রবীন্দ্র সরোবর থানায় রাখা দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাইক। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
রাতে বাড়ি থেকে মোটরবাইক নিয়ে বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। কিছু ক্ষণ ঘোরাঘুরি করে, খাওয়া-দাওয়ার পরে ভোরে বাড়ি ফিরছিলেন। পুলিশের দাবি, পিছনে বন্ধুকে বসিয়ে বেপরোয়া গতিতে বাইক চালিয়ে ফেরার পথে লেক গার্ডেন্স উড়ালপুলের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারায় বাইকটি। সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে উড়ালপুলের পাশের রেলিংয়ে। দু’জনেই রাস্তায় ছিটকে পড়েন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা চালককে মৃত বলে জানান। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম রণিত সমাদ্দার।
বছর তেইশের রণিত হরিদেবপুরের এম জি রোডের বাসিন্দা। তদন্তে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোর পাঁচটা দশ মিনিট নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। শনিবার মধ্যরাতে বন্ধু সম্রাটকে পিছনে বসিয়ে নিজের বাইক নিয়ে বেরোন রণিত। খাওয়াদাওয়া করতে বাইরে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে। লেক গার্ডেন্স উড়ালপুল দিয়ে বেপরোয়া গতিতে বাইক চালিয়ে যাওয়ার সময়ে সেটি পিছলে গিয়ে রেলিংয়ে ধাক্কা মারে। বেশ কিছু দূরে ছিটকে পড়ে বাইক। দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাইকের সামনের অংশ। রণিতের মাথায় আঘাত লাগে। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা রক্তাক্ত দু’জনকে উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসকেরা রণিতকে মৃত বলে জানান। অন্য আহত যুবক সম্রাট গাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর পা কয়েক টুকরো হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
রণিতেরা দুই ভাই। রণিত ছোট। বাবা হরিদেবপুরে একটি রেস্তরাঁ চালান। মৃতের আত্মীয়েরা জানাচ্ছেন, উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পরে আর পড়াশোনা করেননি রণিত। কাজও তেমন কিছু করতেন না। মাঝেমধ্যে বাবার রেস্তরাঁয় বসতেন। এক আত্মীয় প্রীতম সমাদ্দার বলেন, ‘‘বাইরে খেতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। ভোরে বাড়িতে পুলিশ ফোন করে জানায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে চলে যেতে। গিয়ে দেখি, সব শেষ।’’
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকটি আটক করে রবীন্দ্র সরোবর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বেপরোয়া গতির কারণে এই দুর্ঘটনা বলেই মনে করছে পুলিশ। দুর্ঘটনাস্থলের আগের একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজে মোটরবাইকটির বেপরোয়া গতির প্রমাণ মিলেছে বলেও পুলিশের দাবি। চালকের মত্ত অবস্থায় থাকার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘গাড়ির গতি এতটাই বেশি ছিল যে, বাইকের সামনের হাতল ভেঙে যায়। সামনের অংশে কিছুই অবশিষ্ট নেই।’’ এ দিন ময়না তদন্তের পরে দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy