E-Paper

ক্রমশ কি মহামারির আকার নিচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাস? মৃত্যু আরও চার শিশুর, জোর টেলিমেডিসিনে

চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা, বারবার আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেই ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত হয়। কারণ, ওই ধরনের আবহাওয়া যে কোনও ভাইরাসের টিকে থাকায় পক্ষে আদর্শ।

picture of child death.

মৃত সকলেরই বয়স দু’বছরের কম। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৩ ০৫:০৫
Share
Save

মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, চিন্তার কারণ নেই। পর্যাপ্ত পরিকাঠামো এবং যথেষ্ট সংখ্যক ডাক্তার তৈরি। কিন্তু জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে অসুখে শিশুমৃত্যু অব্যাহত।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত শুধু বি সি রায় শিশু হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। সকলেরই বয়স দু’বছরের কম।

অ্যাডিনো-সহ নানা ভাইরাসের আক্রমণে শহরের প্রায় সব হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের শয্যা ভর্তি। বর্হিবিভাগেও প্রতি দিন বহু রোগীর ভিড়। কলকাতার হাসপাতালের উপর থেকে চাপ কমাতে এবং জেলাস্তরেই রোগীদের স্থিতিশীল করার চেষ্টা করতে এ বার টেলি-মেডিসিনের উপরে জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। আশার আলো দেখাচ্ছে গরম পড়তে শুরু করাও। মনে করা হচ্ছে, তাতে ভাইরাসের দাপট কমবে।

গত বছর চালু হওয়া টেলিমেডিসিন প্রকল্প ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’কে আরও মজবুত করতে এ দিন নির্দেশকা জারি করা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, শিশুদের জ্বর-সর্দি-কাশির চিকিৎসাতেও ভাল ভাবে ব্যবহার করতে হবে একে। যাতে জেলার প্রত্যন্ত জায়গার হাসপাতালও তাদের কাছে ভর্তি থাকা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুরোগীর চিকিৎসায় বি সি রায় বা অন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারে।

এক স্বাস্থ্য কর্তার কথায়, ‘‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনে আক্রান্ত শিশুকে বড় হাসপাতালে নিয়ে আসতে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যায়। তাতে রোগী আরও সঙ্কটজনক হয়েছে। সেখানে টেলিমেডিসিন পরিষেবাকে আরও ভাল ভাবে ব্যবহার করলে, সুফল মিলবে।’’ অল বেঙ্গল প্যারামেডিকস অ্যান্ড মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টস সংগঠনের সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘টেলিমেডিসিন প্রকল্পে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ ভাল পরিষেবা পাচ্ছেন। শিশুদের জ্বর, শ্বাসকষ্টের চিকিৎসাতেও তা গুরুত্বপূর্ণ হবে।’’চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ক্রমশ গরম বাড়তে থাকায় আশার আলো দেখা যাচ্ছে। শেষ কয়েক সপ্তাহে প্রতিটি স্তরের সরকারি হাসপাতালের বর্হিবিভাগে রোগীর চাপ মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। বিগত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় বর্হিবিভাগে সেই রোগীর সংখ্যা খুব অল্প হলেও, কমতে শুরু করেছে। তাঁরা এ-ও জানাচ্ছেন যে, ভর্তির জন্য ভিড় আদের মতো উপচে পড়ছে না। শয্যা ভর্তি, কিন্তু নতুন করে ভর্তির সংখ্যা কমছে। আর এই গরম বৃদ্ধিতেই অন্যান্য ভাইরাসের মত অ্যাডিনোভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত কমবে বলেই দাবি স্বাস্থ্যকর্তাদের। তাই আরও সপ্তাহ দেড়-দুই অপেক্ষার কথা বলছেন তাঁরা। কর্তাদের দাবি, ওই সময়ের মধ্যে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেলেই শিশুরোগ বিভাগে এবং পেডিয়াট্রিক ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে রোগীর সংখ্যা কমবে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘‘প্রতিদিনই পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।’’ সরকারি হাসপাতালের মতো তাঁদেরও রোগীর সংখ্যা কমছে বলে জানাচ্ছেন শহরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা, বারবার আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেই ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত হয়। কারণ, ওই ধরনের আবহাওয়া যে কোনও ভাইরাসের টিকে থাকায় পক্ষে আদর্শ। তবে পুরোপুরি গরম পড়লে আর আবহাওয়া বারবার পরিবর্তন হবে না। তাতে ভাইরাসের দাপাদাপি কমবে। যদিও এ বার কেন ভাইরাসজনিত অসুখে এতটা বাড়াবাড়ি হল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, করোনার কারণে চাপা পরেছিল অ্যাডিনো-সহ নানা ভাইরাস। এ বছর করোনার প্রকোপ কমতেই সমস্যা শুরু করেছে তারা।

বি সি রায় হাসপাতালে মৃত চারজনের মধ্যে দু’জন অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত ছিল বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মৃত্যু হয় শাসনের বাসিন্দা ১১ মাসের এক শিশুকন্যার। এ দিন সকালে বারাসতের বাসিন্দা ১০ মাসের শিশুকন্যা, দুপুরে হাবড়ার এক বছর তিন মাসের একরত্তি এবং বারাসতের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যে প্রতিদিন এ ভাবে শিশুমৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন স্বাস্থ্য ভবনে কয়েক দফা দাবিতে ডেপুটেশন জমা দেন মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের প্রতিনিধিরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Adenovirus Death Children

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।