Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Course

Student Credit Card: কোর্স ফি ৩৬ হাজার, আবেদন দেখে ‘থ’ স্কুল!

রাজ্যে চালু হয়েছে ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’। পশ্চিম মেদিনীপুরে এই প্রকল্পে ইতিমধ্যে অনেক আবেদন এসেছে। যে সব আবেদন দেখে থ হচ্ছে স্কুল, কলেজগুলি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৪:৪৪
Share: Save:

‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ প্রকল্পে শিক্ষাঋণের জন্য আবেদন করেছিল একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। ঋণ চেয়েছিল ৩৬ হাজার টাকা। আবেদনপত্রটি দেখে থ হয়ে গিয়েছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। আবেদনপত্রে ছাত্রটি জানিয়েছিল, স্কুলের কোর্স ফি বাবদ সে ঋণ চাইছে! কিন্তু সরকারি স্কুলের কোর্স ফি তো সামান্যই। এত টাকা নয়। আবেদন অনুমোদন করলে পরবর্তী সময়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হত প্রধান শিক্ষককেই। সব দিক দেখে ওই ছাত্রকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। জানতে চেয়েছিলেন, স্কুলের কোন কোর্সের ফি ৩৬ হাজার টাকা! ওই ছাত্রের সরল স্বীকারোক্তি ছিল, ‘‘আসলে পড়াশোনার সব খরচই ওর মধ্যে ধরে নিয়েছি। স্কুলের ফি, সব টিউশনের ফি, মেসের ফি— সব!’’ ঘটনা গোয়ালতোড়ের একটি স্কুলের। অনেকে মনে করাচ্ছেন প্রকল্পের সূচনার দিনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের জন্য চালু করা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে কোনও রকম জালিয়াতি যেন না হয়।’’

রাজ্যে চালু হয়েছে ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’। প্রকল্পটি শিক্ষাঋণের। পশ্চিম মেদিনীপুরে এই প্রকল্পে ইতিমধ্যে অনেক আবেদন এসেছে। একাংশ আবেদন রয়েছে এমনই। যে সব আবেদন দেখে থ হচ্ছে স্কুল, কলেজগুলি। কম্পিউটার, ল্যাপটপ কেনার জন্য ঋণ চেয়েও আবেদন করছেন একাংশ পড়ুয়া। কেশপুর কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়া মানছেন, ‘‘এমন কিছু আবেদন আসছে, যেগুলি অনুমোদন করা অসম্ভব। কেউ কেউ কোর্স ফি দেখিয়ে অনেক টাকা ঋণ চাইছে। কলেজের কোর্স ফি-ই তো ওত টাকা নয়। সেখানে আবেদন অনুমোদন করব কী ভাবে!’’ নিয়ম হল, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আবেদন আসবে জেলায়। জেলা থেকে আবেদন যাবে ব্যাঙ্কে। খতিয়ে দেখে ব্যাঙ্ক সে আবেদন মঞ্জুর করবে। গোয়ালতোড়ের পিংবনি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রলয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্রও ৩ লক্ষ টাকা ঋণ চেয়ে আবেদন করেছিল।’’

জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) কুহুক ভূষণ বলেন, ‘‘গত মাসেই স্কুল, কলেজে সচেতনতা শিবির হয়েছে। এই প্রকল্পের বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করা হয়েছে।’’ কোন ক্ষেত্রে আবেদন করা যাবে, কী নথি প্রয়োজন, সব জানানো হয়েছে। তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই কার্ডের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষাঋণ পাওয়া যায়। এ জন্য কোনও কিছু বন্ধক রাখতে হয় না। গ্যারান্টরের দায়িত্ব পালন করবে সরকারই। রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক, তাদের অনুমোদিত কেন্দ্রীয় ও জেলা সমবায় ব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক থেকেও ঋণ পাওয়া যাবে। দশম শ্রেণি থেকে শুরু করে স্নাতক এমনকি, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশিক্ষণের জন্যও পড়ুয়ারা ঋণ পেতে পারেন। চাকরি পাওয়ার পর এক বছর সময় মিলবে ঋণ শোধ শুরু করার জন্য। ১৫ বছরের মধ্যে শোধ করতে হবে ঋণ।

এই প্রকল্পে জেলায় ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার আবেদন এসেছে। প্রায় ৫৬০ জনকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলছেন, ‘‘ভুয়ো আবেদন বেশি এলে সমস্যা বেশি যোগ্যদেরই। যারা নিম্ন আয়ের পরিবারের। উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁরাই হয়তো সময় মতো ঋণ পাবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Course Fee school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy