প্রতীকী ছবি।
সরকারি হোম পরিদর্শনে যাওয়া বিচারকের কাছে হোমে তাদের উপরে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছে কিছু আবাসিক কিশোরী। পুরুলিয়া আদালতের ওই বিচারকের কাছে সে কথা জেনে সম্প্রতি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা এবং তদন্ত শুরু করেছে পুরুলিয়া মহিলা থানা। বিচারক কিছু না বললেও, পুরুলিয়ার জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, ‘‘হোমের ঘটনাটি নিয়ে মামলা রুজু হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ হোমের সুপারের অবশ্য দাবি, অভিযোগ হয়েছে বলে তাঁর জানা নেই।
জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের অধীনে পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে শিমুলিয়ার ‘আনন্দমঠ’ হোমে ১৮ বছর বা তার অনূর্ধ্ব অনাথ বা কোনও মামলায় জড়িত নাবালিকাদের রাখা হয়। বর্তমানে জনা চল্লিশ আবাসিক রয়েছে সেখানে। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, দিন কয়েক আগে বিচারক হোম পরিদর্শনে যান। সেখানে আবাসিকদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানান।
ঘটনাচক্রে, ওই হোমের বিরুদ্ধে অব্যবস্থার অভিযোগ নতুন নয়। কয়েকবছর আগে হোমের আবাসিকদের একটা বড় অংশ হোম থেকে বেরিয়ে, জেলা আদালতের সিঁড়িতে গিয়ে বসে পড়ে। তাদের অভিযোগ ছিল, খাবারের মান ভাল নয়। কোনও বিষয় নিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানালে, তা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। শিক্ষক থাকলেও, তিনি বেশির ভাগ সময়ে অনুপস্থিত থাকেন। জেলা প্রশাসনের কর্তারা তাদের অভিযোগ শোনেন। প্রশাসনের দাবি, পরে পরিদর্শন করে, তাঁরা আবাসিকদের সমস্যাগুলির সমাধান করেছিলেন।
জেলায় হোমের এবং আবাসিকদের অবস্থা পরিদর্শনে দু’টি কমিটি রয়েছে। একটি ‘হোম ম্যানেজমেন্ট কমিটি’, অন্যটি ‘হোম ইনস্পেকশন কমিটি’। প্রথমটিতে জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক, হোমের সুপার এবং আবাসিকদের মধ্যে তিন-চারজনকে নেওয়া হয়। দ্বিতীয়টিতে জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক এবং জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্তার থাকার কথা। আবাসিকদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ দু’টি কমিটিরই নজরে আসার কথা। এ ক্ষেত্রে কী হল?
‘আনন্দমঠ’ হোমের সুপার সৌমিলি দাস বলেন, ‘‘অভিযোগ হয়েছে বলে আমার জানা নেই।’’ পুরুলিয়ার জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক কালীদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ছুটিতে ছিলাম। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক শিশির মাহাতোও দাবি করেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। কিন্তু প্রশাসন সূত্রের দাবি, ওই হোম নিয়ে ফের অভিযোগ ওঠায়, আবাসিকদের নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসনের অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy