Advertisement
E-Paper

দফায় দফায় অবরোধে ভোগান্তি দিনভর

পান্ডুয়া স্টেশনে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ অবরোধ শুরু হয়। চলে প্রায় দু’ঘণ্টা।

রক্ষাকবচ: হেলমেট পরে বাস চালাচ্ছেন সরকারি বাস চালক। উলুবেড়িয়ায়। নিজস্ব চিত্র

রক্ষাকবচ: হেলমেট পরে বাস চালাচ্ছেন সরকারি বাস চালক। উলুবেড়িয়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৩৪
Share
Save

পরীক্ষার জন্য আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন খন্যান ইটাচুনা বিজয়নারায়ণ মহাবিদ্যালয়ে বিএ দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া, বৈঁচির বৈদ্যপুরের বাসিন্দা সামিনউদ্দিন বিশ্বাস। কিন্তু বৈঁচি স্টেশনে এসে দেখেন, ট্রেন বন্ধ। পান্ডুয়ায় অবরোধ চলছে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরে কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে তিনি রেললাইন ধরে কলেজের পথে হাঁটা লাগালেন তিনি।

শুধু পান্ডুয়া নয়, হুগলির বিভিন্ন প্রান্তে দফায় দফায় ট্রেন এবং সড়ক অবরোধ হল বুধবারের সাধারণ ধর্মঘটে। বিভিন্ন বাম দলের পাশাপাশি কংগ্রেসের লোকেরাও বন্‌ধ সফল করতে পথে নামেন। ফলে, নানা প্রয়োজনে কাজে বেরিয়ে নাকাল হলেন বহু মানুষ।

পান্ডুয়া স্টেশনে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ অবরোধ শুরু হয়। চলে প্রায় দু’ঘণ্টা। দাবড়ার বাসিন্দা দেবাশিস সোম সকালে অসুস্থ বাবাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে পৌঁছতে দুপুর হয়ে যায়। পান্ডুয়ার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেন বাম এবং কংগ্রেসের সমর্থকেরা। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন।

হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার উত্তরপাড়া, হিন্দমোটর, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি, বৈদ্যবাটী, চন্দননগর, হুগলি, আরামবাগ শাখার সিঙ্গুর, হরিপাল, তালপুরে অবরোধ হয়। অবরোধ হয় হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার গোবরা স্টেশনেও। কোথাও পনেরো মিনিট, কোথাও আধঘণ্টা অবরোধ চ‌লে। রেল পুলিশ এবং চন্দননগর কমিশনারেট বা জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ অবরোধ তোলে। রিষড়ায় অবরোধকারীদের পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ।

এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করেছেন প্রবীণ সিপিএম নেতা সুদর্শন অধিকারী। আরামবাগ মহকুমা বাদে জেলার অন্যত্র বেসরকারি বাস কার্যত চোখে পড়েনি। তবে অটো-টোটো চলেছে। বিভিন্ন ঘাটে ফেরি পরিষেবা বন্ধ করেন বন্‌ধ সমর্থকেরা।

শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, চুঁচুড়া, জিরাট-সহ নানা জায়গায় দোকানপাট অধিকাংশই বন্ধ ছিল। কিছু জায়গায় দোকানপাট বন্ধ করে দেন বন্‌ধ সমর্থনকারীরা। ব্যাঙ্ক, ডাকঘরও ছিল বন্ধ। বিভিন্ন জায়গায় শপিং মলে সিপিএমের ঝান্ডা লাগিয়ে দেওয়া হয়। পতাকা সরিয়ে মল খোলার সাহস পাননি কর্মীরা। বৈদ্যবাটীতে একটি সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মীরা পুলিশের হস্তক্ষেপে ভিতরে ঢোকেন।

সকালে আরামবাগ শহরের অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। বাস ছিল কম। কামারপুকুর চটিতে পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। আরামবাগের পিসি সেন রোডের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘বহু বছর পরে দেখলাম সিপিএমের লোকেরা আঙুল উঁচিয়ে দোকান বন্ধ করতে বলছে।’’ তবে, সকাল ১১ টার পরে তৃণমূল নেতারা কিছু জায়গায় দোকান খোলান। বাম-কংগ্রেস সমর্থকরা উত্তরপাড়া পুরসভা বন্ধ করতে গেলে তাঁদের সঙ্গে পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পুরপ্রধা‌নের ভূমিকার নিন্দা করে সন্ধ্যায় মিছিল করেন বন্‌ধ সমর্থকেরা।

বুধবার ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব পড়ল হাওড়া গ্রামীণ এ‌লাকাতেও। এদিন দফায় দফায় মুম্বই রোড অবরোধ করা হয়। এছাড়াও হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের বিভিন্ন‌ স্টেশনে রেল অবরোধ করা হয়। মুম্বই রোড এবং রেল অবরোধ কোনও দফাতেই অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তবে বাগনান-শ্যামপুর রোড এবং বাগনান-মানকুর রোডের বিভিন্ন জায়গায় অবরোধে চলে দীর্ঘক্ষণ ধরে। ফলে যাত্রীরা বিপাকে পড়েন।

বাগনানের মানকুর মোড়ে মুম্বই রোড অবরোধ করা সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ। চলে ১০টা পর্যন্ত। চেঙ্গাইল, উলুবেড়িয়া, ফুলেশ্বর এবং নলপুরেও বিভিন্ন সময়ে রেল অবরোধ হয়। মেয়াদ ছিল পনের মিনিট থেকে আধঘন্টা। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘অবরোধকারীরা নিজেরাই উঠে যান। সব জায়গাতেই অবরোধ স্বল্প সময়ের জন্য হওয়ায় ট্রেন চলাচলে খুব একটা বিঘ্ন ঘটেনি।’’

তবে মুম্বই রোড ছিল অন্যদিনের তূলনায় সুনসান। ট্রেনেও যাত্রী ছিলেন কম। এ দিন দেওড়ার একটি স্কুলের সামনে কংগ্রেস-সিপিএম কর্মীরা পিকেটিং করছিলেন। ফলে ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকরা ঢুকতে পারছিলেন না। সেই সময় কয়েকজন বিজেপি কর্মী তাদের রাস্তা থেকে ধরে স্কুলে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে আসে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অবরোধকারীদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের বচসা বাধে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

Strike Bandh

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।