সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে রাজ্যের জমি হস্তান্তরের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
প্রাক্তন ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে যে জমি দিয়েছিল রাজ্য সরকার, তা নিয়ম মেনে দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্যকে আদালত প্রশ্ন করেছে, ওই জমির বাজারমূল্য কত? সেটি সৌরভকে দেওয়ার সময় কি নিয়ম মেনে দরপত্র (টেন্ডার) আহ্বান করা হয়েছিল? জমিটি হস্তান্তরের সময় সরকার দরপত্র জমা নিয়েছিল কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোড সংলগ্ন একটি বিস্তৃত জমি সৌরভকে শিল্পোদ্যোগের জন্য দেওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। অভিযোগ, সেই জমি ১ টাকার বিনিময়ে ৯৯৯ বছরের জন্য সৌরভকে লিজ় দিয়েছে রাজ্য। এই দাবিতেই কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। শুক্রবার জমি সংক্রান্ত ওই মামলারই শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। তাঁরা ওই জমি হস্তান্তরের পদ্ধতি জানতে চাওয়ার পাশাপাশি জমিটির ব্যবহারে স্থগিতাদেশও দিয়েছেন।
মামলাকারী আদালতকে জানিয়েছিলেন, চন্দ্রকোনা রোডে ফিল্ম সিটি তৈরির জন্য রাজ্যের কাছ থেকে প্রথমে জমি কিনেছিল ‘প্রয়াগ’ গোষ্ঠী। পরে চিটফান্ডকাণ্ডে ওই সংস্থার নাম জড়িয়ে পড়ায় তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে হাই কোর্টের নির্দেশে গঠিত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শৈলেন্দ্র তালুকদারের কমিটি। ওই এলাকাতেই শিল্পের জন্য সৌরভকে ১ টাকার বিনিময়ে জমি লিজ় দেওয়া হয়েছে। মামলাকারীর বক্তব্য, সৌরভকে যে জমি দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে প্রয়াগ গোষ্ঠীর জমির কিছু অংশ রয়েছে। তালুকদার কমিটির অনুমতি ছাড়াই সেই জমি সৌরভকে দিয়ে দিয়েছে রাজ্য। লগ্নিকারীদের আইনজীবী অরিন্দম দাসের কথায়, ‘‘সৌরভকে ওই জমি দেওয়ার আগে কমিটির অনুমতি চেয়েছিল রাজ্য। কিন্তু পরে কমিটির অনুমতি ছাড়াই ওই জমি হস্তান্তর করা হয়।’’
শুক্রবার ওই বক্তব্য শোনার পর হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, জমির মালিকানা কার, সেই সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। তার আগে পর্যন্ত আপাতত ওই জমির কোনও রকম ব্যবহার করা যাবে না। জমি বিক্রিও করা যাবে না। বিচারপতি বাগচি বলেন, ‘‘নাগরিকদের আস্থা অর্জনের জন্য চন্দ্রকোনা রোডের ওই জমি হস্তান্তরের বিষয়টি খতিয়ে দেখবে আদালত। আমাদের দায়িত্ব, সরকারি সম্পত্তি হস্তান্তর পদ্ধতি মেনে হচ্ছে কি না, তা দেখা।’’ সেই মর্মেই রাজ্য সরকারের কাছে জমি হস্তান্তর সংক্রান্ত কয়েকটি প্রশ্ন জানতে চেয়েছে আদালত। বিচারপতিদ্বয় বলেন, ‘‘রাজ্যকে জানাতে হবে, ওই জমি দেওয়ার সময় নিলাম হয়েছিল কি না। যদি না হয়, তবে কেন হয়নি, তা জানাতে হবে রাজ্যকে। আদালতকে এ-ও জানাতে হবে যে, দরপত্র ছাড়া ওই জমি বিক্রি বা হস্তান্তর হয়েছিল কি না। জমিটির বাজারমূল্য কত, তা-ও তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। পাঁচ সপ্তাহ পর মামলাটির পরবর্তী শুনানি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy