E-Paper

বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেও ডালকলে চাকরি, ‘আত্মঘাতী’ যুবক

পুলিশ জানায়, গণিতে স্নাতক হয়ে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করার পরেও উদয় মনের মতো চাকরি পাচ্ছিলেন না। ১২ থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতন পেতেন তিনি। যার জেরে ভুগছিলেন মানসিক অবসাদে।

An image of Death

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৩৩
Share
Save

তিন বছর আগে কলকাতায় এসে একটি ডালকলে চাকরি নিয়েছিলেন যুবকটি। যদিও তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল, অঙ্কে স্নাতক। বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। মঙ্গলবার দুপুরে সেই ডালকলের ভিতরেই পাওয়া গেল বাঁকুড়ার বাসিন্দা ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পরে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি সম্ভবত আত্মহত্যার। মৃতের পরিবার সূত্রের খবর, ওই শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ডালকলের চাকরি আর করতে চাইছিলেন না তিনি। উচ্চশিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও মনের মতো চাকরি না পেয়ে অবসাদে ভুগছিলেন। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম উদয় মণ্ডল (২৭)।

উল্টোডাঙা থানা এলাকার ক্যানাল সার্কুলার রোডের একটি ডালকলে চাকরি করতেন উদয়। তাঁর বাড়ি বাঁকুড়ার হীরাবাঁধ থানা এলাকার পাখুরিয়া গ্রামে। পুলিশ জানায়, গণিতে স্নাতক হয়ে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করার পরেও উদয় মনের মতো চাকরি পাচ্ছিলেন না। ১২ থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতন পেতেন তিনি। যার জেরে ভুগছিলেন মানসিক অবসাদে।

প্রান্তিক কৃষক পরিবারের ছেলে উদয় গ্রামের এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের সঙ্গে লকডাউনের পরে ওই ডালকলে চাকরি করতে আসেন। চিত্তরঞ্জন সাহানা নামে সেই বৃদ্ধ জানান, হিসাবনিকাশ এবং মালপত্র গাড়িতে ওঠানো-নামানোয় তদারকি-সহ নানা ধরনের কাজ করতেন উদয়। তিনি জানান, এ দিন সকালে ডালকলে যাওয়ার সময়ে তাঁকে খেয়ে নিতে বলে উধাও হয়ে যান উদয়। দুপুর একটা-দেড়টা অবধি খোঁজাখুঁজির পরে ডালকলের ভিতরে বন্ধ থাকা একটি মেশিনের ঘরে গলায় গামছার ফাঁস জড়ানো অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান শ্রমিকেরা। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানে উদয়কে মৃত ঘোষণা করা হয়। চিত্তরঞ্জন বলেন, ‘‘ডালকলের মালিক উদয়কে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন চাকরির পরীক্ষা দিতে যে কোনও জায়গায় যাওয়ার ব্যাপারে। এমনকি, মালিক নিজেও বলেছিলেন, এত লেখাপড়া জানা ছেলের বড় চাকরি পাওয়া উচিত।’’

এ দিকে, পাখুরিয়া গ্রামে পরিবারের বড় ছেলের এ ভাবে মৃত্যুর খবর পেয়ে স্তম্ভিত সকলেই। কলকাতা থেকে পাওয়া ওই খবরের ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি উদয়ের বাবা তরণীলাল এবং ভাই সুজয়। বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে কলকাতায় আসতে পারেননি সুজয়। দাদার কথা উঠতেই ফোনে ডুকরে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘‘দাদা গ্রামে টিউশনি করত। চাকরির খোঁজে কলকাতায় গিয়েছিল। সরকারি চাকরির পরীক্ষাও দিচ্ছিল। ইচ্ছে ছিল, পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। কোথা থেকে কী হয়ে গেল, বুঝে উঠতে পারছি না।’’

বৃদ্ধ তরণীলাল জানান, বড় ছেলে চাইতেন, পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। তিনি বলেন, ‘‘দশ বছর আগে রান্না করার সময়ে মাটির বাড়ির দেওয়াল ধসে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। ছেলেটা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শিখেছিল। আমরা প্রান্তিক চাষি। ছেলে চেয়েছিল বড় চাকরি করতে। আজ দুপুরে খবর এসেছে, ছেলে আর নেই।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suicide Depression Low Salary

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।