Advertisement
২০ অক্টোবর ২০২৪
R G Kar Protest

নির্যাতিতার বাড়ির এলাকা থেকে ৮ ঘণ্টায় ধর্মতলা পৌঁছল ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’, পা মেলালেন অনেকে

শনিবার দুপুর ২টোর কিছু পরে নির্যাতিতার বাড়ির এলাকা থেকে শুরু হয় ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’। মিছিল শুরুর আগে জমায়েতে যোগ দেয় নির্যাতিতার পরিবার। ছিলেন তাঁর বাবা-মাও।

জুনিয়র ডাক্তারদের ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’ ধর্মতলায়।

জুনিয়র ডাক্তারদের ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’ ধর্মতলায়। ছবি: অনুসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ২২:১৩
Share: Save:

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নির্যাতিতার বাড়ির এলাকা থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত— ১৯ কিলোমিটারের বেশি পথ। শনিবার দুপুর থেকে এই দীর্ঘ পথ সাধারণ মানুষের ‘দখলে’। জুনিয়র ডাক্তারদের ডাকে সাড়া দিয়ে বহু সাধারণ মানুষ পা মেলালেন ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’য়। মিছিল থেকে উঠল নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবি। মুখে স্লোগান, হাতে পোস্টার-ব্যানার নিয়ে পথে নামেন চিকিৎসক থেকে সাধারণ মানুষ। অনেক বিশিষ্ট জনও পা মেলালেন শনিবারের মিছিলে। রাত সওয়া ১০টা নাগাদ সেই মিছিল পৌঁছয় ধর্মতলায়।

শনিবার দুপুর ২টোর কিছু পরে নির্যাতিতার বাড়ির এলাকা থেকে শুরু হয় ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’। মিছিল শুরুর আগে জমায়েতে যোগ দেয় নির্যাতিতার পরিবার। ছিলেন তাঁর বাবা-মাও। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি সংহতি জানাতেই ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’য় যোগ দেন তাঁরা। তার পর বিটি রো়ড ধরে ধীরে ধীরে মিছিল এগোতে থাকে। ডানলপ, শ্যামবাজার, কলেজ স্কোয়ার, কলেজ স্ট্রিট, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে মিছিল এসে পৌঁছয় ধর্মতলায়। সেখানেই রয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চ। ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’র মিছিল মিশে যায় অনশনমঞ্চের ভিড়ের সঙ্গে।

ডানলপ মোড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’।

ডানলপ মোড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’। ছবি: রিঙ্কি মজুমদার।

মিছিল শুরুর পর থেকেই সাধারণ মানুষ ভিড় করতে থাকেন। রাস্তার দু’পাশেও অনেককেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মিছিলের স্লোগানের সঙ্গে গলা মেলান তাঁরাও। কিছু পথ হাঁটেন মিছিলের সঙ্গে পা মিলিয়ে। জুনিয়র ডাক্তারদের পাশাপাশি, বেশ কয়েক জন সিনিয়র চিকিৎসকও যোগ দিয়েছিলেন শনিবারের মিছিলে।

ধর্মতলার অনমঞ্চের সামনে উড়ল জাতীয় পতাকা।

ধর্মতলার অনমঞ্চের সামনে উড়ল জাতীয় পতাকা। ছবি: অনুসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়।

মিছিল শেষে ধর্মতলায় জমায়েত।

মিছিল শেষে ধর্মতলায় জমায়েত। ছবি: সুদীপ্তা চৌধুরী সরকার।

সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তারকে দেখা গেল প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মিছিলে থাকতে। শুধু তাঁরা নন, আরও কয়েক জনও একই ভাবে দীর্ঘ ১৯ কিলোমিটারের বেশি পথ হেঁটেছেন। সকলের মুখে একটাই কথা, ‘বিচার চাই’। ধর্মতলায় অনশনকারীদের হাতে ‘ন্যায়ের মূর্তি’ তুলে দেন মিছিলে হাঁটা মানুষ। তাঁদের ধন্যবাদ জানান আন্দোলনকারীরা। অনশনমঞ্চ থেকেই রবিবারের কর্মসূচির কথা আরও এক বার মনে করিয়ে দেওয়া হল। রবিবার বিকেল ৪টের সময় ধর্মতলায় ‘মহাসমাবেশে’র ডাক দেওয়া হয়েছে।

ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে নির্যাতিতার প্রতীকী মূর্তি।

ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে নির্যাতিতার প্রতীকী মূর্তি। ছবি: সুদীপ্তা চৌধুরী সরকার।

শনিবার এক ব্যক্তি নির্যাতিতার প্রতীকী মূর্তি বানিয়ে ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে এনে রাখেন। তাঁর ব্যখ্যা, “আরজি কর-কাণ্ডের মতো আরও বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন মেয়েরা নির্যাতিত হচ্ছেন। সেটাও একটি মানচিত্রের সাহায্যে আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।”

ঘটনাচক্রে, শনিবার ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’ শুরু হয় ধর্মতলার উদ্দেশে, তখন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় পৌঁছে যান অনশনমঞ্চে। অনশনকারী এবং অন্য জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক আলোচনা করেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথাও হয় আন্দোলনকারীদের। অনশন তুলে নিয়ে কাজে ফেরার আহ্বান জানান তিনি। সন্ধ্যার পর মুখ্যসচিব জুনিয়র ডাক্তারদের চিঠি দিয়ে সোমবার বৈঠকে বসার কথা বলেন। তবে বৈঠকে বসার আগে অনশন তোলার ‘শর্ত’ও দেওয়া হয় নবান্নের তরফে।

অন্য বিষয়গুলি:

R G Kar Protest Junior Doctors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE