—প্রতীকী চিত্র।
কলেজ থেকে ফেরার পথে গ্রামের মুখে সুনসান রাস্তায় ঘোর বিপদে জীবন শেষ হয়ে গিয়েছিল কামদুনির তরুণীর। পাচার চক্রের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়া ডায়মন্ড হারবার, বারুইপুর, সুন্দরবন এলাকার কয়েক জন কিশোরী জানাল, পাচারের ধাক্কা সামলে বাড়ি ফিরলেও সেই চক্রের হুমকির জেরে তাদের পক্ষে স্কুলে যাওয়াই এখন মুশকিল। শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়ের পরামর্শ, এখনই পুলিশে সব কিছু জানিয়ে অভিযোগ নথিবদ্ধ করতে হবে। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুরে একটি গণশুনানিতে ওই সব মেয়ে এবং তাদের পরিজনের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।
বাল্যবিবাহের মতো সমস্যার মোকাবিলায় রাজ্যে জেলাগুলিতে ঘুরে তিন মাস অন্তর এমন শুনানিতে শামিল হবে কমিশন। সুদেষ্ণার কথায়, ‘‘অতিমারির সময়ে সচেতনতা অভিযান ধাক্কা খেয়েছিল। এখন তাতে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’ ২০১৯-এ আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে বাল্যবিবাহ নিয়ে গণশুনানির বন্দোবস্ত করেছিল কমিশন। গত এক দশকে বাল্যবিবাহ রুখতে নানা পদক্ষেপ করেছে রাজ্য। তা গোটা দেশে সাড়া ফেললেও বাংলায় বাল্যবিবাহ এখনও উদ্বেগজনক।
জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার সাম্প্রতিক রিপোর্ট (২০১৯-২০) অনুযায়ী, এ রাজ্যে ৪২ শতাংশ মেয়ের ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয়। দেশের শিশু অপহরণ ও পাচারের ৬৯ শতাংশের শরিকও এই রাজ্য। ইউনিসেফ বা সরকারি কর্তারা দেখছেন, নানা চেষ্টা সত্ত্বেও বাল্য বিবাহের পরিস্থিতি আদৌ পাল্টায়নি। অনেকেই মনে করছেন, অতিমারির সময়ে মানুষের দারিদ্র তথা বিপন্নতায় বাল্যবিবাহের প্রবণতা উল্টে বেড়েছে। এই অবস্থা বদলাতে প্রধানত বাল্যবিবাহ কমানোর কথা মাথায় রেখেই তেড়েফুঁড়ে গণশুনানি শুরু হয়েছে জেলায় জেলায়।
এই শুনানিতে শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের সঙ্গে স্থানীয় স্তরে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই থাকছে। যেমন জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, পুলিশ জেলাগুলির আধিকারিক থেকে শুরু করে শিশু কল্যাণ
সমিতি, চাইল্ডলাইন, কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এ দিন ছিলেন। স্থানীয়
সূত্রের খবর, বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত শুনানিতে
নানা সমস্যা উঠে আসে। নাবালক মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়ার চাপজনিত নানা সমস্যায় কী করণীয় জানতে চান অনেকেই। পকসো মামলায় ক্ষতিপূরণের জন্য ভুক্তভোগীদের পরিবারকে জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ (ডিএলএসএ)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। বাল্যবিবাহের খবর এলেই তা প্রশাসনকে জানানো নাগরিক কর্তব্য বলে এ দিন জোর দেয় কমিশন। সুদেষ্ণা বলেন, ‘‘নির্ভয়ে চাইল্ড লাইনের ১০৯৮ অথবা কমিশনের হেল্পলাইন ৯৮৩৬৩০০৩০০ নম্বরে বাল্যবিবাহের খবর দিন। তবে গ্রামের সঙ্গে ডাকঘর, থানা, জেলার নাম লিখতে
ভুলবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy