E-Paper

তালা ভেঙে উদ্ধার বৃদ্ধকে

প্রাথমিক তদন্তের পরে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃদ্ধ সুনীলবাবুর কিছু মানসিক সমস্যা রয়েছে। রক্তচাপ সামান্য বেশি, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৫
A Photograph of an old man

বাড়ি থেকে উদ্ধার করার পরে সুনীল দত্তগুপ্ত নামে ওই বৃদ্ধ। শনিবার।  নিজস্ব চিত্র।

অবশেষে ১৬ দিন পরে বাড়ির সদর দরজার তালা ভেঙে সল্টলেকের বিডি ব্লকের বাসিন্দা বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করল পুলিশ। শনিবার বিকেলে তাঁকে উদ্ধার করার জন্য বিধাননগর কমিশনারেটের উত্তর থানার পুলিশ, কমিশনারেটের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সাঁঝবাতি’, একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং চিকিৎসকদের একটি দল বিডি-২৫০ নম্বর বাড়িতে পৌঁছয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সুনীল দত্তগুপ্ত নামে ওই বৃদ্ধকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করায় পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তের পরে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃদ্ধ সুনীলবাবুর কিছু মানসিক সমস্যা রয়েছে। রক্তচাপ সামান্য বেশি, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক। তবে, সোডিয়াম-পটাশিয়ামের মাত্রা ঠিক নেই বলেই ধারণা চিকিৎসকদের। এ দিন বিকেলে বৃদ্ধকে উদ্ধারের পরে চিন্তামুক্ত হয়েছেন তাঁর প্রতিবেশীরাও। তাঁরা জানান, বৃদ্ধ বাবাকে তালাবন্দি করে মেয়ে কোথাও চলে গিয়েছেন। ফোনেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। বৃদ্ধকে সুস্থ রাখতে এই ক’দিন তাঁকে খাবার সরবরাহ করেছেন প্রতিবেশীরা। বারান্দা থেকে ঝোলানো ব্যাগে তুলে দেওয়া হত খাবার। বৃদ্ধ তা নিয়ে ঘরে চলে যেতেন।

এ দিন বৃদ্ধের বাড়ির দোতলায় উঠে দেখা যায়, সারা ঘরে জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। খাবারের অবশিষ্ট ও প্যাকেট জমে রয়েছে দোতলার রান্নাঘরে। দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে সেই জায়গা থেকে। এ দিন সকালেও পুলিশ এসে বাড়ির জলের পাম্প এক ঘণ্টার জন্য চালিয়ে দিয়েছিল।

এ দিন বৃদ্ধকে আপাত ভাবে দেখে মনে হয়নি, তিনি অসুস্থ। যদিও প্রতিবেশীদের নানা কথার জবাবে তাঁকে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শোনা যায়। প্রতিবেশীরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, মেয়ে কোথায়? উত্তরে বৃদ্ধ বলেন, ‘‘মেয়ে মারা গিয়েছে। ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। দুটো খরগোশ মারা গিয়েছে। মেয়ের সঙ্গে একটা লোক ছিল। সে খুন করেছে মেয়েকে।’’ পুলিশ এই বক্তব্যকে গুরুত্ব দেয়নি। গুরুত্ব দিচ্ছেন না প্রতিবেশীরাও। প্রতিবেশীরা জানান, বৃদ্ধকে বাড়িতে তালাবন্দি করে রেখে যাওয়ার সময়ে তাঁর মেয়ে সর্বাণী পাড়ার এক ইস্ত্রিওয়ালাকে বলে যান যে, তিনি ফিরে আসবেন। ওই ক’দিন বাবাকে খাবারের জোগান দিতে ইস্ত্রিওয়ালাকে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। কিন্তু ওই ব্যক্তিকে সর্বাণী সেই বাবদ কোনও টাকা পাঠাননি বলেই দাবি প্রতিবেশীদের।

এ দিন বাড়িতে ঢুকে দেখা যায়, রান্নাঘরে কয়েকটি শুকনো আলু-পেঁয়াজ ছাড়া কিছু নেই। বৃদ্ধকে যখন পুলিশ বলে, তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে, তিনি আপত্তি জানাননি। উল্টে হাসিমুখে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে নীচে নেমে আসেনি। পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে জড়ো হওয়া লোকজনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘গ্রেফতার হইনি। হাসপাতালে যাচ্ছি। ফিরে আসব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

rescued Old Man police Saltlake

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy