বিস্ফরণে উড়ে গেছে বাড়ি। — ফাইল চিত্র।
এগরার ক্ষত শুকোতে না শুকোতে বজবজ। বাজি দুর্ঘটনায় মৃত্যু-মিছিল চলছেই। এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে আছে বেআইনি বাজি কারখানা। কালীপুজোর সময় অথবা কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে নানা জায়গায় পুলিশ অভিযান চালায়। বাজি বাজেয়াপ্ত, ধরপাকড় করা হয়। কিন্তু, বাজি উৎপাদন বন্ধ হয় কই!
লাগাতার অভিযানে রবিবার রাতে হুগলির চণ্ডীতলার বেগমপুর থেকে ৪০ কেজি বাজি-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডানকুনির তেঁতুলতলায় বাজি তৈরি বন্ধ করা নিয়ে পুলিশ সোমবার সতর্ক করে সকলকে। কিন্তু এরপরেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় গত ১৬ মে বিস্ফোরণে ৯ জন মারা যান। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যের পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, এডিজি (সিআইডি), দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য সচিব, যুগ্ম বিস্ফোরক কন্ট্রোলারকে চিঠি দিয়েছে হুগলির চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’। বিপুল পরিমাণ বারুদ সরবরাহ এবং মজুত করা নিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়েছে তারা।
বারুদ তৈরি, পরিবহণ বা মজুতের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। বারুদ থেকে বাজি তৈরিতেও আইনি অনুমতি প্রয়োজন। সে সব কতটা মানা হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ওই সংগঠন। বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধের দাবিতে এ রাজ্যের আরও কিছু সংগঠন বারে বারেই গলা ফাটিয়েছে। কিন্তু, বারুদের আনাগোনা থেমে থাকেনি। বাজি-বোমা তৈরি চলছেই বলে অভিযোগ।ওই সংগঠনের সভাপতি তথা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি বাজি প্রস্তুতকারকদের কাছে জেনেছেন, চিন থেকে জলপথে এবং তামিলনাড়ুর শিবকাশি থেকে সড়কপথে এখানে বারুদ আসে। তার পরে ছড়িয়ে পড়ে কারবারিদের হাত ধরে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে কিছু বাজি বাজেয়াপ্ত করে দায় ঝাড়লেই হবে না, বিপুল পরিমাণ বারুদ কোথা থেকে আসে, কোথায় মজুত হয়, তা দেখে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’
গরু-কয়লা পাচার নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি সরগরম। বারুদের মতো পদার্থ কী ভাবে রাজ্যের সীমানা পার করছে, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।বাজেয়াপ্ত বাজি নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ওই সংগঠন। বছর তিনেক আগে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটিতে বাজি নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে গঙ্গার উল্টো পাড়ে হুগলির চুঁচুড়াও কেঁপে ওঠে। বাড়িতে ফাটল ধরে, জানলার কাচ ভাঙে। সেই ঘটনা স্মরণ করিয়ে সংগঠনের আর্জি, বাজেয়াপ্ত বাজি বিধি মেনে বিশেষ গাড়িতে হলদিয়ায় নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে গিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নিষ্ক্রিয় করতে হবে। বারুদের মধ্যে ক্লোরেট, বেরিয়াম, সিসা, লোহা, পটাশিয়াম প্রভৃতি ভারী ধাতু থাকে। যেখানে-সেখানে নিষ্ক্রিয় করলে বিস্ফোরণের আশঙ্কা যেমন থাকে, পরিবেশও মারাত্মক দূষিত হয়।
তথ্য সহায়তা: দীপঙ্কর দে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy