বিধাননগর পুরসভার একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হল পুলিশে। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, সোমবার বাগুইআটি থানায় ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ দায়ের হয়। ওই চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো হবে বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
প্রবীণ ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মহিলা কর্মীরা সম্প্রতি তাঁদের সঙ্গে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলা, এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার মতো অভিযোগ করেছিলেন বিধাননগর পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে। ওই চিকিৎসকের ব্যবহার তাঁদের কাছে যৌন হেনস্থার সমতুল্য ঠেকেছে বলেই দাবি করেছিলেন সাত-আট জন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী। ওই চিকিৎসক কর্মস্থলে ভীতির পরিবেশ তৈরি করে রাখেন বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। ওই চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির মেডিক্যাল অফিসার।
ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা প্রাপক যে চারটি ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধিদের অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠিয়েছিলেন, তার মধ্যে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি প্রসেনজিৎ নাগ বিধাননগরের নগরপাল শ্রী মুকেশকে চিঠি লিখেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বিশাখা গাইডলাইন অনুসরণ করে অভিযোগ দায়ের করার জন্য। সোমবার নগরপালের নির্দেশে বাগুইআটি থানা অভিযোগ দায়ের করে বলে খবর।
যদিও স্বাস্থ্যকর্মীরা এ দিন বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। যিনি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন, তিনি এ দিন বলেন, ‘‘আমি আর এ নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমার শরীর খারাপ। খুব মানসিক চাপে আছি।’’
ওই চিকিৎসক আগেই দাবি করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কুপ্রস্তাবের অভিযোগও তিনি নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন। সোমবার তিনি জানান, তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল, যার জবাব তিনি দিয়েছেন। এ দিন তিনি ফের বলেন, ‘‘আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। যাঁরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তাঁরা সকলেই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করেন। তাঁদের সঙ্গে আমি কথা বলে জেনেছি, তাঁদের সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তার পরে অভিযোগ করা হয়েছে।’’
পুরো ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক রেষারেষিও থাকতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। যদিও ওই চিকিৎসকের প্রসঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের একাংশ শুরু থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে আগেও নানা অভিযোগ উঠেছিল বলে জানিয়েছিলেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, ওই চিকিৎসকের নিয়োগ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে হয়েছিল। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা জেলা স্বাস্থ্য দফতরই নিতে পারে। এ দিন বাণীব্রত জানান, ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। চিকিৎসককে তদন্ত চলাকালীন ক্লোজ় করা হতে পারে বলে খবর।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)