Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Adenovirus

তিন দিনে হুগলিতে তিন শিশুর মৃত্যু

হুগলিতে জ্বর, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের চেম্বারে ভিড় জমাচ্ছেন অভিভাবকেরা। স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য বলছেন, উদ্বেগের কারণ নেই।

মৃত শিশুর দেহ কবর দিতে হাজির পরিবারের সদস্যেরা। চুঁচুড়ার কালীতলা এলাকায়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

মৃত শিশুর দেহ কবর দিতে হাজির পরিবারের সদস্যেরা। চুঁচুড়ার কালীতলা এলাকায়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া-উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩ ০৮:৫৭
Share: Save:

অ্যাডিনোভাইরাসে হুগলির এক শিশুর মৃত্যু হল। দেবানন্দপুরের হলুদপুরের পনেরো মাসের ওই শিশুকন্যা ন’দিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে বুধবার গভীর রাতে সেখানেই মারা যায়। এর আগে জ্বর, শ্বাসকষ্ট-সহ অন্য উপসর্গ নিয়ে চন্দননগর এবং দাদপুরের আরও দু’টি শিশুর মৃত্যু হয়। ফলে, সোম থেকে বুধ— তিন দিনে হুগলির তিন শিশুর মৃত্যু হল।

হুগলিতে জ্বর, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের চেম্বারে ভিড় জমাচ্ছেন অভিভাবকেরা। স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য বলছেন, উদ্বেগের কারণ নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাড়িতেই আক্রান্তেরা সেরে উঠছে। মানুষকে সাবধানে থাকার বার্তা দিয়ে লিফলেট বিলি করা হবে।

দেবানন্দপুরের ওই শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সে অসুস্থ হয় ১০-১২ দিন আগে। ২১ ফেব্রুয়ারি চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই কলকাতা মেডিক্যালে পাঠানো হয়। শিশুটির বাবা বলেন, ‘‘এই ক’দিন হাসপাতালে বহু শিশুকে ভর্তি হতে দেখেছি। আমার কোল খালি হয়েছে। আর কারও যেন না হয়।’’

দেবানন্দপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য পীযূষ ধরের কথায়, ‘‘ঘরে ঘরে ছোট-বড় সকলের জ্বর-সর্দি-কাশি হচ্ছে। শিশুমৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক স্বাভাবিক। তবে, আমরা বলছি, ভয় পাবেন না। চিকিৎসক, হাসপাতালের উপরে ভরসা রাখুন।’’ এলাকার বিধায়ক অসিত মজুমদার জানিয়েছেন, মানুষকে সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালানো হবে।

শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা সামাল দিতে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এআরআই (অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন) বিভাগ খোলা হল বৃহস্পতিবার। এখানে সারা দিন শিশু বিশেষজ্ঞ থাকবেন। প্রয়োজনে এখান থেকে অন্তর্বিভাগে পাঠানো হবে। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এআরআই বিভাগে অন্তত ১৫টি শিশুর চিকিৎসা হয়। এক জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এখানে শিশু বিভাগে ২০টি শয্যা তৈরি রাখা হয়েছে। ছোটদের পাশাপাশি মহিলা-পুরুষ মিলিয়ে ২৫ জন শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে আসেন। সন্ধ্যায় উত্তরপাড়া পুরসভার মহামায়া হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট শুভদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইসিইউ মিলিয়ে ১২ জন ভর্তি। জ্বর-সর্দি কমলেও অনেকের শ্বাসকষ্ট থেকেই যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ইনহেলার দিতে হচ্ছে।’’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব, আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৪৬ শয্যার শিশু বিভাগে ভর্তি ৫২ জন। হাসপাতালের খবর, কোনও কোনও দিন এই সংখ্যা ১০০ ছুঁয়ে ফেলছে। অধ্যক্ষ রামপ্রসাদ রায় জানান, অ্যাডিনোভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে দৈনিক গড়ে ৫-৬টি শিশু ভর্তি হচ্ছে। চন্দননগর হাসপাতালে শিশু বিভাগে শয্যা ৩০টি। ভর্তি ৩৯টি শিশু। এক জনকে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। শ্রীরামপুর ওয়ালশে শিশু বিভাগে ৫২টি শয্যার মধ্যে ১৬টি ফাঁকা। ইমামবাড়া হাসপাতালে ৪৮ শয্যার শিশু বিভাগে ভর্তি ৩৪ জন। এ দিন ৩ জনকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

হাওড়ায় বৃহস্পতিবার অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমিত ৯টি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল। এদের মধ্যে ৪ জন হাওড়া জেলা হাসপাতাল এবং ৫ জন উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রচুর শিশু জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। উলুবেড়িয়া মেডিক্যালে মোট ৫৪টি শিশু চিকিৎসাধীন। এক জনকে কলকাতা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কাশি নিয়েঅনেকেই ভর্তি হচ্ছে। তবে, সেই সংখ্যা কমছে। আডিনোভাইরাসের লক্ষণ দেখলেই পরীক্ষার ব্যবস্থা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

অন্য বিষয়গুলি:

Adenovirus Children Death Chinsurah Uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy