E-Paper

৬১ বছর ধরে মন্ত্র ছাড়াই কালী আরাধনার রীতি রতনপুরে

পুজোর প্রতিষ্ঠাতা তথা পূজারী কালীশঙ্কর সাঁতরার দাবি, পুজোর সমস্ত আচারই দৈব আদেশে পাওয়া। তিনি জানান, ৯ বছর থেকে কালী মূর্তি তৈরি করে পুজো করছেন।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৭
আরাধনা হয় এই প্রতিমার। নিজস্ব চিত্র

আরাধনা হয় এই প্রতিমার। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

এই কালী মূর্তির আরাধনায় উচ্চারিত হয় না মন্ত্র। দেবীকে স্মরণ করে মুখে যে কথা বা গান আসে সেটাই মন্ত্র। কালী প্রতিমার বুকে পা দিয়ে পুজো করেন পূজারী। দেবীর কাছে ভক্তের মনোবাঞ্ছা পৌঁছে দিতে কাচের উপরে মাথা ঠোকেন। এ ভাবে পালিত হয় আরামবাগের রতনপুরের ৬১ বছরের পুরনো কালীপুজো। আরামবাগ-সহ জেলার অন্যত্র তো বটেই, এমনকী কলকাতা ও পড়শি জেলা থেকেও বহু ভক্ত এখানে পুজো দেখতে আসেন। ভিড় সামলাতে রাখতে হয় পুলিশি ব্যবস্থা।

পুজোর প্রতিষ্ঠাতা তথা পূজারী কালীশঙ্কর সাঁতরার দাবি, পুজোর সমস্ত আচারই দৈব আদেশে পাওয়া। তিনি জানান, ৯ বছর থেকে কালী মূর্তি তৈরি করে পুজো করছেন। বর্গক্ষত্রিয় পরিবারের হওয়ায় তিনি কোনও মন্ত্রও জানেন না। মাকে স্মরণ করে মুখে যা আসবে, সেটাই মন্ত্র। যুবক বয়সে তিনি এক বার ১২ ফুট উচ্চতার কালীমূর্তি তৈরি করেন। রং করার সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। অজ্ঞাত বালিকা কণ্ঠ তাঁকে জাগিয়ে রঙের কাজ শেষ করতে বলে। কিন্তু চক্ষুদানের সময়ে মূর্তির মুখের নাগাল পাচ্ছিলেন না। তখন দুঃখে মাথা ঠুকছিলেন। ফের সেই বালিকা কণ্ঠ তাঁকে চৌকিতে উঠে মূর্তির বুকে পা দিয়ে কাজ করতে নির্দেশ দেয়। সেই থেকেই তিনি প্রতিমার বুকে পা দিয়েই পুজো করেন। পুজোর মন্ত্র এবং ভক্তের আকুতি দেবীর কাছে পৌঁছাতে কাচের উপর মাথা ঠোকা, নাচও মায়ের আদেশেই বলে তিনি জানান।

বছর কুড়ি হয়ে গেল কালীশঙ্কর আর মাটির প্রতিমা গড়েন না। আরামবাগ শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে রতনপুরের মন্দিরে এখন স্থাপিত হয়েছে ৬ ফুট উচ্চতার পাথরের দক্ষিণাকালী মূর্তি। তবে মূর্তির বুকে পা দিয়ে পুজো করার প্রথা বদলায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ৬১ বছর আগে একটি তালপাতার ছাউনি করে এই কালীপুজো শুরু হয়েছিল। ভক্তদের দানের অর্থে এখন সেই জায়গায় প্রায় চার বিঘা জমির উপরে তৈরি হয়েছে মন্দির। নিত্য পুজো হয়। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার এবং শনিবার ভক্তদের ভিড় বেশি হয়। তবে বিশেষ ধূমধাম হয় কার্তিক মাসের কালীপুজোয়। পাঁঠা বলি হয়। ভাত, খিচুড়ি, লুচি ভোগের ব্যবস্থা থাকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Arambagh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy