—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চিনের সঙ্গে সম্পর্কের ‘শৈত্য’ বা সাম্প্রতিক বাংলাদেশের পরিস্থিতি—জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে উত্তরবঙ্গের ‘চিকেন’স নেক’ করিডরের গুরুত্ব নিয়ে একমত কেন্দ্র ও রাজ্য। ফলে সেই পরিকাঠামোর মজবুত পুনর্গঠন জরুরি। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রক (মর্থ) সূত্রের খবর, ওই প্রকল্প নির্মাণের প্রশ্নে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দিতে কেন্দ্রের ‘শংসাপত্র’ চেয়েছে রাজ্য সরকার। তাতে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্প তৈরিতে দেরি হতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
‘চিকেন’স নেক’ করিডর চিন, ভুটান, বাংলাদেশ এবং নেপালের সীমান্তের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। যে ডোকালামে ভারত-চিনের সেনা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ায় উত্তেজনা চরমে উঠেছিল, সেখান থেকে এই এলাকার দূরত্ব মাত্র ৮২ কিলোমিটার। এমন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জরুরি প্রকল্পে শংসাপত্রের আর্জি নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে।
চিনের সঙ্গে সম্পর্কের ‘শৈত্য’ শুরুর পরেই ২০২২ সালে ‘চিকেন’স নেক’ করিডরের কাজে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। পরে ওই পরিকাঠামোর আওতায় আরও বিপুল বরাদ্দে তিস্তা নদীর উপরে করোনেশন ব্রিজের বিকল্প আর একটি সেতু এবং তার সঙ্গে যুক্ত করে জঙ্গল এলাকার মধ্যে দিয়ে উড়াল পথ (এলিভেটেড করিডর) তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু প্রকল্পটি শিলিগুড়ির ‘বেঙ্গল সাফারি’ জঙ্গল এমনকি, ‘মহানন্দা ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি’-র মধ্যে দিয়ে যাবে। সাধারণত, বনাঞ্চল এলাকায় কোনও প্রকল্পের ক্ষেত্রে বন দফতরের অনুমতি নিতেই হয়। রাজ্যের যুক্তি, এ ক্ষেত্রে বন এবং বন্যপ্রাণ সুরক্ষা সংক্রান্ত আইনি ছাড়পত্র দরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে শংসাপত্র দিয়ে জানাতে হবে, জাতীয় গুরুত্ব এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটির গুরুত্ব অসীম।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের একাংশ মনে করাচ্ছে, ২০২৩ সালে ‘দ্য ফরেস্ট কনজ়ারভেশন’ সংশোধনী আইন অনুযায়ী, কোনও প্রকল্প এলাকা আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকলে এবং সেখানে জাতীয় সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত পরিকাঠামো তৈরির কাজ করলে তা বনাঞ্চল সংক্রান্ত আইনি বাধ্যবাধকতায় আটকাবে না। তবু রাজ্যের তরফে মর্থকে জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট এলাকাটি এমন গোত্রের মধ্যে পড়ে বলে কেন্দ্রকে শংসাপত্র দিতে জানাতে হবে। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তার কথায়, “সব রকম আইন মেনেই কেন্দ্রের থেকে শংসাপত্র চাওয়া হয়েছে।” অন্য এক কর্তার কথায়, “চলতি আর্থিক বছরের আগে প্রক্রিয়াটি শেষ না হলে সমস্যা বাড়বে। জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্নে তাই দ্রুত পদক্ষেপ করাই সমীচীন।”
‘চিকেন’স নেক’ করিডরের আওতায় ইসলামপুর থেকে শিলিগুড়ি হয়ে কোচবিহার পর্যন্ত মূল রাস্তাটির বেশিরভাগ অংশের কাজ হয়ে গিয়েছে। এ বার শিলিগুড়ির ভিতর দিয়ে বালাসেন সেতু থেকে সেবকের সেনা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ চার থেকে ছয় লেনে সম্প্রসারিত করা এবং তার পরে বন এবং বন্যপ্রাণ বাঁচিয়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার ‘এলিভেটেড’ পথ নির্মাণের কথা রয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে তিস্তার উপরে করোনেশনের বিকল্প সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু হবে। এই তিনটি পরিকাঠামো জাতীয় সড়ক ১০ এবং ১৭-কে সংযুক্ত করবে। যা শিলিগুড়ির সঙ্গে গ্যাংটককে সরাসরি জুড়বে। তাতে সিকিমে নাথু-লা (ভারত-চিন সীমান্ত) পর্যন্ত পৌঁছনো আরও সুগম হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy