Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Gogaht

গোঘাটের পথে ট্রাকে তোলাবাজি

‘বিপজ্জনক’ আরামবাগের রামকৃষ্ণ সেতু সংস্কারের কাজ চলছে। ফলে, ওই সেতু দিয়ে একমাস পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

তোলা-কাহিনি: ১) কামারপুকুর বেলেপাড়া রাস্তায় তোলা আদায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

তোলা-কাহিনি: ১) কামারপুকুর বেলেপাড়া রাস্তায় তোলা আদায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

পীযূষ নন্দী
গোঘাট শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৮
Share: Save:

ট্রাক থামিয়ে কোথাও চাওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা, কোথাও ১০০ বা ৫০০!

গোঘাটের কুমারগঞ্জ থেকে কামারপুকুর চটি— এই ১৪ কিলোমিটার যেতে পাঁচ-ছ’জায়গায় তোলা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন ট্রাকচালক এবং ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগের আঙুল পুলিশ এবং শাসকদলের দিকে।

‘বিপজ্জনক’ আরামবাগের রামকৃষ্ণ সেতু সংস্কারের কাজ চলছে। ফলে, ওই সেতু দিয়ে একমাস পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ফলে, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে সমস্ত পণ্যবাহী গাড়িকে এখন কামারপুকুর চটি থেকে বেঙ্গাই-কুমারগঞ্জের রাস্তা ধরে বর্ধমানের একলক্ষ্মী সেতু পেরিয়ে ৩৫ কিমি ঘুরপথে আরামবাগে যাতাযাত করতে হচ্ছে। ওই সেতুটিই বর্ধমান সীমানা সংলগ্ন গোঘাটের কুমারগঞ্জ এবং বর্ধমানের একলক্ষ্মীর সংযোগ ঘটিয়েছে।

এই ঘুরপথে যেতে একেই ট্রাকচালকদের হয়রানি বেড়েছে। বাড়তি তেল পুড়ছে। তাঁর উপরে তোলাবাজিতে তাঁরা অতিষ্ঠ বলে জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ সারা বছরই টাকা নিচ্ছে। এখন গোঘাটের পথে ট্রাকের চাপ বাড়ায় কুমারগঞ্জ, বেঙ্গাই এবং কামারপুকুর পঞ্চায়েত এলাকার শাসকদলের নেতা-কর্মীরাও বিভিন্ন রকম উন্নয়নের নামে টাকা তুলছেন।

শুক্রবার দুপুরে কলকাতা থেকে গোঘাটের বিভিন্ন চালকলের জন্য প্লাস্টিক বস্তা দিতে এসেছিলেন ট্রাকচালক তথা মালিক অর্জুন যাদব। তাঁর অভিযোগ, ‘‘একে তো ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা খারাপ। তার উপর টাকা চেয়ে পুলিশ আর নেতাদের অত্যাচার। শুধু গোঘাট থানা এলাকার মধ্যেই হাজিপুর, খাঁদিঘি, কুমারগঞ্জের আশুথখোলা, বেলুনদিঘি, খাটোগ্রাম ইত্যাদি জায়গায় গাড়ি আটকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। বেঙ্গাইয়ের বেলেপাড়ায় ১২০ টাকা দিতে হল।”

বারাসত থেকে ইট নিয়ে কামারপুকুরে আসা আর এক ট্রাকচালক চালক প্রবীণ দাস বলেন, “পুলিশ হলে কাগজপত্রের খুঁত আর মাল বেশি আছে, এই অজুহাতে ট্রাকপিছু ১০০ থেকে ৫০০ টাকা নিচ্ছে। আর শাসকদলের লোকরা মন্দির উন্নয়ন বা কোনও ক্লাবের পুজোর নামে ৫০ টাকা থেকে ৩০০টাকা অব্দি আদায় করছে।” গোঘাটের বিভিন্ন চালকল থেকে ট্রাকে চাল নিয়ে প্রায়ই কলকাতায় যেতে হয় মান্দারণ গ্রামের ট্রাকচালক শ্রীমন্ত ঘোষকে। তাঁর খেদ, ‘‘গোঘাটের লোক হওয়ার সুবাদে কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকাতেই দেখেছি, তৃণমূলের এক ব্লক স্তরের নেতার নেতৃত্বে আশুথখোলায় তাঁদের দলীয় কার্যালয়ের সামনেই ট্রাক ঘিরে টাকা তোলা হচ্ছে। আবার একটু তফাতেই বেলুনদিঘিতে টাকা তোলা হচ্ছে।’’

ট্রাকচালকেরা এই অভিযোগ তুললেও এখনও তাঁদের কিছু জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের কর্তারা। তৃণমূলের গোঘাট-২ ব্লক কার্যকরী যুব সভাপতি সুশান্ত ঘোষের দাবি, “দলীয় ভাবে কোথাও কেউ ট্রাক আটকে টাকা তুলছে না। গ্রামের বিভিন্ন ক্লাব পুজো বা নানা গ্রাম উন্নয়নের তাগিদে টাকা তুলছিল। তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

goghat extortion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy