পূর্ব ভারতের মধ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সেরা গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসাবে অন্যদের পিছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। শুধু তা-ই নয়, সেই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এসএসকেএম। সম্প্রতি, ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ’ (আইসিএমআর) গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির পরিকাঠামো, সাফল্য, সুযোগসুবিধার বিষয় বিবেচনা করে একটি ক্রমতালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকাতেই জায়গা পেয়েছে কলকাতার দুই মেডিক্যাল কলেজ। সেই খবর নিজেই সমাজমাধ্যমে জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এ-ও মনে করেন, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় প্রত্যেকের কাছে বাংলাই মডেল।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল বাংলা। শুধু বাংলা নয়, প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দেশেই। প্রশ্নের মুখে পড়েছিল মমতার সরকার। মহিলা চিকিৎসকের জন্য বিচার চেয়ে আওয়াজ উঠেছিল দিকে দিকে। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, জুনিয়র, সিনিয়র ডাক্তারেরাও প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন। সেই আবহেই বাংলার হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই।
জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যভবন অভিযান, ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশন’ দেখেছে বাংলা। তাঁদের অন্যতম দাবিই ছিল, স্বাস্থ্যপরিষেবায় পরিকাঠামোর উন্নতি করা। শুধু তা-ই নয়, মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, রোগী পরিষেবার উন্নতির দাবিও উঠেছিল। সেই পর্বে বার বার নবান্নের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের ‘ঠোকাঠুকি’ প্রকাশ্যে এসেছিল। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে তাঁদের অবস্থানে গিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিতেও দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতাকে। এমনকি, ধর্মতলার অনশন মঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুখ্যসচিবদের পাঠিয়েছিলেন তিনি। অনেক টালবাহানার পর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। দাবিদাওয়া নিয়ে চলেছিল দুই পক্ষের ‘দর কষাকষি’! সেই বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তারদের অনেক দাবিই মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মমতা।
আরও পড়ুন:
অনেকের মতে, ২০১১ সালে বাংলায় ক্ষমতায় আসা মমতার সরকার, এর আগে এমন নাগরিক আন্দোলনের মুখোমুখি হয়নি। যদিও এখনও সুপ্রিম কোর্টে চলছে আরজি কর মামলা। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে সেই শুনানিতে বার বার উঠে এসেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বিষয়টি। কখনও তা নিয়ে রাজ্যকে ভর্ৎসনা করেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ, আবার কখনও পরামর্শও দিয়েছে। অনেকের মতে, আইসিএমআরের এই স্বীকৃতি মমতার সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আরজি করের ধাক্কার পর এই স্বীকৃতি বাংলার তৃণমূল সরকারের কাছে স্বস্তির বিষয়।
সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন টিবি মুক্ত ভারত অভিযানেও বিশেষ কৃতিত্বের জন্য এই রাজ্যের প্রশংসা করেছে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। অতিরিক্ত টিবি রোগী চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে এই বিশেষ সম্মান এসেছে। এই কৃতিত্বের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।