মৌসুমী কয়ালের (ডান দিকে) বাড়িতে সিআইডি আধিকারিকরা। —নিজস্ব চিত্র।
কামদুনি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের রায় ঘোষণার পর অসন্তুষ্ট নির্যাতিতার পরিবার, তাঁর দুই বন্ধু মৌসুমী কয়াল এবং টুম্পা কয়াল। তাঁরা তখনই জানিয়ে দেন, হাই কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। রায় মেনে নেয়নি রাজ্য সরকারও। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের হয়ে গোটা বিষয়টি দেখছে সিআইডি। ডিআইজি স্তরের এক অফিসারের অধীনে একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। সেই দলের দুই আধিকারিক শুক্রবারই মৌসুমীর বাড়িতে এসে দেখা করেন তাঁর সঙ্গে।
সিআইডি সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ তাদের দুই আধিকারিক এবং রাজারহাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী কামদুনিকাণ্ডের প্রতিবাদী মুখ তথা নির্যাতিতার বন্ধু মৌসুমীর বাড়িতে যান তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। আধিকারিকরা বেরিয়ে যেতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মৌসুমী। চোখের জল মুছতে মুছতেই তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা বলতেই প্রশাসনের তরফ থেকে সিআইডির লোক পাঠিয়ে দেওয়া হল। দশ বছর আগে সিআইডি যদি আসত তা হলে অভিযুক্তরা এ ভাবে ছাড়া পেয়ে যেত না।”
মৌসুমীর বাড়িতে নির্যাতিতার দাদাকেও ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বহু ক্ষণ সিআইডির আধিকারিকরা বসে থাকলেও তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। যদিও মৌসুমীর বাড়িতে কী নিয়ে কথা হল সেই নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলতে চাননি সিআইডির আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরেই ঘোষণা হয় কামদুনি ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় রায়। ২০১৩ সালের ওই নৃশংস ঘটনায় এর আগে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেই সাজা কমিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, দোষী সাব্যস্ত হওয়া সইফুল আলি এবং আনসার আলিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হল। এ ছাড়া আর এক ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আমিন আলিকে বেকসুর খালাস করে হাই কোর্ট। নিম্ন আদালত আমৃত্যু জেলের সাজা দিয়েছিল আরও তিন দোষী সাব্যস্ত ইমানুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম এবং ভোলানাথ নস্করকে। ১০ বছর কারাবাস হয়ে গিয়েছে, এই যুক্তিতে তাঁদেরও সাজা মকুব করে আদালত।
এই রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে ধর্ষিতার দুই বন্ধু এবং পরিবার জানিয়ে দেয়, তারা হাই কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। মৌসুমী এবং টুম্পা জানিয়ে দেন, দিল্লির নির্ভয়ার আইনজীবীর সাহায্যে আবার লড়বেন তাঁর বন্ধুর সঙ্গে হওয়া অবিচারের মামলা। পাশাপাশি, কামদুনি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করতে চলেছে রাজ্য সরকারও। এ ব্যাপারে দেশের শীর্ষ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের হয়ে গোটা বিষয়টি দেখছে সিআইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy