Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
CBI in BJP MLA’s house

পুর-নিয়োগ মামলায় এ বার বিজেপি বিধায়কের বাড়িতে গেল সিবিআই, তল্লাশি সকাল থেকেই

পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার এক বিজেপি বিধায়কের নাম জড়াল। সোমবার সকালে রানাঘাটের বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দিলেন কেন্দ্রীয় সংস্থার গোয়েন্দারা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা ও রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ১০:২৬
Share: Save:

পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার এক বিজেপি বিধায়কের নাম জড়াল। সোমবার সকালে রানাঘাটের বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দিলেন কেন্দ্রীয় সংস্থার গোয়েন্দারা। রানাঘাট পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন পার্থসারথি। যদিও কী কারণে তাঁর নাম পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িয়েছে, তা এখনও সরকারি ভাবে জানায়নি সিবিআই। এই মামলায় শুরু থেকেই শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়াতে দেখা গিয়েছে। তা নিয়ে প্রায়ই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলতে দেখা যায় তৃণমূলকে। এই প্রথম কোনও বিজেপি নেতার নাম জড়াল পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়। সে দিক থেকে পার্থসারথির বাড়িতে সিবিআই হানা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

টানা ২৫ বছর রানাঘাটে পুরপ্রধান পদে ছিলেন পার্থসারথি। প্রথম ১৫ বছর কংগ্রেসের হয়ে, পরের ১০ বছর তৃণমূলের। পুরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় শেষ মাস ছয়েক পুর প্রশাসন বোর্ডের সভাপতি পদেও ছিলেন। মাঝে পাঁচ বছর ছিলেন রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক। সে বার বিধানসভা ভোটের দেড় বছর আগে যোগ দেন তৃণমূলে। ২০১১ সালের নির্বাচনে তাঁকেই প্রার্থী করে তৃণমূল। প্রার্থিপদের বাকি সব দাবিদারকে টপকে প্রার্থী হয়ে জিতেও যান পার্থসারথি। পরের বার অবশ্য কংগ্রেসের শঙ্কর সিংহের কাছে হেরে যান। এর পর গত বিধানসভা ভোটের আগে দলের সঙ্গে পার্থসারথির দূরত্ব বাড়ছিল। পরে জল্পনা সত্যি করে ২০২১ সালের ভোটের আগে জানুয়ারি মাসে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, রুদ্রনীল ঘোষ এবং বৈশালী ডালমিয়াদের সঙ্গে চার্টার্ড বিমানে তিনিও দিল্লির পথ ধরেছিলেন। দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে হাতে তুলে নিয়েছিলেন পদ্ম-পতাকা। পরে বিধানসভা ভোটে রানাঘাটেই পার্থসারথিকে প্রার্থী করে বিজেপি। তিনি জিতেও যান। ওই চাটার্ড বিমানে যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে এক মাত্র পার্থসরথিই জেতেন।

রবিবারই এই মামলায় রাজ্যের ন’জন নেতা-মন্ত্রীর ঠিকানা মিলিয়ে মোট ১২টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে সিবিআই। সেই তালিকায় ছিল কলকাতার মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিমের চেতলার বাড়ি। ছিল কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের দু’টি ঠিকানা। এ ছাড়াও যাঁদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চলেছে, তাঁদের কেউ পুরসভার বর্তমান পুরপ্রধান, কেউ আবার প্রাক্তন পুরপ্রধান।

মদনের দক্ষিণেশ্বরের ঠিকানা ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার সাত জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। তার মধ্যে রয়েছে কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, ব্যারাকপুর, দমদম, উত্তর দমদম, টাকি, কামারহাটি। এগুলির মধ্যে কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, উত্তর দমদম, নিউ ব্যারাকপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধানদের বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা। তল্লাশি অভিযান চলেছে হালিশহরের অংশুমান রায়, কাঁচরাপাড়ার সুদমা রায়, উত্তর দমদমের সুবোধ চক্রবর্তী এবং নিউ ব্যারাকপুরের তৃপ্তি মজুমদারের বাড়িতে। ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হালিশহরের পুরপ্রধান ছিলেন তৃণমূল নেতা অংশুমান। দুই পুরপ্রধানের পরিবার সূত্রেই খবর, তাঁদের বাড়ির আলমারি ঘেঁটে কাগজপত্র বার করে দেখেছেন তাঁরা। তৃপ্তির পরিবার সূত্রে দাবি, বাড়ি থেকে বেরোনোয় প্রাক্তন পুরপ্রধানের গাড়ির নম্বরটি নেন সিবিআই কর্তারা। সিবিআইয়ের সাত সদস্যের একটি দল গিয়েছিল টাকি পুরসভার চেয়ারম্যান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে। সিবিআই সূত্রে খবর, সোমনাথের বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথিপত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দমদম পুরসভার পুরপ্রধান হরেন্দ্র সিংহের বাড়িতেও চলে কেন্দ্রীয় সংস্থার অভিযান।

রবিবার নদিয়ার কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অসীম সাহার বাড়িতেও হানা দিয়েছিল সিবিআই। অসীম বর্তমান পুরবোর্ডের সদস্য। সেই সঙ্গে তৃণমূলের নদিয়া উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক। সিবিআই সূত্রে খবর, নিয়োগ মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ এবং অয়ন শীলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অসীমের নাম পাওয়া গিয়েছে। অসীমের নদিয়ার আরও এক নেতা পার্থসারথির নাম জড়াল পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy