—প্রতীকী চিত্র।
গণধর্ষণের শিকার হওয়া তরুণীকে তাঁর টুইটার হ্যান্ডলের পোস্ট নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল আদালতে মামলার শুনানি চলাকালীন। ঘটনাচক্রে, তার পরের দিনই ওই তরুণীর ইনস্টাগ্রামে গালিগালাজ-সহ ফের ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভীত ও সন্ত্রস্ত তরুণী পুরো ঘটনার কথা জানিয়ে নরেন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত নভেম্বরে ওই তরুণী তাঁর এক বান্ধবীর সঙ্গে রাজারহাটের একটি রিসর্টে জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন। তরুণীর বান্ধবীর এক বন্ধুর জন্মদিন ছিল। অভিযোগ, সেই পার্টিতে তরুণীকে মাদক খাইয়ে অচৈতন্য করে দেওয়া হয়। এর পরে যে যুবকের জন্মদিন ছিল, তিনি এবং তাঁর বন্ধুরা মিলে তরুণীকে গণধর্ষণ করেন। ঘটনার পরে বিধাননগর পুলিশ ওই যুবক-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। সেই ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে ইনস্টাগ্রামে ওই তরুণী হুমকির মেসেজ পেয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
এখানেই যে প্রশ্নটা বড় হয়ে উঠছে তা হল, পাঁচ অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ার পরেও কেউ সমাজমাধ্যমে এতটা সাহস পান কোথা থেকে? নারী আন্দোলনের কর্মী শাশ্বতী ঘোষ মনে করেন, ওই তরুণীর যদি মনে হয় তিনি সমাজমাধ্যমে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর লোক পাওয়ার চেয়ে ‘ট্রোলড’ বেশি হচ্ছেন, তবে সেই হ্যান্ডল তিনি ব্যবহার করবেন কি না, সেটা তাঁর বিবেচনা। শাশ্বতীর কথায়, ‘‘সম্প্রতি কামদুনি-কাণ্ডের ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ওই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মামলারও ভবিতব্য অজানা। সুতরাং অনেকেই ধরে নেন, অপরাধ করলেও পার পাওয়া যাবে। রাজারহাটের রিসর্টের ওই ঘটনায় মেয়েটি বিচারের জন্য লড়ছেন। অভিযুক্তেরা প্রভাবশালী। মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে সাহস জোগাতে হবে।’’
নরেন্দ্রপুর থানা সূত্রের খবর, অভিযোগে তরুণী জানিয়েছেন, ধর্ষণ-কাণ্ডে জেরার সময়ে তাঁকে তাঁর টুইটার হ্যান্ডলের বিভিন্ন পোস্ট নিয়ে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। আশ্চর্যজনক ভাবে, তার ঠিক পরের দিনই তাঁর ইনস্টাগ্রামে অশালীন ভাষায় এক ব্যক্তি আক্রমণ করেন। তরুণীর অভিযোগ, তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রামে যে পোস্ট দিয়েছিলেন, সেটির প্রত্যুত্তরে এক যুবক তাঁকে ধর্ষণের হুমকি দেন। অভিযুক্ত যুবক রাজারহাটের ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের পরিচিত কি না, তা নিয়ে পুলিশের কাছে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন তরুণী।
পুলিশ জানায়, ইনস্টাগ্রামে যে যুবক মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, তাঁর খোঁজ শুরু হয়েছে। তরুণীর আইনজীবী ঝুমা সেন জানিয়েছেন, অভিযুক্তেরা জামিনের আবেদন করলেও তা খারিজ করে দিয়েছে উচ্চ আদালত।
উল্লেখ্য, ধর্ষণ-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পরে অভিযুক্তদের এক জনের পরিবারের তরফে তরুণীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। বারাসত আদালতে ওই ব্যক্তিকে দেখে চিনে ফেলেন তরুণী। বিচারককে তিনি জানান, ওই ব্যক্তি তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। লেক থানায় তিনি বিষয়টি নিয়ে অভিযোগও করেছিলেন। তখন বিচারক পুলিশকে বলেন ওই ব্যক্তিকে হেফাজতে নিতে। সেই মতো বিধাননগর পুলিশ ওই ব্যক্তিকে লেক থানার হাতে তুলে দেয়। পরে তিনি থানা থেকে জামিন নিয়ে চলে যান। তার জেরে লেক থানার কৈফিয়ত চায় আদালত। পুলিশ সেই উত্তর দিয়েছে। ৪ জুলাই ফের মামলার শুনানি রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy