশা নস্করকে তৃণমূলে ফেরাতে চেয়েছিলেন ববি। যদিও ববির ঘনিষ্ঠমহল সে কথা উড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাচক্রে, ওই তিন জন ভোটে জিতে তৃণমূলের ফেরার কথা ঘোষণাও করেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন স্বয়ং মমতা। তিনি বলেন, ‘‘কোনও নির্দলকে নেব না। গেম ইজ নট সো ইজি।’’

দলীয় সূত্রের খবর, ওই তিন জনকে ‘কৌশলগত’ কারণেই এখন ফেরানো হয়নি। কারণ, সেই দৃষ্টান্ত তৈরি হলে এর পর বিভিন্ন পুরসভার ভোটে দলের টিকিট না-পেয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে জিতে দলে ফেরার প্রবণতা বাড়বে। এখন দেখার, রাজ্যে সমস্ত পুরসভার ভোট হয়ে যাওয়ার পর ওই তিন নির্দলকে তৃণমূল ফিরিয়ে নেয় কি না।

তবে ভবিষ্যতে যা-ই হোক, একটি স্লোগান তৃণমূলের অন্দরে ফিরহাদ-অনুগামীরা প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। ‘যো জিতা ওহ্ সিকান্দর’ পাল্টে তাঁরা বলছেন, ‘যো জিতা ওহ্ ববিদা’। অস্যার্থ ‘সিকান্দর’ এখন এক এবং অদ্বিতীয় ববি।

KMC Mayor Firhad Hakim TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।