Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bike Accident

দুই বাইক দুর্ঘটনায় মৃত তিন, প্রশ্নে পুলিশি তৎপরতা

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত ১টা ১৫ নাগাদ প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটে হেস্টিংস থানা এলাকার সেন্ট জর্জেস রোডের চ্যাপেল চার্চের কাছে। অপর দুর্ঘটনাটি ঘটে রাত ২টো ৫৫ মিনিট নাগাদ বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে।

(বাঁ দিকে থেকে) রাজ দাস, বিশ্বজিৎ মণ্ডল এবং শুভ দাস।

(বাঁ দিকে থেকে) রাজ দাস, বিশ্বজিৎ মণ্ডল এবং শুভ দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ০৭:২৫
Share: Save:

রাতের শহরে বেপরোয়া মোটরবাইক চালিয়ে দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বাইক আরোহী তিন যুবকের। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠল, রাতপথে গাড়ির চালক স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল না মানলে পুলিশই বা কতটা তৎপর থাকে?

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত ১টা ১৫ নাগাদ প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটে হেস্টিংস থানা এলাকার সেন্ট জর্জেস রোডের চ্যাপেল চার্চের কাছে। ওই ঘটনায় মৃত মোটরবাইক চালকের নাম রাজ দাস (২৪)। রাজের পিছনে বসা আরোহী গৌতম কৈরার অবশ্য বড় আঘাত লাগেনি। দু’জনেরই মাথায় হেলমেট ছিল।

পরের দুর্ঘটনাটি ঘটে রাত ২টো ৫৫ মিনিট নাগাদ বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে। ওই মোটরবাইকে সওয়ার ছিলেন চালক-সহ তিন জন। চালক বিশ্বজিৎ মণ্ডল (২২) এবং আরোহী শুভ দাসের (২১) মৃত্যু হয়েছে। অন্য আরোহী, জখম ভিকি সরকারকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিন জনের মাথায় হেলমেট ছিল না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিশ্বজিতের বাড়ি আনন্দপুর থানা এলাকার নোনাডাঙার শরৎ মালঞ্চে। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি চালাতেন ওই যুবক। আড়াই বছরের একটি ছেলেও রয়েছে তাঁর। বিশ্বজিতের শ্বশুরবাড়ি নোনাডাঙার পোড়া বস্তিতে। সেখানেই বাড়ি আহত ভিকি দাসেরও। ভিকি ও বিশ্বজিৎ সম্পর্কে ভায়রা। বিশ্বজিতের শ্বশুরবাড়ির তরফে এক আত্মীয়ের প্রশ্ন, ‘‘জামাইষষ্ঠীর পরে আবার কেন বিশ্বজিৎ বন্ধুদের বাড়িতে যেতে গেল?’’

এ দিন দুপুরে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন ভিকি। তাঁর মুখে, চোখে ও হাতে গুরুতর চোট লেগেছে। ভিকি জানান, জামাইষষ্ঠীর অনুষ্ঠানের পরে তাঁরা বিশ্বজিৎকে নিয়ে বন্ধুর বাড়ি যান। তাঁদের দু’টি বাইকে তিন জন করে উঠেছিলেন। ওই যুবক বলেন, ‘‘রাত আড়াইটে নাগাদ বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে মোড় পেরোনোর সময়ে অন্য রাস্তা দিয়ে তীব্র গতিতে গাড়ি চলে আসে। বিশ্বজিৎ বাইক নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে ওই গাড়িতে ধাক্কা মারলে সবাই ছিটকে পড়ি। বন্ধুরাই এসএসকেএমে নিয়ে যায়।’’ ভিকির দাবি, তাঁরা যখন মোড় পেরোচ্ছিলেন, তখন সিগন্যাল সবুজ ছিল। অন্য গাড়িটি সিগন্যাল ভেঙে চলে আসে।

এই বাইক দুর্ঘটনায় মৃত, আর এক যুবক শুভ দাসের বাড়ি আনন্দপুর থানা এলাকার ভিআইপি বাজারে। শুভর মা ছন্দা দাসকে তাঁর ছেলের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয় এ দিন দুপুরে। শুভর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, কথা বলার মতো অবস্থায় নেই ছন্দা। ওই যুবকের এক প্রতিবেশী সুমি ভুঁইয়া বলেন, ‘‘শুভর মা কিছু দিন আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মাকে সুস্থ করতে দিন-রাত সেবা করেছিল শুভ।’’

এলাকাবাসীর প্রশ্ন, গভীর রাতে বেপরোয়া গতির গাড়িকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কেন পুলিশ থাকবে না? কারণ, রাতের শহরে বেশির ভাগ গাড়িই যে সিগন্যাল মানে না, এই অভিযোগ বহু দিনের। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাতে নিয়মিত পুলিশি টহল থাকে। সিগন্যালে সিসি ক্যামেরা থাকে। বালিগঞ্জ ফাঁড়ির মোড়ের কাছে যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

প্রথম দুর্ঘটনায় মৃত রাজের বাড়ি বেলতলা রোডে। পুলিশ জানিয়েছে, রাজের মোটরবাইক তীব্র গতিতে চলছিল। চার্চের কাছে বাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মারলে ঘটনাস্থলেই মারা যান রাজ। তাঁর বন্ধু গৌতমকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাজের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘‘ফোনে অনেক বার বলেছিলাম, তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসতে। বলেছিল, ফিরতে দেরি হবে। ভোরে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গিয়ে দেখি, সব শেষ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

bike accident Death Kolkata Traffic Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy