—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
রাজ্যে মিড-ডে মিল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে। এ বার সেই কেন্দ্রীয় সরকারই একটি বৈঠকে রাজ্যের মিড-ডে মিল প্রকল্পের প্রশংসা করল। এ কথা সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তিনি জানিয়েছেন, ‘কেন্দ্রীয় দলের অপপ্রচার এবং বিরোধী কুৎসা’ আরও এক বার ভুল প্রমাণিত হল। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, সর্বশিক্ষা অভিযানের খাতে রাজ্যকে ৪৮৫ কোটি টাকা পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। ‘রুটিন’ মেনেই পাঠানো হচ্ছে টাকা।
শুক্রবার ব্রাত্য এক্সে লিখেছেন, ‘‘বৃহস্পতিবার দিল্লিতে কেন্দ্র-রাজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মিড-ডে মিল প্রকল্প এবং তা চালানোর মডেলের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।’’ এর পরেই ব্রাত্য জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য সরকারের উন্নয়নের মডেল আরও এক বার প্রমাণিত হল। গত নভেম্বরে বিজেপি দাবি করেছিল, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান রাজ্যে মিড ডে মিলে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে ‘সিবিআই তদন্তের সুপারিশ’ করেছেন। তা নিয়ে চলেছিল চাপানউতর। এ বার সেই প্রসঙ্গ তুলে সরব হয়েছেন ব্রাত্য। এক্সে লিখেছেন, ‘‘কিছু দিন আগের কেন্দ্রীয় দলের অপপ্রচার এবং বিরোধী কুৎসা আবার এক বার ভুল প্রমাণিত হল! অশোকস্তম্ভের নীচের লেখাটাই আবার প্রমাণিত হল। সত্যমেব জয়তে।’’
গত বছরের শেষে কৃষ্ণনগরে একটি সভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন, রাজ্যে মিড-ডে মিল নিয়ে ‘দুর্নীতি’-র অভিযোগে সিবিআই তদন্ত হচ্ছে। পরে সেই দাবি মেনে নেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘মিড ডে মিল নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর অনিয়ম দেখা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিদর্শক দল কয়েক বার এসেছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়েছে।’’ সে কারণে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করে চিঠি লিখেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে পাল্টা সরব হয়েছিলেন ব্রাত্য। জানিয়েছিলেন, যে কোনও ধরনের তদন্তকেই স্বাগত জানানো হচ্ছে।
গত বছরের এপ্রিলে মিড-ডে মিল ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। তারা একটি রিপোর্ট পেশ করে। সেখানে দাবি করা হয়, রাজ্য সরকার ১৬ কোটি মিড-ডে মিলের ভুয়ো হিসাব পেশ করেছে। এর ফলে, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, উল্লিখিত সময়ের হিসাবে রাজ্য ১৬ কোটি অতিরিক্ত মিড-ডে মিল দেখিয়েছে। নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে ৭০ শতাংশ কম খাবার পড়ুয়াদের সরবরাহ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।
এই রাজ্যে মিড-ডে মিল প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে বলে দাবি করে রাজ্য বিজেপি। অভিযোগ করে, বগটুইকাণ্ড-সহ বিভিন্ন ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের পরিবর্তে মিড-ডে মিলের টাকা খরচ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পোষণ প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে একটি প্যানেল তৈরি করা হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে শিক্ষা মন্ত্রকের জয়েন্ট রিভিউ প্যানেল একটি রিপোর্ট তৈরি করে। গত বছর এপ্রিলে সেই রিপোর্ট জমা পড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। তাতেই এই দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। বলা হয়, ২০২২ সালের প্রথম দুই অর্থবর্ষে রাজ্যের তরফে ১৪০ কোটি ২৫ লক্ষ মিড-ডে মিলের রিপোর্ট পেশ করা হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের রিপোর্টে ১২৪ কোটি ২২ লক্ষ মিড-ডে মিলের উল্লেখ রয়েছে। এই ফারাকের মধ্যেই দুর্নীতি রয়েছে বলে দাবি ওই রিপোর্টে।
যদিও বৃহস্পতিবার কেন্দ্র এবং রাজ্যের সচিবদের বৈঠকে অন্য কথাই বলা হয়েছে। সেখানে রাজ্যের মিড ডে মিল প্রকল্পের কেন্দ্র প্রশংসা করেছে বলে সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন ব্রাত্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy