দুর্গাপুজোয় অনেকেই মানেননি করোনাবিধি। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে পুনরায় করোনার বাড়াবাড়ির মধ্যে লোকাল ট্রেনকে ছাড়পত্র দেওয়া এবং কালী ও ছটপুজোয় নৈশ নিয়ন্ত্রণ বিধি শিথিল করার পরিণাম কত ভয়ঙ্কর হতে পারে, অনুমান করেই শিউরে উঠছে স্বাস্থ্য শিবিরের একটি বড় অংশ। এই পরিস্থিতিতে যথাসম্ভব বেশি করোনা পরীক্ষা এবং মানুষের শুভ চেতনার উপরে ভরসা করছেন চিকিৎসকেরা। প্রকৃত আক্রান্তের খোঁজ পেতে যাতে সমস্যা না-হয়, তার জন্য করোনা পরীক্ষাকেই পাখির চোখ করেছে প্রশাসন। শহর থেকে জেলা, কোথাও যাতে এই বিষয়ে কোনও খামতি না-থাকে, তার জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কিন্তু দুর্গাপুজোয় নৈশ বিধিনিষেধের শৈথিল্যের জেরে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের পরে কালী ও ছটপুজো উপলক্ষে সেই বিধির মুঠি আলগা করায় বিপদের মেঘ আরও কত গাঢ় হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে।
দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ঘোরাফেরা করছিল সাতশোর ঘরে। তার পরে লাফিয়ে সেটি সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে হাজারের দোরগোড়ায়। গত কয়েক দিন প্রাত্যহিক আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে ৯০০-র ঘরে। শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ৯৮২ জন। কলকাতায় আক্রান্ত সর্বাধিক— ২৭৩। উত্তর ২৪ পরগনায় ১৬১, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৮৩, হাওড়ায় ৭৩, হুগলিতে ৭৯ জন সংক্রমিত।
এক সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘‘ফের সংক্রমণ বৃদ্ধির মূল কারণই হল পুজোর অনিয়ন্ত্রিত ভিড়। এক শ্রেণির মানুষ এখন তার ফল ভোগ করছেন। এ বার মানুষ অন্তত কিছুটা সচেতন হবেন বলেই আশা করছি। বাকিটা সময়ের উপরে নির্ভর করছে।’’
শহরের এক সরকারি করোনা হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকের আশা, দুর্গাপুজোয় মাতামাতির ফল বুঝে সাধারণ মানুষ এ বার নিজেদের গতিবিধিতে যদি কিছুটা লাগাম দেন, তা হলে হয়তো সংক্রমণ আর বৃদ্ধি পাবে না। কিন্তু উন্মত্ত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করা কতটা সম্ভব, সেটাই ভাবাচ্ছে। কারণ, কিছু মানুষ ভ্রান্ত আত্মবিশ্বাসে ভর করেই ঘুরে বেড়ান। যেমন দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে ঘুরেছেন। কালী বা ছটপুজোয় একই রকম ছাড়পত্র পেয়ে সেই উচ্ছ্বাস আরও কতটা বাড়ে, সেটাই দেখার। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘কিছু মানুষের উন্মত্ত আচরণের ফলে হয়তো সংক্রমণ বাড়বে। কিন্তু তাঁদের বেশির ভাগই থাকবেন উপসর্গহীন। যা শীতের মরসুমে বয়স্ক, শিশুদের বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। কারণ উপসর্গহীন হলে যেমন পরীক্ষার প্রশ্ন নেই, তেমনই মৃদু উপসর্গকে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণ বলেই চালিয়ে নেবেন ওই সমস্ত লোকজন।’’
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার দাবি, রাজ্যে দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। পুজোর মরসুমে যেটি ২০ হাজারের নীচে নেমে গিয়েছিল, সেটিই এখন ৪০ হাজারের বেশি। শুক্রবার রাজ্যে ৪৯ হাজার জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। গতি বাড়ানো হচ্ছে টিকা প্রদানেও। এ দিন রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত রাজ্যে টিকা পেয়েছেন সাত লক্ষ ৬৩ হাজার জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy