Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Train accident

পরিজন কই? স্পেশ্যাল ট্রেনে ঝাঁকে ঝাঁকে শুধু নিত্যযাত্রীরাই

শনিবার বিকেল ৪টেয় যে স্পেশ্যাল মেমু ট্রেন বালেশ্বরের দিকে রওনা দিল, তাতে ওঠা সকল যাত্রীরই গন্তব্য ছিল মাঝের বিভিন্ন স্টেশন।

Daily passengers rushing to ride a train

হুড়মুড়িয়ে: দুর্ঘটনাগ্রস্তদের পরিজনদের জন্য বিশেষ ট্রেনে উঠে পড়ছেন নিত্যযাত্রীরা। শনিবার, হাওড়া স্টেশনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৩ ০৯:৫৪
Share: Save:

প্ল্যাটফর্মে ঢুকছে হাওড়া-বালেশ্বর মেমু প্যাসেঞ্জার স্পেশ্যাল এক্সপ্রেস। চলন্ত অবস্থাতেই হুড়মুড়িয়ে, লাফিয়ে তাতে চড়ে বসলেন অসংখ্য যাত্রী। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতে না দাঁড়াতে তাতে উঠলেন আরও অনেকে। যদিও কিছু ক্ষণ আগেই হাওড়া স্টেশনে ঘোষণা হয়েছে যে, বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত, মৃত ও নিখোঁজ যাত্রীদের পরিজনেরা ওই ট্রেনে বালেশ্বর যেতে পারবেন। কিন্তু কোথায় তাঁরা?

শনিবার বিকেল ৪টেয় যে স্পেশ্যাল মেমু ট্রেন বালেশ্বরের দিকে রওনা দিল, তাতে ওঠা সকল যাত্রীরই গন্তব্য ছিল মাঝের বিভিন্ন স্টেশন। কেউ তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছতে পারবেন বলে, কেউ আবার বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠার সুযোগ হিসাবে সেটিকে কাজে লাগালেন। এ দিন দুপুর ৩টে থেকে হাওড়াস্টেশনে ওই স্পেশ্যাল ট্রেনের কথা ঘোষণা হতে থাকে। জানানো হয়, ট্রেনটি সাঁতরাগাছি, উলুবেড়িয়া, বাগনান, মেচেদা, পাঁশকুড়া, বালিচক, খড়্গপুর, হিজলি, বেলদা, জলেশ্বর স্টেশনে থামবে। তাতেই লেগে যায় হুড়োহুড়ি। ওল্ড কমপ্লেক্স থেকে সকলে কার্যত দৌড় লাগান নিউ কমপ্লেক্সের দিকে। লক্ষ্য, ওই ট্রেনে আসন দখল করা।

হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্সের ২২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো মেমু স্পেশ্যাল এক্সপ্রেসের জানলার পাশে বসা বা দরজার সামনে দাঁড়ানো যাত্রীদের কেউই জানালেন না, তাঁর কোনও পরিজন ওই দুর্ঘটনায় পড়েছেন। বরং সকলেই হাসিমুখে বাড়ি ফেরা বা কর্মস্থলে যাওয়ার কথা বললেন। যেমন, জলেশ্বরের বাসিন্দা মাফিজুলের কথায়, ‘‘ট্রেন তো ওই স্টেশনে থামবে, তাই উঠে পড়েছি। রেল তো বারণ করেনি।’’ কিন্তু এটা তো দুর্ঘটনায় নিহত বা আহতদের পরিজনদের জন্য দেওয়া ট্রেন! তা শুনে বাগনানের মিঠুন রায়ের উত্তর, ‘‘তাতে কী হয়েছে, আমরা যে উঠতেই পারব না এমন কথা তো বলেনি!’’

স্টেশনে দাঁড়ানো রেলরক্ষী বাহিনীর জওয়ানেরা অবশ্য বিষয়টি দেখে হেসেছেন। কেউ কেউ আবার মন্তব্য করেছেন, ‘‘বিনা পয়সায় যাওয়ার সুযোগ পেলে কেউ কী ছাড়েন!’’ প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষারত অনেক যাত্রীর অবশ্য মত, ট্রেনে ওঠার আগে যাত্রীদের পরিচয় যাচাই করা উচিত ছিল রেল কর্তৃপক্ষের। অথবা দুর্ঘটনাগ্রস্তদের পরিজন না হলে অন্যদের ওই ট্রেনে উঠতে দেওয়া হবে না, এমন নিয়ম করা উচিত ছিল। জানা গিয়েছে, হাওড়া ছাড়ার পর থেকে যে যে স্টেশনে ওই ট্রেন দাঁড়িয়েছে, সেখানেই ঝাঁকে ঝাঁকে যাত্রী ট্রেনে চেপেছেন। প্রত্যেকেই আর পাঁচটা লোকাল ট্রেনের মতোই ওই হাওড়া-বালেশ্বর মেমু প্যাসেঞ্জার স্পেশ্যাল এক্সপ্রেসকে ব্যবহার করলেন।

ভিড়ে ঠাসা স্পেশ্যাল ট্রেনে শুধু একটাই প্রশ্ন থেকে গেল— ‘পরিজন কত জন’?

অন্য বিষয়গুলি:

Train accident Howrah Station Daily Passenger
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy