—প্রতীকী চিত্র।
রাস্তার ধারে দাঁড়ানো ট্যাক্সিতে সজোরে ধাক্কা মারল মোটরবাইক। যার জেরে খানিকটা দূরে ছিটকে পড়েন মোটরবাইকের দুই আরোহী। এক জনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। অন্য জন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ট্যাক্সির ভিতরে তখন ঘুমোচ্ছিলেন চালক। তিনি তেমন আহত না হলেও হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। বড়তলা থানার পুলিশ ট্যাক্সি ও মোটরবাইকটি হেফাজতে নিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ। অরবিন্দ সরণির এক ধারে ট্যাক্সি দাঁড় করিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন সেটির চালক। হঠাৎ ঝাঁকুনি ও আওয়াজে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। রাস্তায় নেমে তিনি দেখেন, ট্যাক্সির সামনের দিকের অংশ দুমড়ে ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। সেখানে পড়ে রয়েছে একটি মোটরবাইক। দুই তরুণ ট্যাক্সির পিছনের দিকে খানিকটা দূরে পড়ে আছেন। এক জন সংজ্ঞাহীন, অন্য জন কোনও মতে ঠোঁট নাড়ছেন। খবর পেয়ে তত ক্ষণে সেখানে পৌঁছেছেন কাছেই কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী। এর পরে তিন জনকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অন্য জন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ট্যাক্সিচালককে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম অমর মণ্ডল (২৬)। বাড়ি আদতে বাগদায় হলেও থাকতেন নিউ টাউনে। সেখানেই গাড়ি চালানোর কাজ করতেন। শুক্রবার রাতে নিউ টাউনেরই বাসিন্দা, বছর একুশের বন্ধু রাজু কুমারের সঙ্গে বেরিয়েছিলেন অমর। তাঁর পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, নিমতলা শ্মশানের কাছে ভূতনাথ মন্দিরে যাচ্ছেন বলে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। সেখানে রাতে থেকে ভোরে নিউ টাউনের দিকে রওনা দেন দু’জন। নিজের মোটরবাইকটি চালাচ্ছিলেন অমরই, পিছনে ছিলেন রাজু। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান শুনে পুলিশের দাবি, বাইকের গতি এতটাই বেশি ছিল যে, চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্যাক্সিতে এসে ধাক্কা মারেন। ধাক্কার অভিঘাতে উড়ে গিয়ে পড়েন বাইকে থাকা দু’জন। এক তদন্তকারী অফিসারের মন্তব্য, ‘‘দু’জনেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন। রাস্তা সম্পূর্ণ ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও দাঁড় করানো ট্যাক্সিতে সরাসরি ধাক্কা মারে মোটরবাইকটি। ট্যাক্সির সামনের দিকের অংশ যে ভাবে দুমড়ে গিয়েছে, তাতেই বোঝা যাচ্ছে, বাইকের গতি অত্যন্ত বেশি ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরাও জানিয়েছেন এই অস্বাভাবিক গতির কথা।’’
গত কয়েক মাসে ভূতনাথ মন্দির সংলগ্ন এলাকায় মোটরবাইকের দৌরাত্ম্যে এমনিতেই নাজেহাল পুলিশ। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানান, তাঁদের সাম্প্রতিক অপরাধ পর্যালোচনা বৈঠকেও এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। ওই এলাকার নিমতলা ঘাট স্ট্রিট, বি কে পাল অ্যাভিনিউ, রবীন্দ্র সরণি, বিডন স্ট্রিট ও অভেদানন্দ রোডে বাড়তি পুলিশি নজরদারি বসিয়েও সুরাহা মিলছে না। গত মাসে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক মামলা হয়েছে ওই এলাকার জোড়াবাগানে। ওই পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘পথ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন কী কী করা যায়, ভাবা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনাও মত্ত অবস্থায় বাইক চালানোর দিকেই আঙুল তুলছে।’’ মৃত যুবকের বাবা গোবিন্দ মণ্ডল বললেন, ‘‘অনেক বুঝিয়েও ছেলেকে আটকাতে পারিনি। এই বয়সে ও চলে গেল। আমাদের সব শেষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy