একটি দোতলা বাড়ির বন্ধ ঘরের খাট থেকে উদ্ধার হল এক প্রৌঢ়ার পচাগলা দেহ। দেহের পাশে তখনও বসেছিলেন প্রৌঢ়ার মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে। পুলিশের ধারণা, দিন কয়েক আগেই মারা গিয়েছেন ওই প্রৌঢ়া। মা মারা যাওয়ার পরে দেহ আগলে বসেছিলেন ছেলে। রবিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বালিটিকুরি এলাকার খালধারপাড়ার জেলেপাড়ায়। দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম রাসমণি নন্দী (৬৫)। তাঁর ছেলের নাম সুরজ নন্দী। বছর ৩০-এর সুরজ কিছু করতেন না। বাড়িতেই থাকতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলেকে নিয়ে রাসমণি ওই বাড়িতে
থাকতেন। মাঝেমধ্যে এলাকার মানুষ ওই প্রৌঢ়াকে বাজার-দোকান করতে দেখলেও ছেলেকে প্রায় দেখাই যেত না। তবে গত দু’বছর ধরে প্রায়ই মা-ছেলের মধ্যে বচসা বা মারামারি হচ্ছিল। পাড়ার লোকেদেরও অহেতুক গালিগালাজ করতেন তাঁরা। কয়েক বার পুলিশ গিয়ে তাঁদের এ সব না করতে বুঝিয়ে এসেছিল। তবে গত কয়েক সপ্তাহ দু’জনকেই প্রতিবেশীরা দেখতে পাননি বলে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সুচরিতা মান্না বলেন, ‘‘ওঁরা দু’জনেই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। বিনা কারণে রাস্তায় বেরিয়ে পাড়ার লোকেদের গালিগালাজ করতেন। পুলিশকে কয়েক বার অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ওঁদের দেখা যাচ্ছিল না। আর গত তিন-চার দিন ধরে গোটা পাড়ায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল। আজ সেটা বেশি হওয়ায় আমাদের সন্দেহ হয়। তখনই পুলিশে খবর দিই।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ওই প্রৌঢ়ার মৃত্যু কী ভাবে এবং কবে হয়েছে, তা ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলেই স্পষ্ট হবে। তবে দেহে পচন ধরলেও মায়ের দেহ আগলে ছেলে ওই ঘরে কয়েক দিন ধরে ছিলেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)