প্রশাসনিক বা দলীয় কর্মসূচিতে জয়ধ্বনি শুনতে তিনি অভ্যস্ত। কিন্তু গত প্রায় ১০ দিন ধরে সেই সব বন্ধ। পায়ের চোট পেয়ে এই পঞ্চায়েত ভোটের আগে গৃহবন্দি হতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার কালীঘাটের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন। হাসপাতাল চত্বরে হঠাৎ তাঁর কানে এল মিহি কণ্ঠে একটি জয়ধ্বনি— ‘‘দিদি জিন্দাবাদ’’।
মমতা তখন ডেক্সা স্ক্যান করিয়ে বেরোচ্ছেন এসএসকেএমের ইউসিএম ভবন থেকে। পায়ের চোট না সারায় সামান্য খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। ইউসিএম ভবনের ফটকের হাত খানেক দূরেই অপেক্ষা করছিল মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। মমতা ধীর পায়ে সে দিকেই এগোচ্ছিলেন। হঠাৎ উল্টো দিক থেকে ভেসে এল শিশুকণ্ঠে ‘জিন্দাবাদ’ ধ্বনি! মমতা থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন।

দিদির নামে জয়ধ্বনি দিয়েছিল এই শিশুটিই। নিজস্ব চিত্র।
এসএসকেএমে বাবার কোলে চেপে এসেছিল সিফা হায়াত। হাওড়ার বাউড়িয়ায় বাড়ি তার। মা অসুস্থ। সন্তানসম্ভবাও। তাঁকে দেখাতেই হাসপাতালে আসা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ছোট্ট সিফা বাবার সঙ্গে দাঁড়িয়েছিল ইউসিএম ভবনের গেটের কাছে। সেই সময়েই মমতার গাড়ি এসে দাঁড়ায় সেখানে। মমতাকে দেখে চিনতে পারে সিফা। বা হয়তো তার বাবা তাকে মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলেছিলেন। ফেরার সময় মমতা ইউসিএম ভবন থেকে বেরোতেই ‘‘দিদি জিন্দাবাদ’’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে সে।
মমতার কানে সেই কণ্ঠস্বর পৌঁছতেই তিনি দাঁড়িয়ে পড়েন। সামান্য খুঁড়িয়ে হেঁটে এগিয়ে আসেন শিশুটির কাছে। জানতে চান, ‘‘নাম কী?’’ সিফা তার নাম জানায়। মমতা জানতে চান, সে হাসপাতালে কেন এসেছে। এর পরে ‘দিদি’ তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে মায়ের অসুস্থতার কথা জানায় সিফা। মমতা তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন এবং তার পর আবার ধীর পায়ে এগিয়ে যান গাড়ির দিকে।