সে-দিন দুপুরেই হাই কোর্টে মামলা করেন অর্জুনের মা। এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সেনা হাসপাতালে ময়না-তদন্তের আর্জি জানান অর্জুনের মায়ের আইনজীবী।
ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, কিন্তু কাশীপুরে বিজেপি কর্মী অর্জুন চৌরাসিয়ার রহস্যমৃত্যু নিয়ে তাঁর নিকটজনেরা সোমবার পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। ‘সিট’ বা বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত করলেও মৃতের পরিবারের তরফে কোনও সহযোগিতাও মেলেনি বলে পুলিশি সূত্রের খবর। আদালতের নির্দেশে শনিবার কলকাতার সেনা হাসপাতালে ময়না-তদন্ত হয়েছে এবং তার রিপোর্ট আজ, মঙ্গলবার হাই কোর্টে জমা পড়তে পারে। মৃত্যুর কারণ জানতে মৃতের পরিবার এবং কলকাতা পুলিশ আপাতত ওই রিপোর্টের দিকেই তাকিয়ে আছে।
স্বজনেরা থানায় অভিযোগ দায়ের না-করলেও এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে সিট গড়েছে লালবাজার। তারাই আপাতত তদন্ত চালাচ্ছে। পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন তদন্তকারীদের একটি দল অর্জুনের বাড়িতে তাঁর দুই দাদাকে নোটিস দিতে গিয়েছিল। কিন্তু মৃতের দাদারা সেই নোটিস নিতে অস্বীকার করেন। পুলিশের দাবি, ‘সিআরপিসি’ বা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী তদন্তে সহযোগিতা চেয়ে ওই নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কারণ, দেহ উদ্ধারের পরে চার দিন কেটে গেলেও অর্জুনের পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেনি পুলিশ। অর্জুনের পরিবার অবশ্য পুলিশকে জানিয়েছে, মামলাটি হাই কোর্টে বিচারাধীন থাকায় তারা নোটিস গ্রহণ করবে না।
পুলিশি সূত্রের খবর, অর্জুনের দেহ উদ্ধারের সময় তাঁর প্যান্টের পকেটে মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছিল। সেটি পাসওয়ার্ড দিয়ে খুলতে হয়। পাসওয়ার্ড চেয়ে অর্জুনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনও সদর্থক প্রত্যুত্তর পায়নি বলে জানায় পুলিশ। ইতিমধ্যে পুলিশ অবশ্য অর্জুনের কয়েক জন প্রতিবেশী ও বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ৫ মে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে অর্জুন তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। পুলিশে অভিযোগ না-জানালেও অর্জুনের পরিবারের তরফে বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির সামনে একটি ধূসর রঙের গাড়ির উপস্থিতির কথা জানানো হয়েছিল। সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় একটি অনুষ্ঠান বাড়ি রয়েছে। ওই গাড়িটি সেখানেই এসেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে এলাকার বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে চিৎপুর থানা এলাকার কাশীপুর রেল কলোনির একটি পরিত্যক্ত ঘরে অর্জুনের (২৬) ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। তার পরেই বিষয়টিতে রাজনৈতিক রং লেগেছে। সে-দিনেই ঘটনাস্থলে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজনৈতিক হিংসা থেকেই অর্জুনকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সে-দিন দুপুরেই হাই কোর্টে মামলা করেন অর্জুনের মা। এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সেনা হাসপাতালে ময়না-তদন্তের আর্জি জানান অর্জুনের মায়ের আইনজীবী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy