আদিগঙ্গার পাড় থেকে অবৈধ দখলদারদের সরিয়ে পুনর্বাসন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। দীর্ঘ দিন ধরে এই এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের উচ্ছেদের পরিবর্তে তাঁদের জন্য নতুন আবাসন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরসভার মেয়র পারিষদদের সাম্প্রতিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। কালীঘাট ও খিদিরপুর এলাকায় ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হবে চারতলা আবাসন, যেখানে থাকবে মোট ৭২টি ফ্ল্যাট। এর ফলে বহু পরিবার স্থায়ী ঠিকানা পাবে।
প্রকল্প অনুযায়ী, কালীঘাটের টালিনালার পাড়ে শশীশেখর বোস রো’র বাসিন্দাদের জন্য তৈরি হবে একটি চারতলা ভবন, যেখানে থাকবে আটটি ফ্ল্যাট। অন্য দিকে, খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারের সামনে বসবাসকারীদের পুনর্বাসন দিতে চারটি চারতলা আবাসন নির্মাণ করা হবে, যেখানে থাকবে ৬৪টি ফ্ল্যাট। পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে, যাতে দীর্ঘ দিন ধরে থাকা পরিবারগুলির বসবাসের অধিকার নিশ্চিত হয়। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই বিষয়ে দ্রুত কাজ শুরু করতে চান তাঁরা। পুনর্বাসনের পাশাপাশি আদিগঙ্গার সৌন্দর্যায়নেও জোর দেওয়া হচ্ছে। টালিনালার জলের দূষণ রোধে ৭৮টি নালার মুখ বন্ধ করে তা নিকাশি পাম্পিং স্টেশন ও সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের সঙ্গে সংযুক্ত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
এই নালাগুলির নোংরা জল সরাসরি টালিনালায় পড়ায় দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুরসভা উদ্যোগী। তিন ধাপে পলি অপসারণের কাজও চলছে পুরোদমে। এলাকাটিকে নোংরা হওয়া থেকে রক্ষা করতে পাড় বরাবর বসানো হচ্ছে উঁচু লোহার জাল। সেতুগুলিতেও একই ধরনের জাল লাগানো হয়েছে, যাতে স্থানীয় বাসিন্দা বা পথচারীরা জলাশয়ে আবর্জনা না ফেলতে পারেন। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর টালিনালার পাড় বাঁধানো হবে এবং পর্যাপ্ত জায়গা থাকলে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজায়নের কাজও করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, শিশুদের জন্য পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে পুরসভার। আদিগঙ্গার পাড়ের ঢালে বসানো হবে বিশেষ ধরনের ঘাস, যা ভূমিক্ষয় রোধ করবে। টালিনালার ঘাটগুলির সংস্কার ও আলোকসজ্জার কাজও চলছে।