আগামী সপ্তাহে কলকাতা-সহ দক্ষিণের কিছু জেলায় হতে পারে ভারী বৃষ্টি। — ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় কি তবে ধেয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গের দিকে? রবিবার ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি) তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছে। জানিয়েছে, ২৩ অক্টোবর, বুধবার বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়। তার প্রভাবে ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর ওড়িশা উপকূলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। কলকাতা-সহ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরও এই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়ে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগরের উপর দমকা হাওয়ার গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার।
বিশেষ বুলেটিন প্রকাশ করে রবিবার মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরের উপর থাকা ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপ অঞ্চলে পরিণত হতে পারে। এই নিম্নচাপ অঞ্চল সাগরের উপর দিয়ে ক্রমেই পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোতে পারে। ২২ অক্টোবর, মঙ্গলবার সকালে সেই নিম্নচাপ অঞ্চল শক্তিবৃদ্ধি করে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পরের দিন, ২৩ অক্টোবর, বুধবার পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর সেই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তার নাম হবে ‘ডানা’। কাতার এই নাম রেখেছে।
সাগরের উপর দিয়ে সেই ঘূর্ণিঝড় উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোতে পারে। ২৪ অক্টোবর সকালে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে পৌঁছতে পারে ঘূর্ণিঝড়। এর প্রভাবে ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর ওড়িশা উপকূলে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। ২১ অক্টোবর, সোমবারের মধ্যে মৎস্যজীবীদের উপকূলে ফিরে আসার কথা বলেছে তারা।
এই নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গেও। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার সাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়। তার প্রভাবে ওই দিন দক্ষিণের সব জেলায় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। তার মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি (৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার)-এর পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। ওই চার জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার উপকূলে পৌঁছতে পারে ঘূর্ণিঝড়। তার প্রভাবে দক্ষিণের সব জেলায় ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ওই দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং দুই মেদিনীপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সেখানে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাকি জেলায় সতর্কতা জারি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হলেও চলবে ঝড়বৃষ্টি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী শুক্র এবং শনিবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় ঝড়বৃষ্টি হবে। তবে কোথাও সতর্কতা জারি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ২৪ অক্টোবর জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর, মালদহেও বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে জেলার সব জায়গায় বৃষ্টি হবে না। ওই দিন উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড় এবং নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল থাকতে পারে সমুদ্র। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২৩ অক্টোবর, বুধবার পর্যন্ত আন্দামান সাগরের উপর দমকা হাওয়ার গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরেও ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে পারে দমকা হাওয়ার গতি। ২২ অক্টোবর সেই গতিবেগ হতে পারে ৬০ কিলোমিটার। ২৩ অক্টোবর উত্তর বঙ্গোপসাগরের উপর দমকা হাওয়ার সেই গতিবেগ বৃদ্ধি পেয়ে হতে পারে ৮৫ কিলোমিটার। ওই দিনই বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়। তার পরের দিন উপকূলে পৌঁছতে পারে ঘূর্ণিঝড়। সে সময় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপর দমকা হাওয়ার গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার। ঝোড়ো হাওয়ার গতি থাকতে পারে ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে দমকা হাওয়ার গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy