Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Serampore

Serampore: পুরনো চেহারায় ফেরা ‘গভর্নমেন্ট হাউসে’ স্থায়ী প্রদর্শশালা

ডেনিশ-শ্রীরামপুর ইনিশিয়েটিভের কর্ত্রী বেনতে উল্ফ রয়েছেন ওই কর্মকাণ্ডের দায়িত্বে।

গভর্নমেন্ট হাউস।

গভর্নমেন্ট হাউস। নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৯:৪০
Share: Save:

আঠেরো শতকের মাঝামাঝি শ্রীরামপুরে ঘাটি গেড়েছিলেন ডেনমার্কের বণিকরা। গঙ্গাপাড়ের এই শহরে ইউরোপের দেশটির উপনিবেশ চলেছিল প্রায় নব্বই বছর। ওই সময়ে শ্রীরামপুরে তাদের হাতে গড়ে ওঠে বিভিন্ন স্থাপত্য। সেখানকার জাতীয় মিউজ়িয়ামের সহায়তায় জীর্ণ হয়ে পড়া ওই আমলের বিভিন্ন ভবন পুনঃসংস্থাপিত হয়েছে গত কয়েক বছরে। তারই একটি ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ (যেখানে ডেনমার্কের প্রতিনিধি অর্থাৎ ‘রাজা’ থাকতেন)। এই ভবনে এ বার স্থায়ী প্রদর্শশালা হতে চলেছে। যেখানে উঠে আসবে পাঁচশো বছরের শ্রীরামপুরের ইতিহাস।

ডেনিশ-শ্রীরামপুর ইনিশিয়েটিভের কর্ত্রী বেনতে উল্ফ রয়েছেন ওই কর্মকাণ্ডের দায়িত্বে। তাঁর আশা, আগামী জানুয়ারির মধ্যেই কাজ শেষ হবে। তিনি মনে করেন, এই ভবন শ্রীরামপুরের তথ্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের পীঠস্থান হিসেবে গড়ে উঠবে। বৈষ্ণব আমল থেকে বর্তমান সময়ের কথা বলবে প্রদর্শশালা।

ওই ইনিশিয়েটিভ এবং এই কাজের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা জানান, ভবনের দু’টি বড় হল এবং একটি অপেক্ষাকৃত ছোট ঘর নিয়ে প্রদর্শশালা হবে। বৈষ্ণব সময়, দোলমন্দির তৈরি, মাহেশের রথ, ডেনিস উপনিবেশ, শ্রীরামপুর কলেজ, ইন্ডিয়া জুটমিল প্রভৃতি হরেক ভবন এবং সময়ের কাহিনি স্থিরচিত্র এবং বাংলা-ইংরেজি ভাষায় তুলে ধরা হবে। থাকবে স্বাধীনতার সময়ের কথাও। যে ভবনগুলি পুনঃসংস্থাপিত হয়েছে, সেগুলির কাজ ছবিতে তুলে ধরা হবে। ওই স্থাপত্যগুলির মধ্যে ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ ছাড়াও রয়েছে গভর্নমেন্ট কম্পাউন্ডের প্রধন গেট, দক্ষিণ গেট, রেড বিল্ডিং, সেন্ট ওলাভ গির্জা, ডেনমার্ক ট্যাভার্ন।

সে আমলের বিভিন্ন বাড়ির কথাও ছবি এবং প্রত্নতাত্বিক তথ্য-সহ ঠাঁই পাবে। ওই তথ্য প্রস্তুত করেছেন আমদাবাদের সেপ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ছোট একটি অডিটোরিয়ামও থাকবে। আলোচনা বা ছোট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী এতে হতে পারে। শতাধিক মানুষ বসতে পারবেন।

মঙ্গলবার এখানে এক অনুষ্ঠান হয় কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়, ডেনমার্কের জাতীয় মিউজ়িয়াম এবং শ্রীরামপুর হেরিটেজ রেস্টোরেশন ইনিশিয়েটিভের (শ্রী) মিলিত উদ্যোগে। এই ভবনকে কী ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। প্রদর্শশালাটি রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের হাতে থাকবে বলে জানা গিয়েছে।

বুধবার গভর্নমেন্ট হাউসে গিয়ে দেখা গেল, প্রদর্শশালার কাজ চলছে জোরকদমে। ইতিহাসবিদ সাইমন রাস্টিন তদারকি করছেন। রাস্টিনের গবেষণার বিষয় ছিল— শ্রীরামপুর। ডেনমার্কের ওই যুবকের কথায়, ‘‘এই শহরকে চেনা, জানা এবং সংস্কৃতি চর্চার অসাধারণ জায়গা হতে চলেছে এটি।’’

একই উচ্ছ্বাস বেনতের গলাতেও। তিনি জানান, প্রদর্শশালার জন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। ‘শ্রী’-র সহ-সম্পাদক মোহিত রণদীপ বলেন, ‘‘ডেনমার্ক সরকার এবং জাতীয় মিউজ়িয়ামের উদ্যোগ শ্রীরামপুরের চেহারা অনেকটা বদলে দিয়েছে। এখানকার প্রশাসন ও পুরসভা শহরবাসীকে শামিল করে বাকি কাজ করে জায়গাটিকে ‘হেরিটেজ জ়োন’ হিসেবে ঘোষণা করুক। তাতে ওই শহরের অতীত সৌন্দর্য পুরোমাত্রায় ফিরে আসবে।’’

ডেনিস আমলের পরেও ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ শ্রীরামপুরের প্রধান প্রশাসনিক ভবন ছিল। জীর্ণ হয়ে পড়ায় ১৯৯৯ সালে পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়। পরে নয়া উদ্যোগে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সহায়তায় ভবনটি সংস্কার করে রাজ্যের হেরিটেজ কমিশন। উপদেষ্টার ভূমিকায় ছিলেন ডেনিসরা। এখন সেখানে মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কার্যালয় হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Serampore Denmark Danish
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy