Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
CBI and Income Tax Raid

এক বছরে ৪ বিধায়কের বাড়িতে হানা

গরু পাচার থেকে শুরু করে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, পুর নিয়োগ দুর্নীতি, আয় বহির্ভূত সম্পত্তি, রেশন দুর্নীতি থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার দুর্নীতির তদন্তও করছে একাধিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

বাইরনের বাড়িতে আয়কর হানা।

বাইরনের বাড়িতে আয়কর হানা। —নিজস্ব চিত্র।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৩
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং আয়কর দফতর মুর্শিদাবাদে তৎপরতা বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যে বড়ঞার তৃণমূলে বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলবন্দি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তল্লাশি চালিয়েছে। আয়কর দফতর আগেই বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। আর বুধবার দিনভর সাগরদিঘির কংগ্রেসত্যাগী তৃণমূল বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের বাড়িতে ও ব্যবসার জায়গায় আয়করের আধিকারিকেরা তল্লাশি চালিয়েছেন। ২০২৩ সালে এ ভাবে তৃণমূলের ৪ জন বিধায়কের বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তত তৎপরতা বাড়াবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই এখন থেকে মুর্শিদাবাদ জুড়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে এবারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে তৃণমূলের কোন নেতা?

গরু পাচার থেকে শুরু করে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, পুর নিয়োগ দুর্নীতি, আয় বহির্ভূত সম্পত্তি, রেশন দুর্নীতি থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার দুর্নীতির তদন্তও করছে একাধিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর সে সব মামলায় মুর্শিদাবাদের একাধিক তৃণমূল নেতা বিধায়ক সহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপরে নজর রয়েছে সে সব তদন্তকারী সংস্থার। সেই সব তৃণমূল নেতাদের বিষয়ে তারা নানা তথ্য সংগ্রহ করছে।

তবে তৃণমূলের বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপি বিরোধী বলে দেশে কাউকে রাখবে না ভেবেছে। সেই কারণে পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদের বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা পাঠাচ্ছে। এ সব করে বিজেপির কোনও লাভ হবে না। লোকসভা নির্বাচনে ফের এ রাজ্য থেকে বিজেপিকে খালি হাতে ফেরাব।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা সিপিএম আমলে জেল খেটেছি। বিজেপি আমলেও জেল খাটতে রাজি আছি। কিন্তু আমরা বিজেপি নামক ওয়াশিং মেশিনে ঢুকব না।’’

বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা, সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলর, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের অনেকেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। এই দুর্নীতিগ্রস্ত সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলর, পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরের জনপ্রতিনিধিদের বাড়িতে তদন্তকারী সংস্থাগুলির যাওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। ইতিমধ্যে জেলার এক বিধায়ক জেলবন্দি হয়েছেন। আরও কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্তে গিয়েছে। আমরা আশাবাদী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা মুর্শিদাবাদের বাকি দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলের নেতা-নেত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলরদের বাড়িতেও একে একে যাবে।’’

তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির কথায় চলছে বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। অভিযোগ উড়িয়ে শাখারভের দাবি, ‘‘যদি এমনটা তৃণমূলের মনে হয় তা হলে তারা আদালতে যাচ্ছে না কেন? আদালতের দরজা তো খোলা রয়েছে।’’

জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘যদি অনৈতিক ভাবে কারও টাকা থাকে তাঁদের বাড়িতে কেন্দ্রীয় সংস্থা হানা দিতে পারে। সেটা স্বাভাবিক ঘটনা। এই জেলায় চার বিধায়কের বাড়িতে তারা হানা দিয়েছে। নার্সিংহোম, বিড়ির ব্যবসা, চায়ের ব্যবসা, কেমিক্যাল হাব যাতে মসৃণ ভাবে চলে সে জন্য তৃণমূলের কাছে নতিস্বীকার করেছিলেন সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। তাই তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে পতাকা ধরেছিলেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampore Bayron Biswas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy