শনিবার ধর্মতলার মঞ্চে অনশনকারীদের সঙ্গে কথা বলছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।
জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘটের হুঁশিয়ারির পর দিনই ধর্মতলার অনশনমঞ্চে পৌঁছে গেলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনশনকারীদের ফোনে কথাও বলিয়ে দেন। পরে ফোনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা শোনানো হয় অনশনমঞ্চে। অনশন আন্দোলন থেকে সরে আসার বার্তা দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘অনশন তুলতে অনুরোধ করছি। আলোচনায় বোসো। আমরা আমাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করছি। প্রায় সব ক’টিই দাবি পূরণ হয়েছে। তিন-চার মাস সময় দাও। হাসপাতালগুলিতে নির্বাচন করাব। দয়া করে অনশন প্রত্যাহার করো। কাজে যোগ দাও।’’ তবে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণ ছাড়া আন্দোলনকারীদের সব দাবির সঙ্গেই সহমত তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসার আর্জি জানান আন্দোলনকারীরা। এর পরেই আগামী সোমবার বিকেল ৫টায় নবান্নে বৈঠকের সময় দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে পাশাপাশি এ-ও জানিয়ে দেন, আন্দোলনকারীদের তরফে ১০ জনের বেশি প্রতিনিধি যেন না যান নবান্নে।
মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দেন, তিনি মানবিকতার পক্ষে। তিনিও বিচার চান। কিন্তু হাসপাতালে যদি সাধারণ মানুষ পরিষেবা না পান, তা হলে তাঁরা কোথায় যাবেন, সেই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘আদালতে মামলা চলছে। বিচার মিলবে। আমি আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করব। হাসপাতালের উন্নয়নে ১১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সরকারি হাসপাতাল পরিষেবা না দিলে মানুষ কোথায় যাবে? দিদি হিসেবে বলছি, আপনাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হবে। আপনারা অনশন তুলে দয়া করে কাজে যোগ দিন।’’
শুক্রবার সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়ে দিয়েছেন, সোমবার পর্যন্ত সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। ওই সময়ের মধ্যে সাড়া না মিললে মঙ্গলবার হাসপাতালে হাসপাতালে সর্বাত্মক ধর্মঘট হবে। সেই ধর্মঘট পালন করবেন সিনিয়র এবং জুনিয়র ডাক্তারেরা। ওই হুঁশিয়ারির ২৪ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই অনশনমঞ্চে গেলেন
রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। মুখ্যসচিবের সঙ্গে রয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীও। রয়েছেন কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, ধর্মতলার মঞ্চে গিয়ে অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যসচিব। পাশাপাশি, আন্দোলনকারীদের দাবিদাওয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে। অনশনকারীদের সঙ্গে কথা বলার সময় মুখ্যসচিবকে কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলতেও দেখা গিয়েছে। পরে জানা গেল, ফোনের অপর প্রান্তে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
এর আগেও মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন আন্দোলনকারীরা। পুজোর আগে সেই বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু তা ‘নিষ্ফলা’ হয়েছে বলেই দাবি আন্দোলনকারীদের। পুজোর পর আন্দোলন তীব্রতর করতে চেয়ে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ডাক্তারেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy